বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইেলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে একতরফাভাবে ইসলামের বিরোধিতা করার কারণ কী?

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:১৩:৫৮ সন্ধ্যা



প্রশ্ন: বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম অর্থাৎ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচারের দ্বারা ঘৃণা বিস্তার করা হয়। যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন না, তাদেরকেও দেখি কেবল ইসলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার, কিন্তু অন্য ধর্মগুলির বিরুদ্ধে তারা নীরব। প্রশ্ন হোল, এরকম একতরফাভাবে ইসলামের বিরোধিতা করার কারণ কি?

প্রশ্নটির পরিপূর্ণ উত্তর পেতে চাইলে আমাদের আজ থেকে ৪৭৫ বছর আগের পৃথিবীতে ফিরে যেতে হবে। সেই সময় আদমের (আHappy সৃষ্টি থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সবচাইতে গুরুতর ও সংকটজনক ঘটনাটি ঘটে। আর তা হোচ্ছে মানবজাতির শত্রু, মানবতার শত্রু ইবলিসের চুড়ান্ত রূপ দাজ্জালের আবির্ভাব। পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম মানবজাতি ধর্মকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় জীবন থেকে প্রত্যাখ্যান কোরে তা নির্বাসিত করে ব্যক্তি জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডির ভিতরে। ফলে জাতীয় জীবন পরিচালনার জন্য তৈরি হয় আত্মাহীন জড়বাদী ‘সভ্যতা’ যাকে আল্লাহর রসুল দাজ্জাল বলে অভিহিত করেছেন। ইহুদী খ্রিষ্টান জড়বাদী সভ্যতাই রাসুল বর্ণিত সেই দানব দাজ্জাল। সে তার শৈশব কৈশর পার কোরে বর্তমানে যৌবনে উপনিত। সারা পৃথিবীর এক টুকরা মাটি বা পানি সেই যা দাজ্জালের শক্তি ও প্রভাব বলয়ের বাইরে। মানব জাতির কাছে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা দাবি করছে যে, তারা যেন স্রষ্টাকে প্রত্যাখ্যান কোরে তাকে (দাজ্জাল) রব বোলে মেনে নেয়। অর্থাৎ স্রষ্টার সার্বভৌমত্বকে পরিত্যাগ কোরে মানুষের সার্বভৌমত্বকে মেনে নেয়। দাজ্জালের এ দাবির কাছে মানবজাতি আজ আত্মসমর্পন করেছে। তাই সমস্ত পৃথিবীতে আজ দাজ্জালের একক আধিপত্য। তার কোন প্রতিদ্বন্দী নেই। তবে বর্তমানে সারা পৃথিবী জুড়ে যেভাবে দাজ্জাল বা ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতার একক আধিপত্য জারি রয়েছে তার জন্য এর জন্মের পর থেকে অনেক পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। জন্মের পর থেকে যেমন কোন প্রাণী ক্রমে ক্রমে বড় হয়, তার জীবনে একটার পর একটা ধাপ বা পর্ব আসে, তেমনি দাজ্জালের জীবনেও ধাপ, পর্ব এসেছে। প্রথমে গণতন্ত্র ও তার অপূর্নতা ও ত্রুটির করণে উদয় হয়েছে একনায়কতন্ত্র। ধনন্ত্রের কুফল ও অবিচারের ফলে এসেছে সমাজতন্ত্র ও তার উগ্রতম রূপ সাম্যবাদ কমিউনিজম। সময়ে সময়ে ঐ বিভিন্নপর্যায়ের ধাপের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে, যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র জোট বেধে একনায়কতন্ত্রকে ধ্বংস করল। কিন্তু তারপরই গণতান্ত্রিক ধনতন্ত্রের সাথে সমাজতান্ত্রিক কমিউনিজমের স্নায়্যুযুদ্ধ বা ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেলো। এই ঠাণ্ডা লড়াই কোরিয়া, ভিয়েতানাম ও আরও ছোট খাটো, দু’চার জায়গায় প্রকৃত যু্দ্ধের রূপ নিলেও ব্যাপক আকারের হয় নি উভয়েরই হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কারণে। অবশেষে ১৯৪৭-১৯৯১ সাল পর্যন্ত চলল এই ঠাণ্ডা লড়াই। অতঃপর সমাজতান্ত্রিক কমিউনিজমকে পরাজিত কোরে ধনতান্ত্রিক গণতন্ত্র জয়লাভ করলো। এই প্রথম দাজ্জাল তথা ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতা সারা পৃথিবীতে একক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হল। যেহেতু দাজ্জালের নিজের মধ্যে আর কোন দ্বন্দ্ব বিভেদ রইল না অতঃপর সে নজর দিল সমস্ত পৃথিবীর ধর্মীয় জাতি গোষ্ঠীর দিকে।

ইহুদি খ্রিস্টান সভ্যতা তথা দাজ্জাল ইহুদি ধর্মের দিকে দেখল যে, তারা স্রষ্টার দেওয়া শ্বাশ্বত বিধানের বিকৃতরূপ ধরে আছে যা ব্যক্তি জীবন থেকেও বিলপ্তপ্রায়, খ্রিস্টানদের দিকে দেখল যে তাদের ধর্ম রবিবারের দিন সাবাথ ডে আর ২৫ ডিসেম্বরের বড় দিন পালনের মাঝেই সীমবদ্ধ আছে। বৌদ্ধরা মাথা কামিয়ে গেরুয়া বসন পরিধান করে জপমালা হাতে নিয়ে, হাঁটু গেড়ে বোসে “বুদ্ধনং স্বরনং গচ্ছামী” জপতে জপতে তদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। জাতীয় জীবন ব্যবস্থায় সাথে তাদের আকঁড়ে ধোরে থাকা ধর্মের লেশমাত্র সম্পর্ক নেই। তারপর যখন ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা তথা দাজ্জাল হিন্দুদের দিকে তাকালো সে দেখলো হিন্দুরা মাথায় তিলক দিয়ে গায়ে গোলাপ চন্দন মাখিয়ে মন্দীরে যাওয়া এবং কিছু নাম স্বর্বস্ব আচার অনুষ্ঠান ছাড়া আর কিছুতেই যায় না। সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে তাদের কোন কথা নেই।

এরপর দাজ্জাল দৃষ্টি দিল মুসলিম নামধারী জাতিটির দিকে। সে দেখল একমত্র ইসলামই স্রষ্টার প্রেরিত পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা নিয়ে বর্তমান আছে। যদিও প্রায় অর্ধ পৃথিবী জুড়ে জাতিটি একটি মৃতদেহের মত পড়ে আছে তবে এখনও মরে নি। মাঝে মাঝেই বিভিন্ন জায়গা থেকে জাগরণী মন্ত্রের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ক্রমেই এই আওয়াজ বৃদ্ধি হোচ্ছে। দাজ্জাল দেখল যে, যে কোন সময় মতবাদ হিসেবে হোক বা জাতি গোষ্ঠী হিসেবে হোক, রাষ্ট্রীয়ভাবে সার্বভৌমত্ব নিয়ে জাতিটি মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে। সে ভালোভাবেই জানে যে, এই ইসলামই এক সময় অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছিল আর বুদ্ধিমান মাত্রই বুঝতে পারে যে, নিবু নিবু ছাইয়ের আগুন দখিনা বাতাসের স্পর্শ পেলে তা মুহূর্তেই দাউ দাউ কোরে জ্বলে উঠবে। তখন এই আগুন আর ঠেকানো যাবে না। দাজ্জাল আরও চিন্তা করল যে, এই মুসলিম জাতি যদি কখনো ইসলামের সঠিক আকীদা বুঝতে পারে নিজেদের সোনালী অতীত জানতে পারে এবং কী ভাবে সেই পথে যাওয়া যায় এই পথ নির্দেশ পেয়ে যায় তাহোলেই সর্বনাশ!

এই ভয় থেকে দাজ্জাল তার অদূর ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দী ইসলামের বিরোধিতায় লিপ্ত হল। যেহেতু সমস্ত পৃথিবীতে সে বর্তমানে একক পরাশক্তি কাজেই সমস্ত পৃথিবীকে শাসন করছে এই সভ্যতা। সমস্ত পৃথিবীর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া তার হাতে অর্থাৎ তার অনুগত। এই প্রচারমাধ্যমের দ্বারা দাজ্জাল পৃথিবীর মানুষকে যা ভাবাতে চায় তাই ভাবায় যা বিশ্বাস করাতে চায়, তাই করায়। এভাবেই প্রচার মাধৗমের দ্বারা অপপ্রচার চালিয়ে সে ইসলামকে সন্ত্রাসী, জঙ্গী, প্রগতিবিরোধী ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে ইসলামের ব্যাপারে সবাইকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলছে। মুসলিম হিসাবে মাথা তুলতে গেলেই তাদেরকে জেল দিচ্ছে, ফাঁসি দিচ্ছে, বেয়নেট দিয়ে, গুলি কোরে হত্যা করছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে গেলে দাজ্জাল সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এতে যদি সে রাষ্ট্র তার অনুগত না হয় তাহোলে বিভিন্ন অজুহাতে ঐ রাষ্ট্র আক্রমণ করে ধ্বংস করে সেখানে তার ইচ্ছামত অনুগত সরকারকে বসিয়ে দেয়।

এভাবেই দাজ্জাল তথা ইহুদী খ্রিস্টান বস্তুবাদী সভ্যতা প্রচার মাধ্যম অর্থবল এবং এবং সবশেষে সামরিক শক্তি দিয়ে সর্বতোভাবে ইসলামের বিরোধিতায় মগ্ন রয়েছে কিন্তু অন্য কোন ধর্ম তার সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে হুমকি না হওয়ায় সে অন্য কোন ধর্মের বিরোধিতা করছে না।

বিষয়: বিবিধ

২১০৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

157745
৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ সন্ধ্যা ০৭:৪০
মাজহার১৩ লিখেছেন : প্রিয় আসাদ ভাই,
আপনার লেখা পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে।
আপনার পোষ্ট অনুসারে আমি কি বলতে পারি জামাত শিবিরই প্রথম বাংলাদেশে দাজ্জালের বিরোধী মতবাদ শুরু করে? দয়া করে জানাবেন।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৩ সন্ধ্যা ০৭:৫৯
112515
জিনিয়াস লিখেছেন : একটু অযাচিতভাবেই আমি উত্তরটা দেই। জামায়াত শুরু করছে হয়তো ( হয়তো বলবো এ জন্য যে তারা দাজ্জালেরই আরেকটি শেখানো পদ্ধতি গণতন্ত্র অর্থাত নির্বাচনের পথ ধরেছে) কিন্তু দাজ্জাল কি জিনিস তা চিনতে পারেনি কিঙবা দাজ্জাল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই কাজটা আল-কায়েদাও করছে। কিন্তু আল-কায়েদাকে জামায়াত সাপোর্ট করে না। কিন্তু দাজ্জালের বিরোধিতায় সকলকে একপক্ষ হওয়ার কথা ছিল।
158080
০১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৩
মাজহার১৩ লিখেছেন : তাবলীগ কি সঠিক কাজটা করছে? আমি আসলে বিভ্রান্ত, আমি একটা সহীহ রাস্তা খুজছি।
দয়া করে সহায়তা করবেন।
০২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০০
112829
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : না, তবলীগ ঐ কাজের ধারে কাছেও নেই। তারা ব্যস্ত সেই সব কাজে যে কাজ করতে দাজ্জাল কোন বাধা দেয় না বরং উল্টো অনু্প্রাণিত করে। কারণ তাদের কাছে ইসলাম মানেই হলো নামাজ, রোজা, দাড়ি, টুপি, জিকির, আসকার, মেসওয়াক ইত্যাদি কাজ যা দাজ্জালের সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে কোন বাধা নয়। এদের কাছে ধর্ম হলো ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাদের পালিত ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের কোন সম্পর্ক নেই। দাজ্জালও এটাই চায়। সে চায় অন্যান্য ধর্মের মানুষের মত এই ইসলাম ধর্মের অনুসারীরাও নিজেদেরকে রাষ্ট্রহীন করে ফেলুক এবং তবলীগী হুজুরদের মত গো-বেচারা জীবে পরিণত হোক।

কাজেই আমি জেনে শুনে কোনভাবেই আপনাকে সেই পথে যাবার কোন পরামর্শ দিতে পারছি না। সেই সাথে এটাও স্বীকার করছি যে, আপনি যে পথ খুজছেন এটার নির্দিষ্ট করে বলা অর্থহীন। কারণ যেটাকে আমি ঠিক পথ বলবো সেটাকে আরেকজন হয়তবা ভুল পথ বলবে আবার ঐ লোকের অনুসৃত পথ আরেকজন ভুল হিসেবে উল্লেখ করবে। তাই আমি নিজে থেকে আপনাকে প্রভাবিত করতে চাচ্ছি না। আমি শুধু একটি পথের সন্ধান দিতে পারবো, সেটা সঠিক কি ভুল তা নির্নয়ের দায়িত্ব আপনার, সে যুক্তি-বুদ্ধি আল্লাহ আপনাকে দিয়েছেন। যদি বলেন, সঠিক পথ চিনতে পারছি না তাহলে আমি বলব- আপনি খালেস মনে আল্লাহর সাহায্য চান, তিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, কাজেই সঠিক পথ দর্শনের দায়িত্বও তাঁর। ইনশাল্লাহ আল্লাহ আপনাকে সত্য পথের দিশা দেবেন। কিন্তু যদি অহংকারবশত বা অন্য কোন কারণে আল্লাহর দেখানো সত্য পথকে অস্বীকার করেন তবে আপনার প্রতি আর আল্লাহর কোন দাযিত্ব থাকলো না। কাজেই আমি বলবো- দেখতে থাকুন, অনুসন্ধান করুন,বিশুদ্ধ চিত্রে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান, ইনশাআল্লাহ, আপনি সত্য পথের পথিক হবেন।

আমার প্রস্তাবিত পথের লিংকটা এখানে দিয়ে দিলাম Click this link
০২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪৪
113149
মাজহার১৩ লিখেছেন : আপনার দেয়া লিঙ্কে তো যাওয়া যাচ্ছে না।
158439
০২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৫১
মাজহার১৩ লিখেছেন : হিজবুত তাওহীদ ও তাহরীর কি একই?
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:২২
113211
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : এবার চেষ্টা করে দেখেন http://ataglance.hezbuttawheed.com/
158493
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৩২
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : হেযবুত তওহীদ এবং হিযবুত তাহরীর দুইটি সম্পূর্ণ আলাদা। হিযবুত তাহরীর হল একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশেই তারা নিষিদ্ধ। অপরদিকে হেযবুত তওহীদ বাংলাদেশের একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন যার এমাম হোলেন টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। আগের কমেন্টে দেয়া লিংকে গেলে আপনি হেযবুত তওহীদের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গভাবে জানতে পারবেন। আল্লাহ আপনাকে সঠিক পথের পথিক বানিয়ে দিক। আমিন।
158609
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:১৩
মাজহার১৩ লিখেছেন : আসাদ ভাই কিছু মনে করবেন না, জনাব পন্নীকে দেখে একজন ইসলামী নেতা হিসেবে যে ভক্তি আসার তা উপলদ্ধি করতে পারছিনা। উনিতো মওদুদীবাদানুসারে দাঁড়ি রেখেছেন।দয়া করে স্পষ্ট করবেন।
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৫১
113311
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : মাননীয় এমামুয্যামানের যে লেখাগুলো আছে আপনি সেগুলো পড়েন, চেহারা দেখে দেখে ঘুরলে কোনদিন আপনি সত্য পথের সন্ধান পাবেন না। দাড়ি, টুপি, পাগড়ী এগুলো তো পরের বিষয় আগে দেখুন তওহীদ। একজন অমুসলিম যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে চান তখন তার প্রথম কাজ কি হয়? তার প্রথম কাজ হয় তওহীদ গ্রহণ করা, মেনে নেওয়া অর্থাৎ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করা। এই লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহই হলো জান্নাতের চাবিকাঠি। কাজেই আগে তওহীদ বুঝুন। আমি বলছি না যে- আপনি অমুসলিম বা কাফের, আমি যাস্ট গুরুত্বের অগ্রাধিকারটা বোঝাতে চাচ্ছি। আপনি আগে এমামুয্যামানের লেখাগুলো পড়ুন। আগেই নেগেটিভ মাইণ্ড নিলে হবে না। পড়ার পরে যদি মনে হয় তিনি ভুল বলেছেন তাহলে দয়া করে আমাকে জানাবেন যে- কোন কোন বিষয় আপনার কাছে ভুল মনে হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনার ভুল ভাঙ্গাতে।
158634
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৬
মাজহার১৩ লিখেছেন : সিস্টেমটা পাল্টাই লেখাটা ভালো লেগেছে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে আহবান জানানোর মানে কি?
ব্যাক্তিজীবনে ইসলামের প্রয়োগ না থাকলে রাষ্ট্রে ইসলাম আসলে জোরপূর্বক কিছু ধর্মীয় চর্চা করা হবে, এতে কি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরী হবে? একটা লোক ভাল লিখে অথবা ভাল কথা বলে, এটা কি কাউকে বিচারের মানদন্ড হতে পারে? জানালে খুশি হব।
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৫
113381
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানানোর অর্থ বুঝলাম না। এটা একটু পরিষ্কার করে বললে ইনশাআল্লাহ উত্তর দিতে সক্ষম হব।
আপনার পরবর্তী প্রশ্নের পরিপূর্ণ উত্তর পেতে হলে আরো একটু পড়াশোনা করতে হবে, তবে আমি এখানে সংক্ষেপে মূল বিষয়টি বলছি।
রসুলাল্লাহকে পৃথিবীতে পাঠানোর উদ্দেশ্য হোল- পৃথিবীতে প্রচলিত অন্য সমস্ত দীন (জীবন ব্যবস্থা)কে অচল, নিস্কৃয় করে সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা (সুরা ফাতাহ- ২৮, সফ ০৯)
এটাই ছিল রসুলাল্লাহর পৃথিবীতে আগমনের উদ্দেশ্য। প্রশ্ন হতে পারে- এতে কী হবে? এতে যা হবে তাহলো- সমস্ত পৃথিবী থেকে অন্যায়-অবিচার নির্মূল হয়ে যাবে এবং পরিপূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। যেমন হয়েছিল আজ থেকে ১৩০০ বছর আগে অর্ধপৃথিবীতে। এখানে যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলা হচ্ছে সেটা বর্তমানের এই প্রচলিত ইসলাম নয়। এটা হলো সেই ইসলাম যে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত থাকলে- সমাজে এমন শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয় যে মানুষ রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমোনের প্রয়োজন বোধ করে না। এটা সেই ইসলাম যেটা প্রতিষ্ঠিত থাকলে- অর্ধপৃথিবীর খলিফা আটার বস্তা নিজের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে তার রাষ্ট্রের অভুক্ত মানুষকে দিয়ে আসে এবং নিজের জন্য ক্ষমা চেয়ে আসে। এটা নামাজ, রোজা, নফল ইবাদাত, দাড়ি, টুপি, বিবি তালাক, তসবীহ, টাখনু সর্বস্ব ইসলাম নয়, এটা হলো সেই ইসলাম যে ইসলাম কাউকে তাদের ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগ করতে বলে না, বরং অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয়। এটা সেই ইসলাম যে ইসলামের খলিফা রাষ্ট্রের একটা কুকুরও না খেয়ে মারা গেলে তার জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার ভয় করতেন।

এমন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে এমন কে আছে যে তার অধিকার পুরোপুরি ভোগ করতে পারবে না? এই ইসলামেরই ডাক দিচ্ছেন মাননীয় এমামুয্যামান। যারা নিজেদেরকে রসুলাল্লাহর উম্মাহ হিসেবে দাবি করে তাদের প্রথম কাজ হলো- ইসলামকে সমস্ত পৃথিবীব্যাপী প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম (জেহাদ) করা। প্রকৃত ইসলাম যখন যেখানেই প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানের মানুষই এক একজন সোনার মানুষে পরিণত হবে কারণ প্রকৃত ইসলাম হোল সোনার মানুষ তৈরির ছাঁচ। এই ছাঁচে পড়েই ঐক্যহীন, শত শত গোত্রে বিভক্ত, নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত (আজকের মত), জাহেল জাতিই সোনার মানুষে পরিণত হয়ে গিয়েছিল, কেমন সোনার মানুষ? আশা করি বলার দরকার পড়ে না। যারা আল্লাহর একটি হুকুমকেও মানত না, যারা কাবাঘরের মধ্যেও মুর্তির প্রচলন ঘটিয়েছিল সেই তারাই অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আত্মিক দিক দিয়ে কোন স্তরে পৌছেছিল তা ইতিহাস।
158688
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
মাজহার১৩ লিখেছেন : সেনাবাহিনীর বিষয় হলো- রাস্তায় কিছু লোক লিফটলেট বিতরন করে, সেখানে সেনাবাহিনীকে আমন্ত্রন জানানোর বিষয়টি দেখেছি।
আপনি যে এসলামের কথা বলেছেন সেটা আমি চাই। কিন্তু ইমামুজ্জামান কিভাবে মনোনীত হলো অথবা উনাকে কেন ইমামুজ্জামান বলেন এটা আমার প্রশ্ন। ইমামুজ্জামান কি বাংলাদেশ থেকেই হবে এমন কোন ঐতিহাসিক ক্লু আছে কি? গত কয়েকদিন আগে টিকাটুলীতে এই ধরনের স্বঘোষিত ইমাম খুন হয়েছেন। বিভ্রান্তি দূর করবেন কি?
০৩ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫২
113413
মোহাম্মদ আসাদ আলী লিখেছেন : আপনি সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্কিত যেসকল লিফলেট দেখেছেন সেগুলো হিযবুত তাহরীরের যে রাজনৈতিক দলটি বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর আরো অনেক দেশে নিষিদ্ধ। আমাদেরটা হলো হেযবুত তওহীদ। নামের আংশিক কিছু মিল থাকায় মানুষ প্রায়ই বিভ্রান্ত হয়ে থাকে। যাই হোক, আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। আমাদের সত্য ইসলামের ডাক শুধু কোন নির্দিষ্ট সংঘ বা দলকে কেন্দ্র করে নয়, আমাদের আহ্বান পুরো মানবজাতির জন্য। ইমামুয্যামান ব্যাপারটা একদম পরিষ্কার। আল্লাহ কোর'আনেও বলেছেন- সেদিন আমি প্রত্যেককে তাদের ইমাম সহকারে ডাকবো। মুসলিম জাহানের সর্বদায় একজন ইমাম থাকা বাধ্যতামূলক। আপনি হয়তবা জেনে থাকবেন- রসুলাল্লাহর ইন্তিকালের পর তাঁর দেহমোবারক তিন দিন দাফন করা হয়েছিল না কারণ, তাঁর পরবর্তী জাতির ইমাম এই তিনদিনেও নির্ধারণ করা হয়েছিল না। এখানে লক্ষ্য করুন- রসুলাল্লাহর দাফন সম্পন্ন করার চেয়েও উম্মতে মোহাম্মদী কোন কাজটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন? সেটা হোল তাদের নতুন ইমাম কে হবেন তা নির্ধারণ। এই ইমাম বা খলিফা নির্ধারণের ধারাবাহিকতা ইতিহাসে স্পষ্ট। কিন্তু আজকের মুসলিমদের অবস্থা কী? তাদের কাছে ইমাম মানে হলো মসজিদের কয়েকশ' টাকার বেতনভোগী রাজনৈতিক নেতাদের কর্মচারী। এটা কি ইসলাম? হাশরের ময়দানে এই দুইশ' কোটি জাতির ইমাম হিসেবে কে দাড়াবে? কে জবাবদিহি করবেন? কেউ নেই। গত শতাব্দির পর শতাব্দি গেছে এই জাতি ইমামহীন হয়েই রয়েছে। আজ ১৩০০ বছর পর আল্লাহ আবারো দয়া করে আমাদের জন্য একজন ইমাম নিযুক্ত করেছেন। আপনি হয়ত বলবেন- তিনি আল্লাহর মনোনিত হলেন কীভাবে? উত্তর হলো- মুসলিম জাহানের ইমাম মানেই হলো তিনি আল্লাহর মনোনিত ইমাম। তিনি রসুলাল্লাহ ও আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি, কাজেই তাঁকে অবশ্যই আল্লাহর মনোনিত হতে হবে।
এটা গেল যুক্তির কথা। এবারে আসি প্রমাণের ব্যাপারে। সেটা হলো মো'জেজা। এই মো'জেজা ঘটিয়ে আল্লাহ মাননীয় এমামুয্যামানকে সত্যায়ন করেছেন এবং সেই সাথে আল্লাহ এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে- হেযবুত তওহীদ হক্ব, সত্য, হেযবুত তওহীদের ইমাম আল্লাহর মনোনিত এবং এই হেযবুত তওহীদ দিয়েই আল্লাহ আবারো সারা পৃথিবীতে তাঁর সত্যদীন প্রতিষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। এই বিষয়ে আপনাকে বিস্তারিত জানতে হবে নইলে বুঝতে পারবেন না। ঐ ওয়েব সাইটেই আল্লাহর মো'জেজা, হেযবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা নামক একটি বই পাবেন। সেটা পড়েন, ইনশাআল্লাহ এই বিষয়ে কোন প্রশ্নই থাকবে না। তবে একটি অনুরোধ করবো ধর্মব্যবসায়ী মোল্লাদের কথায় প্ররোচিত হবেন না। তারা ইসলামের জন্য কাজ করে না বরং তাদের নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ইসলামকে ব্যবহার করে। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File