রসুলাল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণী- এসলাম শুধু নাম থাকবে (ধর্মজীবী মোল্লা-পুরোহীতদের সঠিক পথে ফেরার আহ্বান)
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ১৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০২:২৫:২৫ দুপুর
দুনিয়াময় পরাজয়ের ফলে এই জনসংখ্যাটি তাদের জাতীয় জীবনের প্রভু হিসাবে পশ্চিমা বিশ্বকে এবং দীন হিসাবে প্রভুদের প্রদত্ত গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, ফ্যাসিবাদ ইত্যাদি জীবনব্যবস্থাগুলি গ্রহণ কোরে নিয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে কিছু নামাজ রোজা করে, দাড়ি টুপি রেখে, আরবীয় পোশাক ধারণ কোরে মোসলেম হিসাবে নিজেদের কর্তব্য সম্পন্ন কোরছে, ধর্মীয় এই উপাসনা ও আনুষ্ঠানিকতা পালন করাকেই মনে কোরছে এসলাম। এই এসলামটাও তারা শিখছে যে মাদ্রাসাগুলি থেকে সেই মাদ্রাসাগুলি প্রতিষ্ঠা কোরেছে ঔপনিবেশিক খ্রিস্টানরা। যে এসলামটা শিখেছে সেটাও ঐ খ্রিস্টান প্রভুদের তৈরি করা, আল্লাহ রসুলের এসলাম নয়। আজ থেকে কয়েকশ’ বছর আগে খ্রিস্টান প্রাচ্যবিদ, পণ্ডিতরা বহু গবেষণা কোরে নুতন “এসলাম” দাঁড় করালেন, যে “এসলামের” বাহ্যিক দৃশ্য এসলামের মতই কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যেটার আকীদা এবং চলার পথ অর্থাৎ সেরাত, আল্লাহর রসুলের এসলামের, সেরাতুল মোস্তাকীমের ঠিক বিপরীত। ঐ বিপরীতমুখী এসলাম শিক্ষা দিতে কী কী বিষয় শিক্ষা দিতে হবে, কী কী বিষয়বস্তু বাদ দিতে হবে, কেমন কোরে শিক্ষা দিতে হবে নির্ধারণ ও স্থির কোরলেন ঐ খ্রিস্টান পণ্ডিতরা। ঐ সিলেবাসে আল্লাহর সর্বব্যাপী তওহীদকে সংকুচিত কোরে ব্যক্তি জীবনে সীমাবদ্ধ করা হোল, কারণ সার্বভৌমত্ব তো বৃটিশের, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব শিক্ষা দিলে তো তাদের রাজত্ব করাই বিপদজনক। তারপর আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অর্থাৎ তওহীদের ঠিক পরেই যে জেহাদের স্থান সেই জেহাদকে ঐ মাদ্রাসার পাঠ্যবস্তুতে অতি অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে পরিণত কোরে প্রায় বাদ দেওয়া হোল। সমষ্টিগত, জাতিগত বিষয়গুলিকে নিুস্তরে নামিয়ে দিয়ে অতি সাধারণ ব্যক্তিগত বিষয়গুলিকে অতি গুরুত্ব ও প্রাধান্য দেয়া হোল। বিয়ে-শাদী, বিবি তালাক, দাড়ি-টুপি, পাজামা, পাগড়ী, মেসওয়াক, কুলুখ, ওজু গোসল, হায়েয-নেফাস ইত্যাদি হাজার রকমের বিষয়গুলিকে এসলামের অতি জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোলে উপরে স্থান দেয়া হোল। ঐ সিলেবাসে আরও প্রাধান্য দেয়া হোল সেই সব বিষয়গুলিকে যেগুলি সম্বন্ধে দুর্ভাগ্যক্রমে বিভিন্ন মাযহাবে ও ফেরকায় মতভেদ ও বিতর্ক আগে থেকেই মওজুদ ছিল ও আছে। খ্রিস্টান পণ্ডিতেরা এটা কোরলেন এই জন্য যে তাদের শেখানো এসলামের আলেমরা যেন ঐগুলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্কাতর্কি, বাহাস ও প্রয়োজনে মারামারি কোরতে থাকে, বৃটিশদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোতে না পারে এবং তাদের শাসন নিরাপদ হয়। ইংরাজ অধিকৃত এই উপমহাদেশের বড়লাট অর্থাৎ মিঃ ওয়ারেন হেসটিংস ১৭৮০ সনে কোলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরলেন। সেই থেকে ১৯২৬ সন পর্যন্ত এই ১৪৬ বছর একাদিক্রমে ২৬ জন খ্রিস্টান পণ্ডিত আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষপদে থেকে এই জাতিকে “এসলাম” শিখিয়েছেন।
বৃটিশরা এই উপমহাদেশসহ তাদের অধিকৃত অন্যান্য মোসলেম দেশগুলিতেও আলীয়া মাদ্রাসার অনুকরণে শত শত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ও তাদের তৈরি “এসলাম” শিক্ষা দেয়। ইংরাজ চোলে গেছে কিন্তু তাদের তৈরি করা “এসলাম” আজও আমাদের মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষা দেওয়া হোচ্ছে, ঐ মাদ্রাসাগুলি থেকেই ঐ এসলাম শিখে আলেমরা বের হোয়ে আসছেন ও আমাদের ঐ “এসলাম”ই শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা আজ এসলাম বোলতে সেই এসলামই বুঝি যে “এসলাম” খ্রিস্টান পণ্ডিতরা তৈরি কোরে ১৪৬ বছর ধরে আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। ফলে আজ আমাদের রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক জীবন পরিচালিত হোচ্ছে পাশ্চাত্যের খ্রিস্টানদের তৈরি করা নানা রকম তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে আর ব্যক্তিগত ধর্মীয় জীবন পরিচালিত হোচ্ছে খ্রিস্টান পণ্ডিতদের তৈরি করা বিকৃত ও বিপরীতমুখী “এসলাম” দিয়ে, আল্লাহ রসুলের এসলাম দিয়ে নয়। ফলে এসলামের অস্তিত্বের যে উদ্দেশ্য অর্থাৎ শান্তিময় পৃথিবী সেটা নেই, আর শান্তি নেই মানেই এসলাম নেই। ভাবতে অবাক লাগে এরপরও আমরা নিজেদের মো’মেন, মোসলেম ও উম্মতে মোহাম্মদী বোলে বিশ্বাস কোরি এবং পরকালে আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাতের আশা কোরি। এই অবস্থাকেই আল্লাহর রসুল এক কথায় প্রকাশ কোরেছেন এই বোলে যে, এসলাম শুধু নামে থাকবে।
বিষয়: বিবিধ
১৬৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন