স্রষ্টাহীন বস্তুবাদী এক সিস্টেমের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত আমরা

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ১৪ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৬:৩৪ সকাল



বর্তমানে আমরা এমন একটা সিস্টেমের মধ্যে বসবাস কোরছি, যেখানে আমাদের জীবন-সম্পদের কোন নিরাপত্তা নেই। যেদিকেই তাকাই শুধু অন্যায় আর অত্যাচারে পরিপূর্ণ। অন্যায় ছাড়া ন্যায় চোখে পড়ে না। মানুষ মানুষের অস্তিত্বের ক্ষেত্রে কতোটা হুমকি হোতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হোল বর্তমান সমাজ। অন্যকোন দেশের কথা নাইবা বোললাম, যে দেশের সাথে আমাদের নাড়ির সম্পর্ক, আত্মার বন্ধন, সেই বাংলাদেশের কথাই ধরুন; আমাদের না আছে জীবনের নিরাপত্তা, না আছে সম্পদের। কোথায়, কখন, কিভাবে মরে পড়ে থাকবো তার ঠিক নেই। আমরা যেন একটা পশুর সমাজে বসবাস করছি। কিন্তু কেন? দেশে কি আইন, আদালত, পুলিশ কিছু নেই। হ্যাঁ আছে, কিন্তু আমি মনে করি তারা যে কী করণে আছে তা তারা নিজেরাই জানে না। দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টার মাঝে তাদের শাসকদের গোলামী কোরতেই বার ঘণ্টা কেটে যায়, বাকি যা সময় থাকে তা তাদের বৌ-বাচ্চাদের জন্য বরাদ্দকৃত। আমাদের জন্য কাজ করার সময় কোথায়? তাদেরই বা দোষ কোথায়, যারা তাদের পরিচালনা কোরছে তারাই বা আমাদের কথা কবে ভেবেছে? আমাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম কোরে, রক্ত পানি কোরে উপার্জন করা পয়সা থেকে আমরা তাদেরকে বেতন দেই, খাইয়ে দাইয়ে মোটাতাজা কোরে রাখি, কেন করি? এই আশায় করি যে, তারা আমাদেরকে নিরাপত্তা দেবে, সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা কোরবে। কিন্তু সেই তারাই যখন বলে যে, আমাদের বেডরুম পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়, আমাদের কেউ নৃশংসভাবে খুন হোলে বলে, আল্লাহর মাল আল্লাহই নিয়ে গেছে, তাদের প্রতি আমরা কিভাবে ভরসা কোরতে পারি? আমরা ইতিহাসের পাতা থেকে জানতে পারি, প্রকৃত এসলামের যুগে অর্থাৎ খুলাফায়ে রাশেদার সময় জাতির নেতারা সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাদের দুঃখ-কষ্ট, চাওয়া-পাওয়া বোঝার চেষ্টা কোরতেন। দেশের একটি কুকুরও না খেয়ে মরলে তার জন্য জবাবদিহিতার ভয় কোরতেন। আর আজ আমরা শত শত মানুষ না খেয়ে মরলেও শাসকদের আত্মা কাঁপে না, হৃদয় ব্যথিত হয় না। দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে গুলি খেয়ে মোরছে জনতা, তবুও নাকি দেশের আইন শৃঙ্খলার কোন অবনতি হয় নি। সাধারণ জনতা মরলে সেটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আর পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনীতিক মরলে বিরোধীদলের কাজ। সরকারী দল সবসময় ধোয়া তুলশী পাতা। পরে যখন ঐ সরকারী দলই আবার বিরোধী দলে পরিণত হয় তখন সব অপরাধের গুমর ফাঁস হোয়ে যায়। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমি জন্ম থেকেই দেখে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হোল আমরা কোন দিনই এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার কোন চেষ্টা করি নি। সর্বদাই সেটা সংশোধনের বৃথা চেষ্টা কোরে এসেছি। আমাদেরকে বুঝতে হবে আমাদের দেশের এই রাজনৈতিক সহিংসতা, হানাহানি, রক্তপাত ইত্যাদির জন্য কোন একক দল বা গোষ্ঠী দায়ী নয়। এর জন্য দায়ী বর্তমানে আমাদের ঘাড়ে জোর কোরে চাপিয়ে রাখা সিস্টেম বা জীবনব্যবস্থা। আমরা যখন ব্রিটিশ খ্রিস্টানদের গোলাম ছিলাম তখন থেকেই তারা আমাদের উপর আত্মাহীন, স্রষ্টাহীন বস্তুবাদী এক সিস্টেম চাপিয়ে দিয়েছে। ভৌগোলিকভাবে বর্তমানে আমরা স্বাধীন হোলেও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মানসিকভাবে এখনও তারাই আমাদের প্রভু। সেই থেকে আজও তাদের দেওয়া সিস্টেমে আমাদের সবকিছু চোলছে। এই সিস্টেমে বাস কোরে কেউ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভাল হোতে পারবে না। কোনভাবে আইন শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটানো যাবে না। ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট ইত্যাদি ঠেকানো যাবে না। বরং দিন দিন আরও ভয়াবহ ও জটিল আকার ধারণ কোরবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের সকল সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে আল্লাহর দেওয়া নিখুঁত সিস্টেমটি। তাই আমাদের উচিত বারবার ব্যক্তিকে পাল্টনোর চিন্তা না কোরে সিস্টেমটাকেই পাল্টানো। আল্লাহর দেওয়া সিস্টেমই পারে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার ও পাপাচারের সব পথ বন্ধ কোরতে। সেই সিস্টেম বাস্তবায়িত কোরলে আজকের ঘুণে ধরা সমাজের অসৎ মানুষগুলোই এক একজন সোনার মানুষে পরিণত হবে এনশাল্লাহ।

বিষয়: রাজনীতি

৮৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File