একতরফাভাবে ইসলামের বিরোধিতা করার কারণ কি?

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আসাদ আলী ০১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৪:৪৩:৪৬ বিকাল

প্রশ্ন: বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম অর্থাৎ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে এসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচারের দ্বারা ঘৃণা বিস্তার করা হয়। যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন না, তাদেরকেও দেখি কেবল এসলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার, কিন্তু অন্য ধর্মগুলির বিরুদ্ধে তারা নীরব। প্রশ্ন হোল, এরকম একতরফাভাবে ইসলামের বিরোধিতা করার কারণ কি?

প্রশ্নটির পরিপূর্ণ উত্তর পেতে চাইলে আমাদের আজ থেকে ৪৭৫ বছর আগের পৃথিবীতে ফিরে যেতে হবে। সেই সময় আদমের (আHappy সৃষ্টি থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সবচাইতে গুরুতর ও সংকটজনক ঘটনাটি ঘটে। আর তা হোচ্ছে মানবজাতির শত্র“, মানবতার শত্র“ এবলিসের চুড়ান্ত রূপ দাজ্জালের আবির্ভাব। পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম মানবজাতি ধর্মকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় জীবন থেকে প্রত্যাখ্যান কোরে তা নির্বাসিত করে ব্যক্তি জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডির ভিতরে। ফলে জাতীয় জীবন পরিচালনার জন্য তৈরি হয় আত্মাহীন জড়বাদী ‘সভ্যতা’ যাকে আল্লাহর রসুল দাজ্জাল বোলে অভিহিত কোরেছেন। ইহুদী খ্রিষ্টান জড়বাদী সভ্যতাই রাসল বর্ণিত সেই দানব দাজ্জাল। সে তার শৈশব কৈশর পার কোরে বর্তমানে যৌবনে উপনিত। সারা পৃথিবীর এক টুকরা মাটি বা পানি সেই যা দাজ্জালের শক্তি ও প্রভাব বলয়ের বাইরে। মানব জাতির কাছে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা দাবি কোরছে যে, তারা যেন স্রষ্টাকে প্রত্যাখ্যান কোরে তাকে (দাজ্জাল) রব বোলে মেনে নেয়। অর্থাৎ স্রষ্টার সার্বভৌমত্বকে পরিত্যাগ কোরে মানুষের সার্বভৌমত্বকে মেনে নেয়। দাজ্জালের এ দাবির কাছে মানবজাতি আজ আত্মসমর্পন কোরেছে। তাই সমস্ত পৃথিবীতে আজ দাজ্জালের একক আধিপত্য। তার কোন প্রতিদ্বন্দী নেই। তবে বর্তমানে সারা পৃথিবী জুড়ে যেভাবে দাজ্জাল বা ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতার একক আধিপত্য জারি রোয়েছে তার জন্য এর জন্মের পর থেকে অনেক পথ অতিক্রম কোরতে হোয়েছে। জন্মের পর থেকে যেমন কোন প্রাণী ক্রমে ক্রমে বড় হয়, তার জীবনে একটার পর একটা ধাপ বা পর্ব আসে, তেমনি দাজ্জালের জীবনেও ধাপ, পর্ব এসেছে। প্রথমে গণতন্ত্র ও তার অপূর্নতা ও ত্র“টির করণে উদয় হোয়েছে একনায়কতন্ত্র। ধনন্ত্রের কুফল ও অবিচারের ফলে এসেছে সমাজতন্ত্র ও তার উগ্রতম রূপ সাম্যবাদ কমিউনিজম। সময়ে সময়ে ঐ বিভিন্নপর্যায়ের ধাপের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হোয়েছে, যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র জোট বেধে একনায়কতন্ত্রকে ধ্বংস কোরল। কিন্তু তারপরই গণতান্ত্রিক ধনতন্ত্রের সাথে সমাজতান্ত্রিক কমিউনিজমের øায্যুযুদ্ধ বা ঠাণ্ডা লড়াই (ঈড়ষফ ধিৎ) শুরু হোয়ে গেলো। এই ঠাণ্ডা লড়াই কোরিয়া, ভিয়েতানাম ও আরও ছোট খাটো, দু’চার জায়গায় প্রকৃত যু্েদ্ধর রূপ নিলেও ব্যাপক আকারের হয় নি উভয়েরই হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কারণে। অবশেষে ১৯৪৭Ñ১৯৯১ সাল পর্যন্ত চোলল এই ঠাণ্ডা লড়াই। অতঃপর সমাজতান্ত্রিক কমিউনিজমকে পরাজিত কোরে ধনতান্ত্রিক গণতন্ত্র জয়লাভ কোরলো। এই প্রথম দাজ্জাল তথা ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা সারা পৃথিবীতে একক শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হোল। যেহেতু দাজ্জালের নিজের মধ্যে আর কোন দ্বন্দ্ব বিভেদ রোইল না অতঃপর সে নজর দিল সমস্ত পৃ্িযথবীর ধর্মীয় জাতি গোষ্ঠীর দিকে।

ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা তথা দাজ্জাল ইহুদী ধর্মের দিকে দেখল যে, তারা স্রষ্টার দেওয়া শ্বাশ্বত বিধানের বিকৃতরূপ ধরে আছে যা ব্যক্তি জীবন থেকেও বিলপ্তপ্রায়, খ্রিস্টানদের দিকে দেখল যে তাদের ধর্ম রবিবারের দিন সাবাথ ডে আর ২৫ ডিসেম্বরের বড় দিন পালনের মাঝেই সীমবদ্ধ আছে। বৌদ্ধরা মাথা কামিয়ে গেরুয়া বসন পরিধান করে জপমালা হাতে নিয়ে, হাঁটু গেড়ে বোসে “বুদ্ধনং স্বরনং গচ্ছামী” জপতে জপতে তদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। জাতীয় জীবন ব্যবস্থায় সাথে তাদের আকঁড়ে ধোরে থাকা ধর্মের লেশমাত্র সম্পর্ক নেই। তারপর যখন ইহুদী খ্রিস্টান সভ্যতা তথা দাজ্জাল হিন্দুদের দিকে তাকালো সে দেখলো হিন্দুরা মাথায় তিলক দিয়ে গায়ে গোলাপ চন্দন মাখিয়ে মন্দীরে যাওয়া এবং কিছু নাম স্বর্বস্ব আচার অনুষ্ঠান ছাড়া আর কিছুতেই যায় না। সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে তাদের কোন কথা নেই।

এরপর দাজ্জাল দৃষ্টি দিল মুসলিম নামধারী জাতিটির দিকে। সে দেখল একমত্র এসলামই স্রষ্টার প্রেরিত পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা নিয়ে বর্তমান আছে। যদিও প্রায় অর্ধ পৃথিবী জুড়ে জাতিটি একটি মৃতদেহের মত পড়ে আছে তবে এখনও মরে নি। মাঝে মাঝেই বিভিন্ন জায়গা থেকে জাগরণী মন্ত্রের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ক্রমেই এই আওয়াজ বৃদ্ধি হোচ্ছে। দাজ্জাল দেখল যে, যে কোন সময় মতবাদ হিসেবে হোক বা জাতি গোষ্ঠী হিসেবে হোক, রাষ্ট্রীয়ভাবে সার্বভৌমত্ব নিয়ে জাতিটি মাথা উচু কোরে দাঁড়াতে পারে। সে ভালোভাবেই জানে যে, এই এসলামই এক সময় অর্ধ পৃথিবী শাসন কোরেছিল আর বুদ্ধিমান মাত্রই বুঝতে পারে যে, নিবু নিবু ছাইয়ের আগুন দখিনা বাতাসের স্পর্শ পেলে তা মুহূর্তেই দাউ দাউ কোরে জ্বলে উঠবে। তখন এই আগুন আর ঠেকানো যাবে না। দাজ্জাল আরও চিন্তা কোরল যে, এই মোসলেম জাতি যদি কখনো এসলামের সঠিক আকীদা বুঝতে পারে নিজেদের সোনালী অতীত জানতে পারে এবং কি ভাবে সেই পথে যাওয়া যায় এই পথ নির্দেশ পেয়ে যায় তাহোলেই সর্বনাশ!

এই ভয় থেকে দাজ্জাল তার অদূর ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দী এসলামের বিরোধিতায় লিপ্ত হোল। যেহেতু সমস্ত পৃথিবীতে সে বর্তমানে একক পরাশক্তি কাজেই সমস্ত পৃথিবীকে শাসন কোরছে এই সভ্যতা। সমস্ত পৃথিবীর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া তার হাতে অর্থাৎ তার অনুগত। এই প্রচারমাধ্যমের দ্বারা দাজ্জাল পৃথিবীর মানুষকে যা ভাবাতে চায়। তাই ভাবায় যা বিশ্বাস করাতে চায়, তাই করায়। এভাবেই প্রচার মাধৗমের দ্বারা অপপ্রচার চালিয়ে সে এসলামকে সন্ত্রাসী, জঙ্গী প্রগতিবিরোধী ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে এসলামের ব্যাপারে সবাইকে বীতশ্রদ্ধ কোরে তুলছে। মুসলিম হিসাবে মাথা তুলতে গেলেই তাদেরকে জেল দিচ্ছে, ফাঁসি দিচ্ছে, বেয়নেট দিয়ে, গুলি কোরে হত্যা কোরছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে গেলে দাজ্জাল সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ কোরছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ কোরছে। এতে যদি সে রাষ্ট্র তার অনুগত না হয় তাহোলে বিভিন্ন অজুহাতে ঐ রাষ্ট্র আক্রমণ কোরে ধ্বংস কোরে সেখানে তার ইচ্ছামত অনুগত সরকারকে বোসিয়ে দেয়।

এভাবেই দাজ্জাল তথা ইহুদী খ্রিস্টান বস্তুবাদী সভ্যতা প্রচার মাধ্যম অর্থবল এবং এবং সবশেষে সামরিক শক্তি দিয়ে সর্বতোভাবে এসলামের বিরোধিতায় মগ্ন রোয়েছে কিন্তু অন্য কোন ধর্ম তার সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে হুমকি না হওয়ায় সে অন্য কোন ধর্মের বিরোধিতা কোরছে না।

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১০০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File