খুনের পর খুন ॥ কোনটারই কূল-কিনারা নেই

লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ৩১ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:২৭:২৭ সকাল

মাওলানা ফারুকী খুন : নারীসহ ২ জন গ্রেফতার ॥ প্রতিবাদে

আজ আধাবেলা হরতাল ডেকেছে ছাত্রসেনা

* মগবাজারে ৩ খুন : দুই আসামি গ্রেফতার ॥ ৫ দিনের রিমান্ডে

* ফারুকী ও মগবাজারের তিন হত্যাকা- ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

* কালশীর ১০ হত্যা : তদন্তে অগ্রগতি নেই

রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়েই একটার পর একটা খুনের ঘটনা ঘটছে। খুনের পাশাপাশি গুম, অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি, নারী নির্যাতনসহ নানা পদের ছোট বড় অপরাধও একের পর এক ঘটে চলেছেই। দেশের সমাজ বিজ্ঞানীরা এসব ঘটনাকে আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার ফল বলে দাবি করেছেন। দেশের মানুষ নানামুখী অপরাধের কবলে পড়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় সরকার ও তার আইনশৃংখলা বাহিনী বলছে, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা । সিরিয়াস কিছু না। উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

গত বুধবার রাতে রাজধানীর রাজাবাজারের ভাড়াটে বাসায় খুন হন জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক শাইখ মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী। এই খুন নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরুর মধ্যেই ২৪ ঘণ্টার মাথায় বৃহস্পতিবার রাতে মগবাজারের সোনালীবাগে খুন হয়েছেন তিনজন। শুধুমাত্র রাজধানীতেই ২৪ ঘণ্টায় চারজনের খুন হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন গোটা রাজধানীবাসী। তাদেরকে নানা আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে ।

একের পর এক অথবা একটার পর একটা যেভাবেই বলা হোক না কেন, এমন খুনের ঘটনা ঘটলেও কোনটারই কূল-কিনারা করতে পারেনি আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা। খুনের বাইরে ঘটে যাওয়া ছোট বড় কোন অপরাধেরই সামাল দিতে পারছে না তারা। তারা বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছেন। তাদের ব্যর্থ হওয়ার পেছনেও রয়েছে নানা কারণ। যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কারণ “আইনশৃংখলা বাহিনীর রাজনৈতিক ব্যবহার ।”

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি আলোচিত খুনের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্টরা। পুলিশ সদর দফতরের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাস হতে চলতি ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে খুন হয়েছেন ২১ হাজার ১৪০ জন। শুধুমাত্র চলতি বছরের তিন মাসেই খুন হয়েছেন ১১০০ জন ।

রাজধানীতে গত বুধবার রাতে খুন হন মাওলানা ফারুকী। তারপর বৃহস্পতিবার রাতে খুন হন সোনালীবাগে তিনজন। এর আগে মিরপুর পল্লবীর কালশীতে খুন হন ১০ বিহারী। তার আগে গোপীবাগে খুন হন কথিত এক পীরসহ ৬ জন। এছাড়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকা-টি ছিল রাজধানীর আলোচিত খুনের ঘটনা ।

মাওলানা ফারুকীর খুনের ঘটনায় এক নারীসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোনালীবাগের ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতারের পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ।

এদিকে মাওলানা ফারুকী হত্যার প্রতিবাদে আজ রোববার সারা দেশে অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করেছে ইসলামী ছাত্রসেনা। সংগঠনটির ঢাকা মহানগর সভাপতি মাসুদ হোসাইন গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে জানান, আজকের হরতাল কর্মসূূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হবে ।

ফারুকী খুন : নারীসহ ২ জন গ্রেফতার

নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া থেকে এক নারীসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল শনিবার সকালে মাহমুদা খাতুন (৪৩) ও শরিফুল ইসলাম (৩৫) নামে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বুধবার রাতে নুরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যার আগে এক নারী তার বাড়িতে ঘুরে গিয়েছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন, যাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিকালে ভক্ত পরিচয় দিয়ে মধ্যবয়সী ওই নারী বাড়িতে এসেছিলেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার ওয়াহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাহমুদা ঘটনার আগে ফারুকীর বাসায় যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। রূপগঞ্জের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ফারুকীর স্বজনরা জানিয়েছেন, ওই নারী পুরো বাসায় ঘুরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই যুবক হজে যাওয়ার আলোচনার কথা বলে ফারুকীর পূর্ব রাজাবাজারের বাড়িতে ঢোকেন। সঙ্গে সঙ্গে আরও ৬/৭ জন যুবক ঢুকে ফারুকীকে গলা কেটে হত্যা করে চলে যায়।

ফারুকী ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতিম-লীর সদস্য ছিলেন, সেই সঙ্গে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতা ছিলেন তিনি। তিনি টেলিভিশনে ইসলামী অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করতেন।

মগবাজারে ৩ খুন: দুই আসামী গ্রেফতার

মগবাজারের তিন জনকে গুলী করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, শুক্রবার গভীর রাতে মগবাজার এলাকা থেকেই তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন- ফারুখ ও সোহেল। দুই জনই ওই হত্যা মামলার তালিকাভুক্ত আসামি। তারা মূল হোতা কালা বাবুর অন্যতম সহযোগী বলেও জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।তিনি বলেন, “ওই দিন গুলী চালানোর সময় হামলাকারীদের দলে গ্রেফতারকৃতরাও উপস্থিত ছিলেন।”

এর আগে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রমনা থানার মামলাটি করেন নিহত বৃষ্টি আক্তার রানুর ভাই শামিম ওরফে কালা চাঁন। এতে আসামি করা হয় ১৫ জনকে। গ্রেফতার দুই জনসহ অন্য আসামিরা হলেন- কালা বাবু, ফয়সাল আহমেদ রনি, শাহাদাত, রাজু, তপু, আরিফ, মারুফ, বিল্লাল, ঠান্ডু, সিরাজ, পিচ্চি রনি ও জনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়, “কালা বাবু ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কালা চাঁন ওরফে শামিমের কাছে চাঁদা চেয়ে আসছিলেন। চাঁদা না দেয়ায় তারা কালা চাঁনের বোনকে ও তার বাড়ির দুই ভাড়াটিয়াকে গুলী করে হত্যা করে।

মামলা দায়েরের আগে শুক্রবার সকালে সোনালীবাগের এক বাসা থেকে আসামি কালা বাবুর দুই চাচিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মামলার বাদী কালা চাঁন মগবাজার রেলওয়ে ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

ফারুক ও সোহেল ৫ দিনের রিমান্ডে

মগবাজারে ট্রিপল মার্ডার মামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফারুক ওরফে শামীম হোসেন ও সোহেল খানকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ এ আদেশ দেন।

মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ জড়িতদের শনাক্ত করে আসামিদের গ্রেফতার এবং হত্যাকা-ে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলী উদ্ধারের স্বার্থে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সেলিম মিঞা। আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মগবাজারের নয়াটোলা এলাকার ৭৮, সোনালীবাগের বাসায় দুর্বৃত্তদের গুলীতে তিনজন নিহত ও একজন আহত হন। নিহতরা হলেন- বৃষ্টি আক্তার (৩২), বেলাল হোসেন (২২) ও মুন্না (২০)। গুলীতে আহত হওয়া হৃদয় হোসেন (২৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তিনজনের মৃতদেহ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কালা বাবুকে নিয়ে গুঞ্জন

সোনালীবাগে গুলীতে তিনজনকে হত্যার ঘটনার প্রধান আসামী কালা বাবুকে গ্রেফতারের গুঞ্জন উঠেছে। এর আগে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ফারুক ও সোহেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রমনা থানা এলাকা থেকে গতকাল শনিবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

মুগদা থানার মান্ডা ঢালপাড় মসজিদ গলির একটি বাসা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালা বাবুকে আটক করেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

কালা বাবুর পারিবারিক সূত্র জানায়, মান্ডা ঢালপাড় মসজিদ গলিতে তার (কালা বাবু) ফুপুর বাড়িতে অবস্থান করছিল সে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে র‌্যাবের একটি দল ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। এ সময় একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাকসুদুল আলম বলেন, র‌্যাবের হাতে কালা বাবু গ্রেফতারের বিষয়টি জানা নেই। তবে তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতার হলে কালা বাবুকে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আনা হবে।

ফারুকী ও মগবাজারের তিন হত্যার ঘটনা ‘বিচ্ছিন্ন’

সম্প্রতি রাজধানীর রাজাবাজারে একজন ও মগবাজারে তিনজন হত্যাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। এসব ঘটনা সিরিয়াস কিছু না এবং এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গতকাল শনিবার ‘ফরমালিন প্রতিরোধে সরকারের সাফল্য ও পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। হত্যাকা-ের ঘটনার তদšত চলছে এবং শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

কালশীর ১০ হত্যা : তদন্তে অগ্রগতি নেই

মিরপুরের কালশীতে আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগে ১০ জন নিহত হওয়ার পর আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশের করা হত্যা মামলায় এখনো কেউ গ্রেফতার হননি। ঘটনার সময় মোবাইল ফোনে তোলা বেশ কিছু ভিডিও হাতে পেলেও সেসব থেকে হামলাকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অন্যদিকে ঘটনার পর পল্লবী থানায় দায়ের করা বাকি পাঁচটি মামলা এবং এসব মামলার আসামিদের নিয়েও দেখা দিয়েছে জটিলতা।

ক্যাম্পের বাসিন্দাদের দাবি, সবক’টি মামলায় তাদের গোষ্ঠীর লোকজনকে আসামী করা হলেও তারা কিছুই জানে না। এমনকি অন্তত তিনটি মামলা কারা করেছে সে সম্পর্কেও তাদের কোনো ধারণা নেই।

আতশবাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জুন ভোরে কালশীর ওই ক্যাম্পে সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হন। সংঘর্র্র্ষের সময় কয়েকটি ঘরে আগুন দেয়া হলে পুড়ে মারা যান ৯জন, যারা একই পরিবারের সদস্য। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও একজন নিহত হন। ওই ঘটনায় পল্লবী থানায় হত্যা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের অভিযোগে ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে দুটি মামলার বাদী থানার এসআই মমিনুর রহমান ও জাহিদুল ইসলাম।

বাকি পাঁচ মামলার বিষয়ে পল্লবী থানার ওসি সৈয়দ জিয়াউজ্জামান বলেন, “বিহারি ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় হয়েছে তিনটি মামলা, আর বাকি তিনটি হয়েছে মিরপুর-১১ এবং প্যারিস রোডে মারামারির ঘটনায়।” ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এসব মামলার তদন্ত করায় তাদের কাছেই সর্বশেষ অগ্রগতির তথ্য রয়েছে বলে জানান তিনি।

পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে এসআই মমিনুর রহমানের করা মামলায় (মামলা নম্বর ৩২) অজ্ঞাত পরিচয় এক হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত করছেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে নিবারণ চন্দ্র বলেন, “পুলিশ মোবাইল ফোনে তোলা ওই ঘটনার বহু ভিডিও ও ছবি পেয়েছে। হামলায় আহত আসলাম, ইয়াসিন ও ফারজানার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণও নেয়া হয়েছে। তবে হামলাকারীদের কাউকে চিহ্নিত করা বা আটক করা যায়নি।”

ওই ঘটনায় আহত ইয়াসিন অবশ্য দাবি করেছেন, পুলিশ তার কোনো ভাষ্য নেয়নি। সেই রাতে পরিবারের নয় সদস্যকে হারিয়েছেন ইয়াসিন।

এই পরিস্থিতিতে মামলার তদন্ত কবে নাগাদ শেষ হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা নিবারণ চন্দ্র বর্মণ।

এদিকে এসব মামলায় ক্যাম্পের বাসিন্দাদের আসামি করায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিহারি নেতারা।

আটকেপড়া পাকিস্তানিদের সংগঠন এসপিজিআরসির কুর্মিটোলা ক্যাম্প শাখার সম্পাদক মো. শওকত হোসেন বলেন, “আমরা ওই ঘটনায় কোনো মামলা করিনি, উল্টো আমাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে।”

উর্দু স্পিকিং পিপলস ইয়ুথ রিহ্যাবিলেটেশন মুভমেন্টের সভাপতি মো. সাদাকাত হোসেন খান বলেন, “আমি এখন পর্যন্ত ৩টি মামলার কথা জানি। একটি করেছে পুলিশ (মামলা নম্বর ৩১)। বাকি দুটো করেছে মোবারক হোসেন (মামলা নম্বর ২৯) ও ওমর ফারুক (মামলা নম্বর ৩০) নামের দুই ব্যক্তি। তিনটি মামলাই করা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে, একই দিনে। এর মধ্যে ২৯ ও ৩০ নম্বর মামলা দুটির ভাষা প্রায় এক।” সাদাকাত হোসেন জানান, হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইয়াসিন তার মেয়ের সেরে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছেন। এরপরই তিনি মামলা করবেন।

এ প্রসঙ্গে ইয়াসিন বলেন, “আমি এসপিজিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে মামলা করব।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছয়টি মামলার তদারককরী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম প্রায় দুই বছরের ছুটি নিয়ে বিদেশে পড়তে গেছেন। মামলার ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তার পরিবর্তে দায়িত্বে এসেছেন সহকারী কমিশনার মাহবুবুর রহমান। তিনি এখনও কাজ শুরু করেননি। ফলে তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

গোপীবাগ হত্যাকা-ের কূল-কিনারা নেই

আট মাসেও রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন রোডে কথিত পীরসহ ছয় খুনের ঘটনার কোনো কূল-কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। গত বুধবার ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতিম-লীর সদস্য নুরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যার পর ছয় খুনের তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, “দুটি হত্যাকা-ের ধরন প্রায় একই রকম।”

দুই হত্যাকা-ের পেছনে একই ব্যক্তিরা বলেও সন্দেহ গোয়েন্দা পুলিশের এই উপ-কমিশনারের, যদিও আট মাসের তদন্তেও আগের হত্যাকা-ে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেননি তিনি।

গত বছরের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশন রোডের ৬৪/৬ নম্বরে চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় মুরিদ সেজে ঢুকে কথিত পীর লুৎফর রহমান ফারুক, তার ছেলে সারোয়ার ইসলাম ফারুক ওরফে মনির, পীরের খাদেম মঞ্জুর আলম মঞ্জু, মুরিদ মো. শাহিন, রাসেল ও মুজিবুল সরকারকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

দুটি হত্যাকা-ের ধরন একই রকম, তবে কথিত পীরের ক্ষেত্রে তার সঙ্গীদেরও হত্যা করা হয়েছিল। ফারুকীর বাড়িতে যারা ছিলেন, যাদের হাত-পা বেঁধে রাখলেও অন্য কিছু করা হয়নি।

নিজেকে পীর দাবি করায় লুৎফর রহমানের ওপর উগ্র ইসলামপন্থীরা ক্ষিপ্ত ছিল বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। লুৎফরসহ ছয়জনকে হত্যার সময় তার বাড়িতে ১০-১২ জন ঢুকেছিল এবং হত্যা করেই চলে যায়, বাড়ি থেকে কিছু জিনিসপত্র খোয়া গেলেও তাতে ঘটনাটি ডাকাতি বলে মনে হয়নি পুলিশের কাছে।

তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর মাতুব্বরের ধারণা, ধর্মীয় উগ্রপন্থী দলগুলোর কোনো একটি ছয় খুনের ঘটনায় জড়িত এবং সম্ভবত তা নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবি।

খুনিদের চিহ্নিত করতে না পারলেও এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “পুলিশ প্রতিদিনই ওই মামলা নিয়ে কাজ করছে। তবে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার মতো কিছু এখনো পাওয়া যায়নি।”

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর বলেন, এই হত্যার ঘটনায় তারা এ পর্যন্ত ৩৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাননি।

লুৎফরের ছোট ছেলে ও মামলার বাদী আব্দুল্লাহ আল ফারুক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, প্রথম দিকে তদন্তের গতি থাকলেও ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়ে। তার সন্দেহের কথা জানতে চাইলে নিহতের এই ছেলে বলেন, “আমার মনে হয়, কোনো জঙ্গি সংগঠনই বাবা-ভাইসহ অন্যদের হত্যা করা হয়েছে। “বাবার গ্রামের বাড়িতে বা ব্যাংকে এমন কোনো টাকা-পয়সা নেই, যার কারণে তাকে খুন করা হবে। বাবার লেখালেখি এবং মতবাদের জন্যই এই ঘটনা।”

অনেক হত্যাকা-েরই কূল-কিনারা নাই

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি থেকে গোপীবাগের সিক্স মার্ডার, কালশী বিহারি পল্লীর ১০ খুন থেকে চ্যানেল আই’র উপস্থাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকীর নৃশংস হত্যাকা-- কোনোটিরই কূল-কিনারা হচ্ছে না। খুনিরাও ধরা পড়েনি, আদৌ ধরা পড়বে কিনা তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। মিরপুরের কালশী বিহারি পল্লীতে আগুনে পুড়িয়ে ১০ বিহারিকে হত্যা করেও খুনিরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। দেশে একের পর এক চাঞ্চল্যকর খুনখারাবির ঘটনা ঘটলেও কোনো হত্যাকা-েরই কূল-কিনারা মিলছে না। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়Ñ তবু হত্যাকা-গুলোর রহস্য উন্মোচন হয় না, শেষ হয় না বিচার। ফলে গোপীবাগের চাঞ্চল্যকর সিক্স মার্ডার ঘটনার মতো একই স্টাইলে মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকেও হত্যা করতে সাহসী হয়ে ওঠে খুনিরা। তারপরও থামে না খুনোখুনির মিছিল। সর্বশেষ মগবাজারেও জায়গা দখলের ঘটনা নিয়ে পাখির মতো গুলী করে আরও তিনজনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এসব হত্যাকা-ের খুনিরা ধরা পড়বে কিনা, বিচার পাবে কিনা স্বজনরা- তা নিয়েও সৃষ্টি হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।সারা দেশে শতাধিক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচার দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। ওইসব ঘটনায় মূল হোতাদের চিহ্নিত করাই সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিটি ঘটনার শুরুতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বেশ তৎপর দেখা গেলেও এক সময় তা থেমে যায়। আবার সন্দেহভাজন হিসেবে কাউকে ধরলেও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলার বাদী ও সাক্ষীরাই উল্টো হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। ফলে খুনিরা থেকে যায় আড়ালে-আবডালে।

মহাজোট সরকারের আমলে আলোচিত হত্যাকা-গুলোর মধ্যে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা, সিআইডির সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলুল হক হত্যা, এসবির পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা, নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবু হত্যা, পরিবহন মালিক নেতা তোহা হত্যা, সায়েদাবাদে আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল হত্যা, রাজধানীতে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেন হত্যা, ডাবল মার্ডার, ট্রিপল মার্ডার মিলিয়ে শতাধিক আলোচিত হত্যাকা-ের কোনো সুরাহা মেলেনি। এসব হত্যা মামলার তদন্ত ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো মামলার দায়সারা গোছের চার্জশিট আদালত পর্যšত পৌঁছানো হলেও আবেদন-নিবেদনে পুনরায় তদন্তের জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে পুলিশ, ডিবি বা সিআইডি দফতরে। তারপর সেসব ঘটনা তদন্তের ক্ষেত্রে আর কোনো অগ্রগতি মিলছে না। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনহারা সদস্যরা ন্যূনতম বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও বিন্দুমাত্র আশার ঝলক দেখতে পান না।গত কয়েক বছরের মধ্যে দেশে যে কয়টি হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির নৃশংস হত্যাকা-। ওই ঘটনা এখনো তদন্ত, পুনঃতদন্ত, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নানা তৎপরতা আর ছোটাছুটির মধ্যেই আটকে রয়েছে। মন্ত্রীদের নানা আশাবাদের আগে-পরে সাগর-রুনির হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক নাটকই হয়েছে। গত দুই বছরেও সাগর-রুনি হত্যাকা-ের কোনোই কিনারা মেলেনি।

২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি রহস্যজনকভাবে খুন হন। হত্যাকা-ের পরপরই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। মামলা, তদন্ত, গ্রেফতার, রিমান্ড সবই হয়েছে। শুধু খুনের সঙ্গে জড়িত আসল আসামিরা গ্রেফতার হয়নি, উদ্ঘাটিত হয়নি খুনের রহস্যও। একইভাবে যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম, সিআইডির সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, এসবির পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও নাটোরের উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা সানাউল্লাহ নূর বাবু হত্যার ঘটনা। দিনের বেলায় প্রকাশ্যে শত শত মানুষ আর গণমাধ্যম কর্মীর সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় বাবুকে। ওই হত্যাকা-ের পুরো ভিডিওচিত্র ধারণ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা। একজন জনপ্রতিনিধিকে রাস্তার উপর ফেলে পিটিয়ে হত্যা করার এমন রোমহর্ষক দৃশ্য দেখে গোটা জাতি স্তব্ধ হয়ে পড়ে। অথচ এখন পর্যন্ত খুনিদের বিচার নিশ্চিত হয়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আলোচিত হত্যাকা-গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঢাকার ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুর রহমান হত্যাক, নরসিংদীতে পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা, রাজধানীতে যুবলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন খান মিল্কী হত্যা, রামপুরায় ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা, বংশালে যুবদল নেতা খলিলুর রহমান হত্যা, রামপুরায় ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ উজ্জ্বল হত্যা, বাড্ডার যুবলীগ নেতা মামুনুর রশীদ হত্যা, মিরপুরে ইলিয়াস আলী মোল্লা এমপির এপিএস আমির হোসেন কাঞ্চন হত্যা, গোপীবাগে পীর লুৎফর রহমানসহ ছয় খুন, মতিঝিলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার সুলতান আহমেদকে গুলি করে হত্যা, সেগুনবাগিচায় টুম্পা ও বাবলা হত্যাকা-। এসব হত্যাকা-ের মধ্যে পৌর মেয়র লোকমান হত্যা ও গুলশানে সংঘটিত মিল্কী হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। বাকি মামলাগুলোর তদন্ত চলছেই। খুনিদেরও ধরতে পারছে না পুলিশ।

রাজধানীর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের অপরাধ অপকর্ম আর চাঞ্চল্যকর নানা খুনখারাবি নিয়েও দেশজুড়ে ছিল আলোচনা। সেখানে সংঘটিত ত্বকি, আশিক, চঞ্চল, মিঠু, ভুলু, রাসেলসহ বহুল আলোচিত অন্তত ২০টি হত্যাকা-ের কোনো কূলকিনারা পাওয়া যায়নি। এর মধ্যেই সংঘটিত হয়েছে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর সাত হত্যাকান্ডের নৃশংসতা। এর আগে সোনারগাঁ এলাকায় একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ফোর মার্ডারের আলোচিত ঘটনাটির ব্যাপারেও আজ পর্যন্ত চূড়ান্ত রেখা টানতে পারেনি পুলিশ। ফলে বিচার জোটেনি স্বজনহারা পরিজনের ভাগ্যে। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনায় মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন ও ভাড়াটে খুনি ব্যবহারের তথ্য মিলেছে। রাজনৈতিক ফায়দা লোটা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, নির্বাচনী বিরোধসহ নানা ধরনের স্বার্থের জের ধরে হত্যাকা- ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজে লাগানো হচ্ছে ভাড়াটে খুনি। ভাড়াটে খুনিদের তৎপরতা ও চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্তে স্থবিরতা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

অপরাধ বিশ্লেষক ও তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে ব্যর্থ হচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। তাৎক্ষণিক উত্তেজনা ও আলোচনার ঝড় বইলেও একপর্যায়ে আড়ালে চলে যায় আলোচিত ঘটনা। একই সঙ্গে অপরাধীরাও পার পেয়ে যায়।

ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা বাড়ছে

ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একরামুল হক একরাম হত্যাকা-ের পর দোষারোপে জড়িয়ে পড়েন প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতারা। একরাম হত্যাকান্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষ্মীপুর ও পাবনায় সাত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবে খুলনা অঞ্চলে আলোচিত ৩১টি, সিলেটে ২৫টি, রাজশাহীতে ১৩টি, চট্টগ্রামে ২৯টি চাঞ্চল্যকর হত্যাকা-ের ঘটনা বছরের পর বছর ধরে তদন্ত কার্যক্রমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে।

ছয় বছরে ২১ হাজার খুন

পুলিশ সদর দফতরের অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের মার্চ মাস পর্যšত নথিভুক্ত খুনের সংখ্যা ২১ হাজার ১৪০ জন। এ সময়ে যারা খুনের শিকার হয়েছেন তাদের মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ, সেনাসহ একাধিক দম্পতিও রয়েছেন। ট্রিপল মার্ডারসহ একসঙ্গে ছয়জনকে হত্যার ঘটনা আছে।

পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এক হাজার ১০০ জন খুন হয়েছেন। এ ছাড়া ২০১৩ সালে খুন হয়েছে তিন হাজার ৯৮৬ জন, ২০১২ সালে দুই হাজার ৭৮২ জন, ২০১১ সালে তিন হাজার ৯৬৬ জন, ২০১০ সালে তিন হাজার ৯৮৮ জন, ২০০৯ সালে চার হাজার ২১৯ জন ও ২০০৮ সালে চার হাজার ৯৯ জন খুন হয়েছেন।

বিষয়: বিবিধ

১৫১২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

259899
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:২০
কাহাফ লিখেছেন : পাগলা হানিফের বয়ান মোতাবেক এগুলো স্বাভাবিক ঘটনা,অস্হির হওয়ার কিছু নেই.......।
259906
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:৪৬
হতভাগা লিখেছেন : দেশের শান্ত পরিস্থিতি অশান্ত করে ইস্যু সৃষ্টি করতে চাইছে সরকার বিরোধী অপশক্তি
259913
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:১০
বিভীষিকা লিখেছেন : ধন্যবাদ
259914
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:১১
বিভীষিকা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File