রোজা আল্লাহর জন্যই
লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ১৪ জুন, ২০১৪, ০৮:৫৪:৩৮ সকাল
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি মানুষ এবং জিনকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’ ইবাদত ছাড়া মানুষ মহান আল্লাহর নৈকট্য ও তাঁর করুণা লাভ করতে পারে না এবং সে ইবাদত হতে হবে শুধু আল্লাহর জন্য ও লৌকিকতামুক্ত। তাহলেই শুধু সে ইবাদত দ্বারা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা যাবে। লৌকিকতামুক্ত ইবাদতের ক্ষেত্রে রোজার কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভাষায় হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘রোজা আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।’ রমজানের রোজার মাধ্যমে মহান আল্লাহর আদর্শ ও চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া যায়। রোজা পালন করা আল্লাহর প্রতি বান্দার গভীর ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম নিদর্শন। রোজা রাখার দ্বারা মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও মমত্ববোধ এবং পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে গরিব-দুঃখী মানুষের প্রতি সহমর্মিতা সৃষ্টি হয়। কেননা যে ব্যক্তি কোনোদিন ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত থাকেনি, সে কখনও ক্ষুধার্ত মানুষের মনোকষ্ট ও দুঃখ-বেদনা বুঝতে পারে না। রোজা রাখার মাধ্যমে ক্ষুধার জ্বালা অনুভবের মাধ্যমে বুঝতে পারা যায় দুঃখী ও ক্ষুধার্ত মানুষ কীভাবে, কত কষ্টে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। ফলে তাদের প্রতি অন্তরে সহানুভূতির উদ্রেক হয় এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসকে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতার মাস বলে আখ্যা দিয়েছেন।
রোজা রাখার দ্বারা মানুষের মধ্যে ধৈর্য ও সংযমের অভ্যাস বাড়ে ওঠে, যা মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার চাবিকাঠি। যার মধ্যে ধৈর্য নেই তার মধ্যে ঈমান নেই। অধৈর্য ও অসহিষ্ণু লোক এ জগতেও সফলকাম হতে পারে না। পরকালেও না। রোজা রাখার দ্বারা মানুষের মধ্যে সংযম ও ধৈর্যের অভ্যাস গড়ে ওঠে। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাই বলেছেন, রোজার মাস ধৈর্যের মাস। ধৈর্যের পুরস্কার হলো জান্নাত। রোজা রাখার মাধ্যমে পরকালীন কঠিন শাস্তি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, রোজা জাহান্নামের ঢালস্বরূপ। রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের অন্তরে তাকওয়া পরহেজগারি ও খোদাভীতির গুণ সৃষ্টি হয়। এ কারণেই রোজা ফরজ করা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। রোজা রাখলে মানুষের প্রবৃত্তির ওপর আমল ও বুদ্ধিমত্তার পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের পাশবিক শক্তি ও অবদমিত হয়। কেননা ক্ষুব্ধ ও পিপাসার দ্বারা মানুষের জৈবিক পাশবিক শক্তি লোপ পায়। এতে মনুষ্যত্ব জাগ্রত হয় এবং অন্তর বিগলিত হয় মহান রাব্বুল আলামিনের প্রতি কৃতজ্ঞতায়।
বিষয়: বিবিধ
৯৭০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন