শিশুদের প্রতি সচেতনতা

লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ০৯ জুন, ২০১৪, ০৫:২৪:১৯ সকাল

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে। কথা দুটি আমাদের সমাজে অতি প্রচলিত। বর্তমানে কথাগুলোকে আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেই বা মূল্যায়ন করি। শিশুর মেধা বিকাশ এবং তাদের ভবিষ্যৎ আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকদের অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হয়। তাদের প্রতি সঠিক, যথাযথ ও সচেতন দৃষ্টি রাখতে হয়। অন্যথায় এই শিশুরাই পরবর্তীতে পরিণত বয়সে মাথাব্যথার কারণ হয়। সমাজের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হয়। বর্তমান সমাজ তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

শিশুরা একটা সহজাত স্বভাব ও যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অভিভাবকরা এ যোগ্যতাকে সঠিক কাজে লাগাতে না পারলেই তারা বখে যায়। বিভ্রান্ত হয়। অসৎ ও দুশ্চরিত্র হয়। সুতরাং শিশুদের নষ্ট হওয়ার জন্য অভিভাবক মহল, কলুষিত পরিবেশ ও কদর্যিত সমাজ ব্যবস্থাই সম্পূর্ণ দায়ী। পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে এবং একটি সহি হাদিসে বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন_ তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দীনে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কর। যে প্রকৃতির অনুযায়ী তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। (রূম ৩০)। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, প্রতিটি শিশুই ফিতরাত সহজাত স্বভাব-যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অতঃপর পিতা-মাতাই তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান ও অগি্নপূজারি বানায়। যেমন গবাদিপশু তো পূর্ণাঙ্গ বাচ্চাই জন্ম দেয়, তোমরা কি এই বাচ্চার মধ্যে কোনো কানকাটা বাচ্চা দেখতে পাও? (মানুষই তো পরে তার কান কাটে)। (বুখারি ১/১৮১)। এই আয়াত ও হাদিসের বিস্তর ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে সংক্ষেপে এতটুকু বলা যায়_ এখানে বলা হয়েছে, প্রতিটি শিশুই সত্য ও ভালো কিছুকে গ্রহণ করার একটি সহজাত স্বভাব-যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে তার পিতা-মাতা ও অভিভাবক মহল তার সেই যোগ্যতাকে নষ্ট করে দেয়। ফলে সে বিভ্রান্ত হয়। বখে যায়। সুতরাং পিতা-মাতা ও অভিভাবক মহলকে এ বিষয়টি অত্যন্ত ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে এবং শিশুদের কাঙ্ক্ষিত মেধা বিকাশ, তাদের চরিত্রবান, সুশিক্ষিত আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্দক চেষ্টা চালাতে হবে। এ ব্যাপারে সদা সচেতন ও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সামান্যতম গাফিলতি ও অবহেলা করা যাবে না। সন্তানের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে অভিভাবকরা সব সময়ই ভাবেন, তাদের শিক্ষিত এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য চেষ্টার যেন কোনো ত্রুটিই করেন না। কিন্তু প্রকৃত ক্যারিয়ারটা কি? শুধু শিক্ষিতই নয়, সুশিক্ষিত হওয়া বেশি জরুরি। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান এবং আদর্শ মানুষ হওয়ার গুরুত্ব যে কত বেশি তা অধিকাংশ অভিভাবকই বোঝেন না। অথচ হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, কোনো পিতা সন্তানকে উত্তম আদব ও শিষ্টাচারের চেয়ে অধিক উত্তম কিছুই দান করতে পারেন না। (তিরমিজি)। সন্তানকে টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি, অর্থ-সম্পদ দিয়ে স্বাবলম্বী করার চেয়ে সুশিক্ষা ও সৎ চরিত্রই তাদের শিক্ষা দেওয়ার প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলেই অভিভাবকের গুরুদায়িত্ব আদায় হবে। অন্যথায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী যেমন হতে হবে, তেমনি চরম মাশুলও দিতে হবে

বিষয়: বিবিধ

১০০৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

232736
০৯ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:০১
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : কোরআন ও হাসীদের রেফারেন্স এর মাধ্যেমে সুন্দর একটি ম্যাসেজ পাওয়া গেল পোষ্ট পড়ে। সন্তানকে ক্যারিয়ার ভিত্তিক ডাক্তার/ইণ্জিনিয়ার যাই বানানো হোকনা কেন তার আগে যেন তার মধ্যে দ্বীনদারীত্ব,চরিত্ববান,আদর্শবান গুনগুলো বিদ্যমান থাকে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File