অফুরন্ত সাওয়াবের দিন জুমা

লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ০৬ জুন, ২০১৪, ০৫:৫৫:৪৮ সকাল

জুমার দিন বা শুক্রবার মুসলমানদের একটি সপ্তাহিক গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতি সপ্তাহ এ দিন ঘুরে আসে আমাদের কাছে অনেক সুযোগের বাহন নিয়ে। আল্লাহ চান কোনো সুযোগে বান্দাকে যেন ক্ষমা করা যায়। আর আল্লাহর বান্দারাও চায় কোনো সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্রষ্টাকে রাজি ও খুশি করা যায়। জুমার দিন এমনি একটি সুযোগের দিন। যাতে অনেক নেক বা নৈকট্য অর্জন করা যায় অল্প সময়ে। হুজুর (সা.) বলেন, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জুমার দিন হলো সর্বোত্তম দিন, যাতে সূর্য উদিত হয়। এ দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনে তাকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এ দিনে তাকে বেহেশত থেকে বের করা হয়েছে। আর জুমার দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (মুসলিম) এ দিনে এমন একটি সময় আছে যাতে আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যাতে কোনো মুসলমান বান্দা আল্লাহর কাছে কোনো মঙ্গল কামনা করলে আল্লাহ তা অবশ্যই দান করেন।’ (বুখারি) সময়টি আসরের পর থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত হতে পারে। আবার দুই খুৎবার মধ্যবর্তী সময়ও হতে পারে। এ সময় বেশি বেশি দোয়া করা উচিত। এ দিন মুসলিমদের ঈদের দিন বলা হয়। ইবনে মাজাহর হাদিসে আছেÑ এ দিন ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের চেয়েও বড়। মুমিনের খুশি হলো আল্লাহর খুশিতে ও ক্ষমা করার মধ্যে। ঈদের দিন আল্লাহ ক্ষমা করেন। তাই মুমিনের খুশির দিন। এ দিনেও আল্লাহ ক্ষমা করেন। তাই বেশি বেশি দোয়া-দরুদে লিপ্ত থাকা। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন অন্যদের গোসল করাবে, নিজে গোসল করবে, তাড়াতাড়ি মসজিদে যাবে, শুরু থেকেই খুৎবা পাবে, যাওয়ার সময় হেঁটে যাবে, ইমামের কাছে গিয়ে বসবে, ভালো করে খুৎবা শ্রবণ করবে এবং অনর্থক কোনো কথাবার্তা বলবে না, তাহলে আল্লাহ তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে এক বছর রোজা এবং এক বছর পূর্ণ রাত জেগে নফল ইবাদতের সাওয়াব তার আমলনামায় লিপিবিদ্ধ করবেন।’ (তিরমিজি) দেখুন কাজটি অতি সামান্য; কিন্তু কত বিশাল প্রতিদান। অন্য হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করে, অতঃপর জুমায় এসে খুৎবা শুনে এবং দূরে থাকলে চুপ থাকে, তাহলে এ জুমা এবং অন্য জুমার মধ্যবর্তী তার সব পাপ ক্ষমা করা হবে। আরও অতিরিক্ত তিন দিনের পাপ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি একটি কঙ্করও স্পর্শ করল সেও অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিম) এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো খুৎবার সময় অনেক মসজিদে টাকা তোলা হয়। অনেকে অনেক কাজ করে, কথা বলেÑ এগুলো ঠিক নয়। তা হলে এ সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

জুমার দিনের বিধান সংবলিত আল্লাহ তাআলা একটি সূরাও নাজিল করেছেন সূরাতুল জুমা নামে। যাতে জুমার আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ পানে ব্যবসা-বাণিজ্য রেখে দৌড়ে যেতে বলেছেন। মিসকাত শরিফে এ হাদিস আছে যে, ইচ্ছাকৃত ভাবে জুমা ত্যাগকারীর অন্তরে মোহর মেরে দেবেন ও মুনাফিক হিসেবে খাতায় তার নাম লেখা হবে বলে হুজুর (সা.) বলেছেন। তাই আমরা যেন ইচ্ছাকৃত ভাবে জুমা ত্যাগ না করি। এবং এ দিনটির যথা যথাযথ মর্যাদা দিই। আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

বিষয়: বিবিধ

৯১২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

231257
০৬ জুন ২০১৪ সকাল ০৬:৩৪
হতভাগা লিখেছেন : ভাল পোস্ট ।

এজন্যই মনে হয় জুম্মার দিনে সবাই ভাল করে সেজেগুজে জুম্মার নামাজে যায় ।

যারা কি না সারাটা সপ্তাহেও মাসজিদের ত্রি সীমানাতেও আসে না এমনকি নিয়মিত নামাজও পড়ে না তারাই বেশী যায় এ সময়ে ।

দেখা যাবে যে এদের মধ্যে ম্যাক্সিমামই হল যারা সপ্তাহের বাকী ৩৪ ওয়াক্ত নামাজই ঠিকঠাক মত পড়ে না , মাসজিদে এসে পড়া তো আরও পরে ।

খৃস্টানরা যেমন রবিবারকে তাদের উপাসনার দিন বানিয়ে রেখেছে , ইহুদীরা যেমন শনিবারকে তেমনি বাংলাদেশের মুসলমানদের শতকরা ৮০ ভাগই শুক্রবারকে মুসলমানদের উপাসনার দিন বানিয়ে রেখেছে ।

অথচ মুসলমানদের জন্য প্রত্যেকটা দিন , প্রত্যেকটা ওয়াক্ত ও প্রত্যেকটা মুহুর্তই উপাসনার ।

রমজান মাসেও দেখা যায় এমন অনেককেই নামাজও পড়ে রোজাও রাখে , যারা সারা বছর নামাজকে এড়িয়ে গেছে বিভিন্ন বাহানায় । রমজান মাস চলে গেলে সেই আগের অবস্থায় চলে যায় ।

যারা একটা বিশেষ দিন এবং বিশেষ মাসকে টার্গেট করে উপাসনার জন্য - তাদের উপাসনা লোক দেখানো ।
০৬ জুন ২০১৪ সকাল ০৭:০৯
177985
হারানো সুর লিখেছেন : খুব ভালো লাগলো।
231372
০৬ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৫
তরিকুল হাসান লিখেছেন : ভালো লাগল, ধন্যবাদ।
231415
০৬ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৯
নূর আল আমিন লিখেছেন : আল্লাহু আকবার

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File