আল কোরআনের আলো

লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ০৩ জুন, ২০১৪, ০৭:২৫:১৭ সকাল

আসমানী সকল কিতাবের মধ্যে কুরআন শেষ কিতাব। কুরআন অবতীর্নের পর অন্য সব আসমানী কিতাব বাতিল হয়ে গেছে। কুরআন ব্যতীত কোন কিতাব নির্ভূল অবস্থায় নেই। অন্য সব কিতাবে সংযোজন বিয়োজন হয়েছে। কুরআনে তা হয়নি হওয়ার সুযোগ নেই। ডঃ মবিয়বকাইলি ‘‘বাইবেল কুরআন ও বিজ্ঞান’’ ব ইতে কুরআন যে নির্ভুল তা প্রমাণ করছেন। ড. আহম্মদ দিদাতও তার রচিত গ্রন্থসমূহে কুরআনের নির্ভুলতা প্রমাণ করছেন। আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান গবেষণাও কম্পিউটার দ্বারা ও কুরআন নির্ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। কুরআনের ভাষা ও বক্তব্য চিন্তাকর্ষক। নির্ভুল ব্যাকরণ ও রচনা শৈলী। আর অতুলনীয় ভাবগাম্ভীর্যে পুর্ণ আল কুরআন। কুরআন সর্বকালের, সর্বজনীন এবং সব সমস্যার সমাধান। কুরআনের প্রতিটি ভবিষ্যৎবানী সত্য বলে প্রমাণিত। মুসলিম-অমুসলিম সবাইকে কুরআন আকর্ষণ করে। বারবার পাঠেও বিরক্তি আসে না পাঠকের। জ্ঞাণের পুঞ্জিভূত সমুদ্র কোরআন। কুরআন পরকাল দেখার জানালা। কোন মানব জ্ঞানে এর মত কিতাব রচনা অসম্ভব। আল্লাহ বলেন-‘‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি এবং আমি স্বয়ং এর হেফাজত করব’’। স্বয়ং আল্লাহ বলেন, ‘‘ইহা ঐ কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই’’ (বাকারা)।

পৃথিবীতে ভুল নেই, সন্দেহ নেই বলে শুরু হয়েছে এমন দ্বিতীয় কোন গ্রন্থের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। কুরআন অলৌকিক বলে এর হাফেজ সংখ্যা অসংখ্য। ছয় কি সাত বছরের শিশুও কুরআন হেফ্জ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি বিস্ময় করা বিষয়। অন্য কোন ধর্ম এভাবে মুখস্ত করা সম্ভব হয়নি। সকল ভাষাভাষি মানুষ কুরআনকে একই ভাষায় মুখস্ত করে। কুরআনের একটি খবরও কেউ বদলাতে পারেনি। পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত গ্রন্থ কুরআন। মানবজাতির প্রতিটি মৌলিক বিভাগের চতুঃগামী কুরআন বলে দেয়। জীবনের সকল অন্ধকারে কুরআন আলো হয়ে পথ দেখায়। মনের কোনে যত প্রশ্ন উঁকি দেয় সেসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় কুরআনে। এটি গোটা বিশ্বের জন্য শান্তির পতাকাবাহী। আরবের কাফিররাও গোপনে কুরআন শুনত। হযরত ওমর এর মত ইসলাম বিদ্বেষি লোকও কুরআন শুনে হাতের তরবারী ঝরে পড়ে এবং ইসলাম গ্রহণ করে।

মুহাম্মদ (সঃ) ছিলেন জীবন্ত কুরআন। কুরআন না মানলে মুহাম্মদ (সঃ) কে মানা হয়নি। তাঁর উপরই কুরআন নাযিল হয়। কুরআনে যুদ্ধ শান্তি, বিচার, সন্ধি, চুক্তি, ব্যবসা, লেনদেন, বৈধ-অবৈধ, বিজ্ঞান, অথনীতি, রাষ্ট্রনীতি, ভূগোল, সমাজনীতি, সৌরজগৎ, জলভাগ, স্থল ভাগ ও তার মধ্যে থাকা বিভিন্ন উদ্ভিদ বৃক্ষরাজি, প্রাণী জগতসহ অজানা সব বিষয়ের রহস্য উম্মোচন করা হয়েছে। মানব দানব ছাড়াও পৃথিবীর বড় প্রাণী ও ক্ষুদ্র প্রাণী নিয়ে আলোকপাত আছে কুরআনে। কুরআনে তাওহীদ (একাত্ববাদ) রেসালাত ও পরকালের ব্যাপক বর্ণণা আছে। এতে আছে নৃতত্ত্ব ভূ-তত্ত্ব ও সৃষ্টি তত্ত্ব। কুরআনে শুধু মুসলমানের জন্য নয় এটি সকল মানুষের জন্য তাই কুরআনের আলোচ্য বিষয় মানুষ। কুরআনে আছে, ইতিহাস সত্য গল্প, বিভিন্ন সম্প্রদায়ও জাতির উত্থান-পতন সহ শান্তি সমৃদ্ধি ও নিরাপদ জীবনের দিক নির্দেশনা। মানুষের গ্রহণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ের নির্দেশনা কুরআন। বিশাল মহাবিশ্বে জ্ঞান বিজ্ঞানের মহাভান্ডার থেকে মানব জাতির যতটুকু জ্ঞান বিজ্ঞানের জানা প্রয়োজন, ঠিক তার সবই মহাগ্রন্থ আল কুরআনের চুড়ান্ত তথ্যরূপে বিধৃত আছে। বলা যায়, আধুনিক ও প্রাচীন বিজ্ঞান কুরআনের কাছে ঋণী। কুরআন হচ্ছে সব বিষয়ের মূল সূত্র। কুরআনের শব্দাবলী ও বাক্য সমষ্টি অশেষ অর্থে পরিপূর্ণ। কুরআনের বর্ণনারীতি কত আশ্চর্যজনক তা লক্ষ্য করুন-এতে জীবিত শব্দ যতবার আছে। এ ছাড়া স্থলভাগ যতবার আছে উল্লেখ হয়েছে মৃত্যু ততবার উল্লেখ আছে। দুনিয়া যতবার উল্লেখ আছে আখেরাত ততবার আছে। এ ছাড়া স্থলভাগ যতবার উল্লেখ আছে জলভাগ শব্দটি তার তিনগুন বেশী এসেছে। যেন তিন ভাগ জল এক ভাগ স্থল বোঝানো হচ্ছে। কুরআনে উক্ত ১৯ শব্দটি বিষ্ময়কর। এ ১৯ দ্বারা কুরআনের শব্দ সংখ্যা আয়াত সংখ্যা যের সংখ্য, যবর সংখ্যা, সুরা সংখ্যাসহ যা ভাগ করবেন তা মিলে যায়। আজ অধিকাংশ মুসলমানেরই ধারণা নেই যে কুরআন আসলে কি? তাঁরা মনে করে এটি নিছক একটি ধর্মগ্রন্থ বা তাবিজ কবজ ও ঝাড়ফুঁকের মন্ত্র ছাড়া আর কি? অথচ কুরআন হচ্ছে জীবনের সব সমস্যায় সমাধান গ্রন্থ। এটি মানবজাতিকে অসংখ্য অন্ধকার পথ হতে আলোর পথ দেখানোর বন্য। কুরআনের এ নূর বা আলোকে কেউ নেভাতে পারবে না। কুরআনে অন্ধকার শব্দটি বহুবচনে আর আলো বা নূর শব্দটি একবচনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, কুরআনই একমাত্র আলো আর সব মতবাদ ও দর্শনগুলো অন্ধকারে ভরা। কুরআনে কুরআনের নাম ‘নূর’’বা আলো রাখা হয়েছে। এর অর্থ হলো কুরআনকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আলোরূপে গ্রহণ করতে হবে। আজ আমরা আল-কুরআনের আলো ছেড়ে মানব রচিত মতবাদের অন্ধকার অমানিশায় হাবুডুবু খাচ্ছি। মহাকবি ইকবাল বলেছেন, ‘ওসব মুসলিম যুগে যুগে সম্মানীয় ছিলেন কুরআন মেনে আর আজ তোমরা অধঃপতিত হচ্ছো কুরআন ছেড়ে দিয়ে’। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, ‘‘তুমি পন্ডিত হতে পার তবে কুরআনের জ্ঞান না থাকলে তুমি মুখ পন্ডিত ছাড়া কিছুই নও’’।

প্রিয় পাঠক এখন আমরা সংক্ষপে কুরআন হতে কুরআনের পরিচয় জানব। আল্লাহতায়ালা ১ম লাইলাতুল কদরে কুরআন নাযিল করেন। ‘নিশ্চয় আমি লাইলাতুল কদরের রাতে কুরআন নাযিল করেছি’। ‘‘তুমি কি জানো লাইলাতুল কদর কি? লাইলাতুল কদর হাজার মাস হতেও উত্তম’’ (সুরা কদর)।

আল্লাহ আরো বলেন, ‘রমজান মাস যাতে কুরআন নাযিল হয়েছে যা মানুষের জন্য পথ নির্দেশিকা এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ। আর ন্যায় অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধান কারী’’ (বাকারা১৮৫)। উপরোক্ত দুটি আয়াতে যা বলা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হল কোরআন নাযিলের কারণে একটি রাত হাজার মাস হতেও মূল্যবান হয়েছে। যে রাতটি তালাশের জন্য এতেকাফকারীকে আল্লাহ দুই হজ্ব ও দুই ওমরার সওয়াব দেন। সুবহানাল্লাহ। সুতরাং কুরআন নাযিল না হলে লাইলাতুল কদরও হত না। যে রাতে এবাদত করলে সব গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং যে রাতে এবাদত হতে বঞ্চিত হলে সকল কল্যান হতে বঞ্চিত হতে হয়। এ ছাড়া উপরোক্ত একটি আয়াতে কুরআন নাযিলের কারণে রমজানের সম্মানের কথা বলা হয়েছে। কুরআন নাযিল না হলে রমজান এত গুরুত্ব পূর্ন হত না। যেমন বর ছাড়া বরযাত্রীর মুল্য নেই। তাই রমজান ও লাইলাতুল কদর এর মর্যাদা পেতে হলে কুরআন চর্চায় এ গিয়ে আসতে হবে। কুরআন সম্পর্কে আল্লাহ আরো বলেন-(১) ‘এ কুরআন সর্বাধিক সরল ও সঠিক পথের দিশা দেয়। (বনী ইসরাইল-৯)’’; (২) ‘‘আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করেছি যা মুমিনদের জন্য সুচিকিৎসা ও রহমত স্বরূপ’’ (বনী ইসরাইল-৮২)। (৩) “যদি আমি এ কুরআনকে পাহাড়ের ওপর নাযিল করতাম তা হলে তুমি তাকে দেখতে ভীত সন্ত্রস্ত আর সে যেন আল্লাহর ভয়ে বিদীর্ন হয়ে গিয়েছে। (হাশর-২১)। (৪) “আমি উপদেশ গ্রহণ করার জন্য কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি। কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি?” (কামার ১৭,৩৩,৪০) । এ ছাড়া কুরআনে আল্লাহর অবজ্ঞাকারীকে কিয়ামতে অন্ধ বানাবেন দুনিয়াতে অশান্তির জীবন দেবেন বলে বর্ণনা করেছেন। হাদিস শরীফে রাসূলে পাক বলেন, ‘‘যার অন্তরে কুরআন নেই তার অন্তর ছাড়া বাড়িতুল্য বিরানভূমি যেন” (দাবেমী)। “তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে কুরআন শিখে এবং অন্যকে শেখায়’’ (বুখারী)।

রাসূলে পাক বলেন, ‘‘এ কিতাবের মাধ্যমে আল্লাহ কোন কোন জাতিকে ওপরে উঠান (মানার কারণে) আর কোন কোন জাতিকে অধপতিত করেন (না মানার করণে)” (মুছলিম)। “আখেরাতে হাফেজকে বলা হবে তুমি কুরআন পড় আর সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে থাক’’ (আবু দাউদ) । অন্য হাদিসে আছে, “কিয়ামতে বান্দার জন্য রমজানের রোজা ও কুরআন সুপারিশ করবে’’। আল্লাহ পাক রমজানকে কুরআনের মাস এবং কুরআনের বিজয়ের মাস বানিয়েছেন। তাই প্রতিটি মুসলিমের উচিৎ এ মাসে কোরআনের চর্চায় আত্মনিয়োগ করা। অন্যথায় রমজানের ফজিলত পাওয়া অসম্ভব। অতঃপর প্রিয় পাঠকদের সামনে আল-কুরআনের সংক্ষিপ্ত বিষয় বর্ণনা তুলে ধরব-(১) কুরআনে দোয়া সর্ম্পকে ৭০ স্থানে আলোচনা এসেছে, (২) নামাজ সর্ম্পকে ৮২ বার ৯০ এর বেশি স্থানে উল্লেখ আছে, (৩) যাকাত সর্ম্পকে ১৫০ স্থানে, (৪) ওয়াদা সম্পর্কে ১০০০ স্থানে, (৫) ভয় প্রদর্শন ১০০০ স্থানে, (৬) সৎ কাজের আদেশ ১০০০ স্থানে, (৭) অসৎ কাজে বাধা ১০০০ স্থানে, (৮) বৈধ ২৫০ স্থানে, (৯) অবৈধ ২৫০ স্থানে, (১০) দৃষ্টান্ত ১০০০ স্থানে, (১১) কাহিনী ৫০০টি, (১২) তসবীহ ৩০০ স্থানে, (১৩) বিজ্ঞান সম্পর্কে ১১% আয়াত, (১৪) ৮৯% আয়াত আইন কানুন, বিধি বিধান, আচার, অনুষ্ঠান, আকাইদ, বিশ্বাস এবং মানবিক শিক্ষামূলক বিষয়ে। আল-কুরআনে শব্দ সংখ্যা ৭৭২৭৭, আয়াত ৬৬৬৬টি, রুকু ৫৪০টি, সেজদা ১৪টি, সূরা ১১৪টি। পাঠকদের উদ্দেশ্যে এখন আলোকপাত করব কুরআন নাযিল ও সংকলন নিয়ে। কুরআন শব্দটি কুরআনে ৬১ বার এসেছে এর অর্থ পঠিত, অধিক পঠিত, বারবার পাঠ করা, একত্রিত করা। যেহেতু কুরআনে সব বিষয় এর বর্ণনা আল্লাহ একত্রিত করেছেন তাই এর নাম কুরআন। কুরআন ছাড়াও এর আরো নাম রয়েছে। কুরআন গ্রন্থাকারে নয় খন্ডাকারে অহীর নিয়মে অবর্তীন হয়েছে। কখনো কয়েকটি আয়াত কখনো সম্পর্ণ সূরা নাযিল হয়। কুরআন নাযিলের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। এ পদ্ধতিকে অহী বলে যার অর্থ ইঙ্গিত, ইশারা। অহী এর সমষ্টি কে (যা ২৩ বছর কাল ধরে প্রয়োজনমত নাযিল হয়)। কুরআন বলে, যে কোন নবীর প্রতি অবতীর্ণ আল্লাহর কলামই অহী। মানব জ্ঞান যেখানে শেষ অহী সেখানে শুরু। অহী মানব আকলের উর্দ্ধে। অহী শ্রষ্ঠারই বিধান সৃষ্টির তৈরী মতবাদ অহীর সাথে তুলনীয় নয়। সৃষ্টির কল্যাণ কিভাবে হবে সে জন্যই শ্রষ্ঠা অহী নাযিল করেন। অহী নাযিল পদ্ধতি তিনটি। (এক) অন্তরে ঢেলে দেয়া (দুই) সরাসরি আল্লাহর সাথে কথোপকথন। (তিন) ফেরেস্তার মাধ্যমে। রাসূল (সঃ) এর নিকট অহী নাযিল মৌলিকভাবে দু’রকম-ফেরেস্তার মাধ্যমে এবং সরাসরি। তবে ফেরেস্তার মাধ্যমে অহী ছিল তিন ধরণের- ঘন্টাধ্বনীরূপে, মানব আকৃতিতে এবং অদৃশ্যরূপে। ঘন্টাধ্বনীরূপে অহী রাসূল (সঃ) এর কাছে খুবই কষ্টকর মনে হত। যা রাসূল (সঃ) বুঝে নিতেন (বোখারী)।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘‘প্রচন্ড শীতেও অহী নাযিল কালে নবী (সঃ) ঘর্মাক্ত হয়ে যেতেন। (বোখারী)। ‘‘অহী নাযিলকালে রাসুলেপাকের উট বসে যেত। উটের পাগুলো মাটিতে গেঁড়ে যেত’’। আয়েশা (রাঃ) বলেন, অহী নাযিলকালে রাসূল (সঃ) এর শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে চাইত মুখ বিবর্ণ হয়ে যেত। দাঁতগুলো কাঁপত, কিছু কিছু ঘাম ঝরত’’ (বোখারী)। রাসূল (সঃ) বলেন, ‘‘ঘন্টাধ্বনী আকারে অহী নাযিলের সময় আমার মনে হত প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে’’ (মুসনাদে আহমদ)। সব অহী কুরআন নয় যে অহীর ভাব ও অর্থ উভয়টি আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ তা হল কুরআন। একে অহীয়ে মাত্লু বলে। আরেক প্রকার অহী হল অহীয়ে গাইরে মাত্লু যা হাদীস নামে পরিচিত। হাদীস মূলত কুরআনেরই ব্যাখ্যা। রাসূল (সঃ) বলেন, ‘‘আমাকে কুরআন দেওয়া হয়েছে তার সাথে কুরআনের মত বিধিবিধান দেওয়া হয়েছে’’। কুরআন নাযিল মাত্র হুজুর (সঃ) অহীর লেখকদেরকে চামড়ায়, হাড়ে, পাথরে, পাতায় যেভাবে লেখা প্রয়োজন সেভাবে লিখতে বলে দিতেন। তাছাড়া প্রতি বছর ফেরেস্তা জিবরাইল (আঃ) রাসূলে পাককে কুরআন যেটুকু নাযিল হত তা শোনাতেন ফলে কুরআন সেভাবেই সংরক্ষিত হয়। রাসূল (সঃ) এন্তেকালের পর সাহাবাদের সাথে পরামর্শ করে আবু বকর (রাঃ) আল কুরআনকে গ্রন্থাকারে করার পরিকল্পনা নেন। এ জন্য যাইদ বিন সাবিতকে দায়িত্ব দেন। আবু বকর (রাঃ) এন্তেকালের পর হযরত ওমর (রাঃ) অতঃপর তার কন্যা হাফসা (রাঃ) এর নিকট সেই গ্রন্থটি সংরক্ষিত থাকে। অতঃপর ওসমান রাঃ সেই গ্রন্থ হতে অসংখ্য কপি করে সারা জগতে ছড়িয়ে দেন। আমরা বর্তমানে সেই কপির মত কুরআন পাঠ করছি।

পবিত্র কুরআন গদ্যও নয়, পদ্যও নয়। এটি চিরন্তন শ্বাশতজীবন বিধান। এটিকে পরিপূর্ণ মানতে হয়, আংশিক মেনে মুসলমান হওয়া যায় না। কুরআনবিহীন শান্তির সন্ধান মরিচিকার পেছনে দৌঁড়ানোর মত। এটি খোদাভীরুদেরই পথ দেখায়। কুরআন ঘুমন্তকে জাগিয়ে তোলে। ‘‘ইহদিনাস্সিরাতাল মুস্তাকিম- হে আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ দেখাও’’।

এর উত্তরে আল্লাহ পবিত্র কুরআন নাযিল করে বলেছেন, ‘‘এটাই তোমাদের জন্য সঠিক পথ যাতে সন্দেহ নেই’’। ‘‘যে আমার দেয়া কুরআনের হেদায়াত মানবে তাদের ভয় নেই এবং কোন চিন্তাও নেই’’ (বাকারা)। এবং ‘‘তোমাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি সব বিষয়ের বর্ণনাস্বরূপ’’ (নহল) । সূরা আরাফে বলা হয়েছে, ‘‘কুরআন কান দিয়ে মন দিয়ে শুনতে হবে এবং চুপ থেকে শুনতে হবে বুঝতে হবে’’।

আল্লাহ বলেন, ‘‘নিশ্চয় তোমাদের নিকট আলো ও সুষ্পষ্ট কিতাব এসেছে আল্লাহর পক্ষ হতে’’। ‘‘তোমরা ঈমান আন আল্লাহর ওপর এবং তার রাসূলের ওপর এবং সেই আলোর প্রতি যা আমি নাযিল করেছি’’ (কুরআন)।

বিষয়: বিবিধ

২০৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File