মেহনতি মানুষের অধিকার
লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ১৭ মে, ২০১৪, ০৯:৫৩:০৮ রাত
ইসলাম শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মর্যাদায় বিশ্বাসী। ইসলাম মালিকদের শিখিয়েছে, মেহনতি মানুষকে আলাদা কোনো শ্রেণি না ভেবে নিজেদের মতোই ভাবতে হবে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, তারা তো (মেহনতি মানুষ) তোমাদেরই ভাই, আল্লাহতায়ালা তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন, এই যা। (তিরমিজি ২/১৬)
মালিকরা যদি মজদুরদের ভাই ভাবতে শুরু করেন তাহলে কি আর কোনো দ্বন্দ্ব থাকে? অধিকার আদায়ের জন্য কি আর মেহনতি মানুষকে সংগ্রাম করতে হয়। জীবন দিতে বা রক্ত ঝরাতে হয়? মোটেও না। কিন্তু এ পৃথিবীর মালিক শ্রেণি মজদুরদের ভাই ভাবতে শিখবে কবে? উপরন্তু পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মেহনতি মানুষের অধিকারগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। শ্রমের মূল্য দিতে গিয়ে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও। হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, শ্রমজীবীর উপার্জনই উৎকৃষ্টতর উপার্জন যদি সে সৎ উপার্জনকারী হয়। তিনি আরও ইরশাদ করেন, যে নিজের শ্রমের ওপর জীবিকানির্বাহ করে তার চেয়ে উত্তম আহার আর কেউই করে না। মেহনত মজদুরি করে উপার্জন করার গুরুত্ব দিয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর। (সূরা জুমুআর : ১০)
মজদুরদের শ্রমঘণ্টা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ইসলাম অত্যন্ত সুন্দর সমাধান দিয়েছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, যার ভাই তার অধীনস্থ সে যেন তাকে তার সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপিয়ে না দেয়। যদি একান্ত তাকে সাধ্যাতীত কাজের দায়িত্ব দিতেই হয় তাহলে যেন তাকে সে ব্যাপারে সহযোগিতা করে। (তিরমিজি : ২/১৬)
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কাজের দায়িত্ব দেন না। (বাকারা : ২৮৬) মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, নূ্যনতম মজুরি নির্ধারণ হবে মজদুরের প্রয়োজনানুসারে। মজদুরকে অন্তত এতটুকু মজুরি দিতে হবে, যা দিয়ে সে তার স্বাভাবিক প্রয়োজন মেটাতে পারে। কাজের যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় মজুরি নির্ধারণকেও ইসলাম স্বীকৃতি দেয়।
বিষয়: বিবিধ
৭৪৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন