শীতের শেষে
লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৩৩:১৫ রাত
চারদিকে বসন্ত রঙের ছড়াছড়ি কিন্তু এখনো রয়ে গেছে হালকা শীতের আমেজ। সময়টা যাচ্ছে না গরম, না ঠাণ্ডার মিশেলে। শীতের পোশাক পরে রাস্তায় বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরই কড়া রোদ চামড়ায় খোঁচাতে শুরু করে। আবার কখনো দেখা যায় বাইরে রোদ দেখে হাফহাতার একটা পোশাক পরে বের হলেন। আর ওই দিনই দেখা গেল ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু করে।
বাঙালির পোশাক মানেই শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া বা শার্ট। দিন দিন দেশীয় পোশাকের ঐতিহ্যের সঙ্গে সংমিশ্রণ ঘটছে পাশ্চাত্যের। এতে পোশাকে এসেছে বৈচিত্র্যতা। তবে যে পোশাকই পরা হোক না কেন ফাল্গুনের শুরুর দিনগুলোতে সুতি কাপড়ের পোশাকের কোনো বিকল্প নেই।
সব ঋতুতেই সুতির কাপড় মানানসই এবং আরামদায়ক। শুধু আবহাওয়া বুঝে পাতলা কিংবা মোটা সুতির কাপড় বেছে নিতে হয়। তাছাড়া সুতি কাপড়ের পোশাক ব্যক্তিত্বেও প্রভাব ফেলে। যে কোনো নারী-পুরুষের মাঝে মার্জিতভাব প্রকাশ পায় সুতির পোশাক পরিধানে।
আমাদের দেশের তৈরি সুতি কাপড়ের সমাদর ছড়িয়ে পড়েছে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে। দেশের সর্বত্র গড়ে উঠছে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস। আবহাওয়া, বয়স এবং ভিন্ন ভিন্ন রুচির মধ্যে সামঞ্জস্যতা রেখে তারা তৈরি করছে পোশাক। এ সময়ে বাজারে একটু মোটা সুতি কাপড়ের ফুলহাতা পোশাকের কদরই বেশি দেখা যাচ্ছে।
এ সময় তরুণরা বেছে নিচ্ছেন ফুলহাতার শার্ট। এতে করে হালকা শীত সামলে নেওয়ার পাশাপাশি ফ্যাশনও বজায় থাকছে। আর সন্ধ্যার পর বাতাসে হিমভাব থাকায় অনেকের মাঝেই কান ঢাকার একটা প্রবণতা দেখা যায়। তাই হুডি শার্টের জনপ্রিয়তাও কম নয়। কিছু কিছু শার্টের হুডি আবার প্রয়োজনে খুলেও রাখা যায়। এ ডিজাইনের শার্ট গরমের সময়ও পরা যায়। ইদানীং তরুণদের পছন্দের তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্লিমফিটেড ও কোমর সমান লম্বা শার্ট। আগের মতো ঢিলেঢালা বা ক্যাজুয়াল শার্ট পরার চল কমে গেছে। স্ট্রাইপ, জ্যামিতিক, নকশা, এক রঙা অথবা বহু রঙের মিশেলে তৈরি হয় এসব শার্ট। তবে হালকা শীতের আমেজের সময় বলে গাঢ় রঙের শার্টই বেশি পরতে দেখা যাচ্ছে।
হালকা শীতের এই দিনে শার্টের নতুন ডিজাইনের মধ্যে টু-পার্টের শার্ট অন্যতম। এ ধরনের শার্টের উপরিভাগে এক ডিজাইন আবার ভেতরটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। এটাকে বলা হচ্ছে টুইন ফেব্রিঙ্। হুডিগুলোতেও টুইন ফেব্রিঙ্ রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে একেবারে সাদামাটা পকেটের ব্যবহার। কলারের মধ্যেও পকেট রয়েছে, যাতে করে হুডিটা খুলে ঢোকানো যেতে পারে। অবশ্য ক্যাজুয়াল শার্টের মধ্যে ডেনিম শার্টও বর্তমান সময়ের আবহাওয়া উপযোগী। পাতলা ডেনিম দিয়ে এসব শার্ট তৈরি হয় বলে গরমের সময়ও পরা যায়।
ফরমাল শার্টে গিজা কটন, ইন্ডিয়ান অরবিন্দ ফেব্রিঙ্রে ব্যবহার লক্ষণীয়। শীত-শীত হাওয়া বইছে বলে গাঢ় রঙের আধিপত্য একটু বেশি। চিরায়ত বাঙালি নারীর জীবনে সুতি কাপড়ের যে আবেদন, তা অন্য কোনো কাপড়ের সঙ্গে মেলানো অসম্ভব। শীত-শীত আবহাওয়ায় নারীদের পরনে ওঠে এসেছে সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট, টপস, জিন্স প্যান্ট, ফতুয়া, টি-শার্টসহ নানা ধরনের সুতি কাপড়ের তৈরি সব ধরনের পোশাক। এ বছর তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে সুতি কাপড়ের প্রিন্ট, অ্যাপলিক, চেক, স্ট্রাইপের হাতা ছাড়া ও হাতাওয়ালা ওভেন হুডিস। এসব ওভেন হুডিসে বুকের ওপরের একটু অংশ ফাড়া, বিভিন্ন ডিজাইনের বোতাম, কোমরের দিকে বিভিন্ন ধরনের বেল্ট লাগানো ও নিচের দিকটায় নানা ধরনের কাটের বৈচিত্র্য রয়েছে। এ ছাড়া সুতি কাপড়ের বিভিন্ন রঙের স্ট্রাইপের সুয়িট টপসও এবারের শীতে মেয়েদের বেশ পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এগুলো হুডি ও হুডি ছাড়াও হয়ে থাকে। হালকা শীতের আমেজের সঙ্গে কটি বেশ মানানসই। তরুণীরা বিভিন্ন পোশাকের সঙ্গে এখন কটি পরছেন। এসব কটি বাড়িতে থাকা একটু ভারী কাপড় দিয়েও অনায়াসে বানিয়ে নেওয়া যায়। একসময় সাধারণভাবেই বানানো হতো কটি। তখন কটিতে নকশার বাহুল্য দেখা যেত না। ইদানীংকালের কটিতে নকশা, কাপড়, কাটছাঁট সব রকমের পরিবর্তনই এসেছে। সিল্ক, খাদি, অ্যান্ডি, তসর, ব্রোকেড, ভারী ধুপিয়ান কাপড় ইত্যাদি দিয়ে বানানো কটিতে স্মার্ট দেখাবে, আরামও পাওয়া যাবে। পুরনো বেনারসি শাড়িগুলোও এ কাজে ব্যবহার করা যায়। তরুণীরা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গেই কটি বেশি পরছেন। অবশ্য এক্ষেত্রে সালোয়ারটি হয় চাপা বা চুড়িদার। শাড়ির সঙ্গেও কটি পরছেন কেউ কেউ। কারণ এ সময় শাড়ির সঙ্গে শাল পরলে একটু গরমই লাগে কিন্তু কটিতে ফ্যাশন এবং আরাম দুটাই পাওয়া যায়।
বিষয়: বিবিধ
১১৭৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন