হালাল-হারাম বিবেচনা করে জীবনধারণ করা

লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ৩১ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:০৩:৪৪ সকাল

হালাল শব্দটি আরবি। এর আভিধানিক অর্থ সিদ্ধ বা বৈধ। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় ইসলাম যে কাজ করা বা খাওয়ার অথবা বলার অনুমতি প্রদান করেছেন কিংবা নিষেধ করেননি এমন বিষয়, বস্তু, জিনিস বা কাজকে হালাল বলে। হারাম শব্দটিও আরবি। যার আভিধানিক অর্থ নিষিদ্ধ বা অবৈধ। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় ইসলাম যা স্পষ্ট ভাষায় নিষেধ করেছে এবং যা করলে ইহকাল ও পরকালে শাস্তির বিধান ধার্য করা হয়েছে এরূপ বস্তু, বিষয়, কাজ, জিনিসকে হারাম বলা হয়। মহান আল্লাহ বলেন, হালালও স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। অতএব হালালকে হালাল হিসেবে জানা, হারামকে হারাম হিসেবে পালন করা সবার উপরে ফরজ। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন- 'হে মানব জাতি, তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু সামগ্রী ভক্ষণ কর। আর তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিঃসন্দেহে শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।' (সূরা আল-বাকারা : ১৬৮) আল্লাহতায়ালা অন্য আয়াতে বলেছেন- হে মুমিনগণ, আমি তোমাদের যেসব পবিত্র বস্তু সামগ্রী রিজিক হিসেবে দান করেছি তা হতে ভক্ষণ কর এবং আল্লাহর শোকরিয়া আদায় কর, যদি তোমরা একান্তভাবে তারই বন্দেগি কর। (সূরা আল-বাকারা : ১৭২) হারাম সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, তিনি তো তোমাদের ওপর মৃত জন্তু, বক্ত, শূকরের গোশত এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নামে জবেহকৃত প্রাণী হারাম করেছেন। অবশ্য যে ব্যক্তি নিরুপায় হয়েছে সে সীমা লঙ্ঘনকারী বা অভ্যস্ত নয়, তবে তার জন্য তা ভক্ষণে গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াবান। (সূরা আল-বাকারা ১৭৩) অন্য এক আয়াতে আল্লাহ বলেন, হে নবী! তাদের বলুন, আমার আল্লাহ যেসব জিনিস হারাম করেছেন তাতে নির্লজ্জতার কাজ যা প্রকাশ্য ও গোপনীয় এবং গুনাহের কাজ ও সত্যের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি এবং আল্লাহর সঙ্গে এমন জিনিসকে অংশীদার করা, যার কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা যায় তোমরা জানো না। (সূরা : আরাফ : ৩৩) হালাল-হারাম সম্পর্কে হাদিস শরিফে আলোকপাত করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, অন্যান্য ফরজের মতো হালাল রুজি অন্বেষণ করাও একটি ফরজ। (বায়হাকী) সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানব জাতির কাছে এমন এক জমানা আসবে, যখন কামাই-রোজগারের ব্যাপারে হালাল-হারামের কোনো বিচার-বিবেচনা করবে না। (সহিহ বুখারি শরিফ) হজরত উমার ইবনে আউফ ইবনে মুযানী (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন, মুসলমানরা পরস্পরের মধ্যে চুক্তি ও অঙ্গীকার করতে পারে, তবে এমন চুক্তি ও অঙ্গীকার বৈধ নয়, যা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করে দেয়। মুসলমানরা তাদের শর্তাবলী পালন করবে। তবে এমন কোনো শর্ত মানা যাবে না যা হারামকে হালাল করে দেয়। আর হালালকে হারাম করে দেয়। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ) হারামের পরিণতি সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে গোশত হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হারাম খাদ্য গঠিত দেহের জন্য জাহান্নামের আগুনই উত্তম। (বায়হাকি ও আহমাদ) আল্লাহ আমাদের হালাল রুজি কামাই করার এবং হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন।

বিষয়: বিবিধ

১১৩৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

170796
৩১ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:২২
জাগো মানুস জাগো লিখেছেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানব জাতির কাছে এমন এক জমানা আসবে, যখন কামাই-রোজগারের ব্যাপারে হালাল-হারামের কোনো বিচার-বিবেচনা করবে না। (সহিহ বুখারি শরিফ) .....These are days may be running.
May allah save us & give us the capacity for halal income,give us the patience with halal income.
171234
০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:২৬
শেখের পোলা লিখেছেন : প্রবাসে যা দেখি; অবৈধ ইনকাম, সরকারী ট্যাক্স ফাঁকী,মেকী কারণ দেখিয়ে খয়রাতী সাহায্য, সবই তাদের কাছে হালাল৷ আর গোশ্ত কিনতে গেলে হালাল নিশ্চিত না হয়ে কেনে না৷ এমন কি দাওয়াত খেতে আসলেও কোন দোকানের গোশ্ত তা জেনে নেয়৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File