আজ খৃস্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড়দিন
লিখেছেন লিখেছেন হারানো সুর ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৬:৫৩ সকাল
আজ বুধবার ২৫ ডিসেম্বর। খৃস্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড়দিন। গোটা বিশ্বের খৃস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। এ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে দেশের খৃস্টান ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ খৃস্টান এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেশবাসীসহ খৃস্ট সম্প্রদায়ের সকলকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এদিকে বড়দিন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ-র্যাবের পক্ষ থেকেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও বড়দিনকে ঘিরে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের খৃস্টান সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে উৎসব। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ছেলে-বুড়া সকলেই উদ্বেলিত। দেশের সব গীর্জা ও বড় বড় হোটেল রঙ্গিন বাতি আর ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে বড়দিনের বিশেষ সাজে। খৃস্টধর্মে বিশ্বাসীদের অনেকের ঘরেই বসানো হয়েছে প্রতীকী গোশালা। বেথেলহেমের গরীব কাঠুরের গোয়াল ঘরেই যীশু খৃস্টের জন্ম। সে কথা স্মরণ করে বাড়িতে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতেই এটি করেন যীশুর অনুসারীরা।
এই ঐতিহাসিক দিবসে আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত নবী ও রাসূল হযরত ঈসা (আঃ) ফিলিস্তিনের বিখ্যাত জেরুসালেম নগরীর কাছে বেথেলহেম পল্লীতে হযরত মরিয়ম (আঃ)-এর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তারা খৃস্ট জগতে যথাক্রমে ‘যীশুখৃস্ট’ ও ‘মাদামমেরী’ হিসেবে পরিচিত। বিশ্ব জাহানের অধিপতি আল্লাহ শানে যাল্লাযালালুহু ঈসা (আঃ)কে এই ভূধরায় পাঠিয়েছিলেন মানবজাতিকে নাস্তিক্য তথা কুফর ও শিরক এবং সর্বপ্রকার জুলুম, অনাচার, পাপ ও মিথ্যাচার থেকে ফিরিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনার উদ্দেশ্যে। কিন্তু হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় অন্যান্য নবীদের মতো হযরত ঈসা (আঃ)কেও ইহুদীসহ বেদ্বীনী শক্তির বাধা ও চক্রান্তের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
ঈসায়ী বছরের ডিসেম্বর মাসের পঁচিশতম দিবসটি সময় হিসেবে কি আসলেই বড়? না, বড় নয়। খৃস্টানদের বিশ্বাস, ঈশ্বর (আল্লাহ) তার পরিকল্পনা অনুসারে একমাত্র পুত্রকে এই দিনে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, যিনি পাপী মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য মানব শিশু হিসেবে প্রেরিত হন। এই শিশু ‘যীশুর’ জন্ম ও কর্ম পাপী মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করেছে। যারা যীশুকে বিশ্বের ত্রাণকর্তা রূপে স্বীকার করেন তারাই খৃস্টান নামে অভিহিত।
গীর্জায় ‘হলিমাস’-এর মাধ্যমে বড়দিনের অনুষ্ঠানমালার সূচনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ‘ক্রিসমাস’ ট্রি’ কেক ও পার্টি, শুভেচ্ছা বিনিময়, বিশেষ প্রার্থনা, মধ্যরাতের ‘চ্যারলা’, শিশুদের জন্য বুড়ো সান্টাক্রুজের রকমারী উপহার, ভোজ, আলোচনা সভা প্রভৃতির মধ্যদিয়ে পালিত হচ্ছে বড়দিন উৎসব। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালনে গীর্জা এলাকাসহ সারা দেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যাব রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তা গ্রহণের সাথে সাথে বড়দিন উদযাপনকালে আতশবাজি, পটকাবাজি ও বিস্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করেছে। বড়দিন উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি রেডিও এবং টিভি চ্যানেলসমূহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিকসমূহ বড়দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ প্রবন্ধ নিবন্ধ প্রকাশ করবে। রাজধানীর পাঁচতারা হোটেল রূপসী বাংলা, সোনারগাঁও, রেডিসন, ওয়াটার গার্ডেন, ওয়েস্টিন ছাড়াও গুলশান-বনানীসহ অভিজাত এলাকার বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিশেষ লাঞ্চ, ডিনার ও শিশুদের ক্রিসমাস পার্টির আয়োজন করেছে।
বিষয়: বিবিধ
১১২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন