হুসাইন (রা) এর মৃত্যুতে ইয়াযীদের উক্তি-আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া থেকে

লিখেছেন লিখেছেন ইসলামিক বই ০৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:২৬:১০ রাত





ইমাম ইবনে কাসীর (রহ) তার বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থে, ইয়াযীদ সম্মন্ধে বলেন.......

হিশাম বলেন, আমাকে আবদুল্লাহ ইবনে ইয়াযীদ ইব রুহ যানবা আল জুযামী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, আর তিনি বনূ হিময়ারের নায ইবন রাবীআ আল –জুরাশী থেকে বর্ণনা করে বলেন,

আল্লাহর শপথ! আমি যখন দামেশকে ইয়াযীদ ইবন মুআবিয়ার কাছে উপস্থিত ছিলাম তখন যুহর ইবন কায়েস আগমন করে ইয়াযীদের সাথে সাক্ষাত করল।

ইয়াযীদ তাকে বলল, কি সংবাদ নিয়ে এসেছ তুমি? বল।

তখন সে বললো, আমীরুল মুমিনীন! আপনি সুসংবাদ গ্রহন করুন। আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করেছেন। হুসায়ন ইবন আলী ইবন আবু তালীব তার পরিবারের আঠারো জন এবং অনুসারী সত্তরজনকে সাথে নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহন করলেন। তখন আমরা তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমাদের আমীর **উবায়দুল্লাহ ইবন যিয়াদের** ফয়সালা মেনে নিয়ে আত্বসমরর্পন করতে অথবা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবর্তীণ হতে বললাম। কিন্তু তারা যুদ্ধকেই বেছে নিল।

এরপর আমরা দিনের প্রারম্ভেই তাদের দিকে অগ্রসর হলম এবং চতুদিক থেকে তাদেরেকে বেষ্টন করে নিলাম। এরপর আমাদের তরবারিসমূহ তাদরে মাথার খুলির যথার্থ স্থানে পতিত হতে লাগল। তখন তারা পালাতে চাইল কিন্তু পালানোর স্থান খুজে পেল না। অবশেষে বাধ্য হয়ে টিলা ও গর্তসমূহে আশ্রয় নিয়ে আমাদের থেকে আত্মরক্ষা করতে লাগল। যেমনভাবে কবুতর বাজের থাবা থেকে আত্মরক্ষা করে।

আল্লাহর সপথ! অল্পক্ষনেই তারা জবাইকৃত পশুর কর্তিত মাংস পিন্ডে কিংবা দ্বিপ্রহরে শয়নকারী ব্যক্তির নিদ্রায় পতিত হল। এমনকি আমরা তাদের শেষজনও হত্যা করলাম। এখন তাদের ধরসমূহ মুন্ডু শূন্য, পরিধেয় ছিন্নভিন্ন আর গন্ডসমূহ ধূলিধূসরিত, সূর্যতাপ তাদেরকে দগ্ধ করছে, বায়ুপ্রবাহ তাদেরকে আঘাত করছে এবং বাজ ও শকুনের দল তাদের দেখাশোনা করছে।

বর্ণনা কারী বলেন, এ বর্ণনা শুনে ইয়াযীদের চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত হল এবং সে বলল, হুসাইনকে হত্যা করা ছাড়াই তোমাদের আনুগত্যে আমি খুশী হতাম। হায়! আল্লাহর শপথ! আমি যদি তার প্রতিপক্ষ হতাম তাহলে তাকে হত্যা করতাম না। হুসায়নকে আল্লাহ রহম করুন।এরপর যে ব্যক্তি তার মাথা নিয়ে এসেছিলো তাকে ইয়াযীদ কোন কিছুই দিলেন না। হুসায়ন (রা) এর মাথা যখন ইয়াযীদের সামনে রাখা হল, তখন সে তাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

হায়! আল্লাহর শপথ! আমি যদি তোমার প্রতিপক্ষ হতাম তাহলে তোমাকে হত্যা করতাম না।

(আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮ম খন্ড, পৃষ্টা-৩৫৭) বইটি এখানে পাবেন আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮ম খন্ড-বই





**চিন্হিত "উবায়দুল্লাহ ইবন যিয়াদ" হচ্ছেন হত্যাকারী তবে তার সাথে আরো অনেকে আছে যারা হুসাইন (রা) কে আঘাত করে ধড়াশায়ী করেছিলো-বিস্তারিত বিদায়া ওয়ান নিহায়া দেখুন।

বিষয়: বিবিধ

১৬১৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

281583
০৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৯
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : যথাসময়ে উক্তিটি উল্লেখ করলেন। অন্ধ রাফেজী ও তাদের চেলারা ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করে ইমাম হুসাইন (রাযি.) কে যেভাবে উপস্থাপন করছে; এর মাধ্যমে যে তারা ইমামের চরিত্রকেই কলঙ্কি করছেন মূর্খগুলো তা বোঝে না।
বইটার অনেক খুজছিলাম। অবশেষে পেলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। জাযাকাল্লাহ খইর ।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:১৪
225208
ইসলামিক বই লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ। ধন্যবাদ
281587
০৫ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৪৩
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৩২
225224
ইসলামিক বই লিখেছেন : Love Struck Love Struck Love Struck
281604
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৪০
কাউয়া লিখেছেন : শিয়াদের উপর আল্লাহর লানত। তারা রাসুল (স) এর সাহাবাদের গালাগালি কর। কিন্তু একথা দ্বারা ইয়াজিদ তার দায় এড়াতে পারেনা। কারন হুসাইনের রক্তের ব্যাপারে তার দায় কতটুকু তা ঘোলাটে হলেও মদিনাবাসিকে হত্যা, ধর্ষন অ নিপিড়নের দায় সে কোনভাবেই এড়াতে পারেনা। এছাড়া সে হুসাইনের হত্যাকারিদের থেকে কিসাস আদায় করেনি অথবা কোন শাস্তি পর্যত্ন দেয়নি।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৫৩
225226
ইসলামিক বই লিখেছেন : ইয়াযীদকে গালিও দেই না তারজন্য দুআও করি না। ধন্যবাদ। Happy
281619
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:১৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ খুব ভালো লাগলো
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৪৩
225367
ইসলামিক বই লিখেছেন : Love Struck Love Struck Love Struck
281621
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩১
এস এম আবু নাছের লিখেছেন : ভালো লাগা রেখে গেলুম। আল্লাহ সবাইকে সঠিক ইতিহাস জেনে তা থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দিন। আমীন।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৪৩
225368
ইসলামিক বই লিখেছেন : Love Struck Love Struck Love Struck
281628
০৬ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪১
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : চিনাদের একটা প্রবাদ আছে- সত্য তিন রকমের। এক – তোমার সত্য, দুই আমার সত্য এবং তিন, প্রকৃত সত্য।
ইবনে কাসীর অতি বিখ্যাত একজন মুহাদ্দিস, মুসলিম স্কলার। একজন সুন্নী। তার লেখায় সুন্নী উৎস থেকে উল্লেখিত প্রমাণ উপস্থাপিত হয়েছে – তা হওয়ারই কথা। কিন্তু তার জীবদ্দশা ১৩০১- ১৩৭৩।
আর কারবালার ইয়াজিদের ঘটনা ঘটেছিল অক্টোবর ১০, ৬৮২ খ্রিস্টাব্দে । মূল ঘটনার ৭০০ বছর পড়ে কোন ইতিহাস গ্রন্থ লেখা হলে আর লেখক বা বর্ণনাকারী যদি সেই শাসকের অনুসারী হয় – এটা খুব স্বাভাবিক তা শাসকের অনুকূলে যাবে। সেটা সত্য হতেই পারে না এমন নয় - তবে যদি গবেষণার সুযোগ থাকে, ভিন্ন সুত্র বা উৎস থেকেও কিছু প্রমাণ দেখা উচিত। কারণ এটা একটা সত্য যে সাধারণত ইতিহাস বিজয়ীর হাতেই লেখা হয়, আর বিজয়ীর ইতিহাস বিজয়ীর দোষ স্খলনের চেষ্টা করতেই পারে, কিন্তু কখনও পরাজিতের সুখ্যাতি বর্ণনা করে না। বাংলাদেশের ইতিহাস আমরা অনেকেই জানি – প্রত্যক্ষদর্শী অনেক মানুষ এখনও জীবিত; তারপরেও আওয়ামীলীগের বোদ্ধাদের হাতে লিখিত ইতিহাসের সত্যতা কি গ্রহণযোগ্য? মানতে না চাইলে আওয়ামীলীগের রচিত ইতিহাসের বিরুদ্ধে কিছু লিখে দেখুন - কি ঘটে! ইয়াজিদের বিরুদ্ধে কিছু লিখে, টিকে থাকার সামর্থ কি ছিল সে যুগের মানুষের ? মদীনার মানুষ উমাইয়াদের বশ্যতা সহজে স্বীকার করে নি, তার জন্য ইয়াজিদের বাহিনী কি পদক্ষেপ নিয়েছিল - কি ঘটেছিল – পড়ে দেখুন।
তবে সে জামানার লোকদের ভুল ক্রুটি বিবেচনা করা আমার সীমার বাইরে। আমি শুধু একজন ‘ পাঠক হিসেবে,আবেগ বাইরে রেখে - অধ্যয়নের মাধ্যমে সত্য অনুসন্ধান করছি। এক পক্ষ নিজেদেরকে ‘ অতিরিক্ত পরিষ্কার- অন্য পক্ষ নোংরা, অন্য পক্ষ একই রকম নিজেদের সাফাই- দোষ যা তা অন্য গ্রুপের – বললে একটু অস্বস্তি বোধ করি। কেন ভাবি না সে যুগের মানুষ - তারাও অনেকেই আমাদের মত মানুষ ছিল, তারাও শয়তানের ধোঁকার আর ক্ষমতার লোভের বাইরে ছিলেন না – অনেকেই নিজেদের সন্তান স্নেহে অন্ধ হতে পারতেন। নয় কি? হয়তো অনেকে এর বিরুদ্ধে ও ছিলেন, এর বেশি কিছু নয়। ইচ্ছে করলেই তো আর ইতিহাস পরিবর্তন করা যাবে না, বরং ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী ট্রাজেডি যেন না ঘটে এ পদক্ষেপ নিতে পারলে তাই সর্বোত্তম ।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:০৫
225263
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ভাই এই ইক্যুয়েশন ধরলে তো পুরো হাদিস শাস্ত্রই বাদ দিতে হয়! কারণ হাদিসের প্রখ্যাত ও প্রধান কিতাবগুলো রাসূলের (সাঃ) ওফাতের দুই শতক ও তার পর লেখা। আর এ জামানায় তাহলে হাদীস বর্ণনাও বাদ দিতে হয়।
০৬ নভেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৭
225275
ইসলামিক বই লিখেছেন : শিয়ারা ইবনে কাসির (রহ) কে বিশ্বাস করে না এটা সর্বজন জানা বিষয়। আর শিয়ারা কাফের সেটাও সর্বজন জান বিষয়। ধন্যবাদ@তিমিরমুস্তফা
ইয়াযীদকে গালিও দেই না তারজন্য দুআও করি না। Happy
285720
১৯ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৩৯
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ইয়াজিদ ঈমামকে হত্যার নির্দেশ না দিলেও দায় এড়াতে পারেনা। আর তিনি সাহাবী নয় তাই সমালোচনার যোগ্য। তার পিতা এবং হযরত আলীর(রাঃ) রাজনৈতিক বিরোধ ছিল কিন্তু সেটার রূপ ইয়াজিদের মত ছিলনা। মুয়াবিয়াকে ক্রিষ্টানরা বলেছিল আপনি চালিয়ে যান আমরা আপনার সাথে আছি। মুয়াবিয়া(রাঃ০বলেছিলেন-আমাদের ভায়ে ভায়ে বিরোধ মিটে গেলে আমরা সম্মিলিতভাবে তোমাদেরকে আক্রমন করব।.....সাহাবীদের সমালোচনা করা যাবেনা,যদিও তাদের মধ্যে পরস্পর কিছু মত পার্তক্য ছিল
১৯ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:০৮
229162
ইসলামিক বই লিখেছেন : ইয়াযীদকে গালিও দেই না তারজন্য দুআও করি না। তবে জেনে রাখাবেন হুসাইন (রা) কে অনেক বেশি ভালো বাসি- ইমাম ইবনে তাইমিয়া

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File