হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ -১ম খন্ড (বই)
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামিক বই ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:৫৭:২৩ সকাল
সম্মানিত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রহ)
অনুবাদ: অধ্যাপক আখতার ফারুক
প্রকাশনা: রশিদ বুক হাউজ
লিংক: সরাসরি ডাউনলোড
======
বইটি খুব-ই সুন্দর সংগ্রহে রাখুন এবং পড়ুন, পড়ার বিকল্প নাই, উপকার পাবেন-ই ইনশাআল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
২৮৮০ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ।
এর মানে আপনারা কেউ বইটা ডাউনলোড করে পড়েন নাই
এটা ধরার জন্য আমি এই বুদ্ধি করেছিলাম।
@আফরামণি ম্নি ম্নি - এন্ড পবিত্র আপ্পুনি - এখানে দেখেন, আঙ্গেল ভাই কেমনে হয়
"""শুধু সংগ্রহে রাখলেই উপকার পাওয়া যাবে !ভাল তো পড়তে হবে !"""
শিক্ষাকাল: ছোট বেলার আচার আচরণেই তার মাঝে ভবিষ্যত মাহাত্নের আভাস পাওয়া যায়। জযবে লতীফ নামক কিতাবে তিনি নিজেই বর্ণনা করেন যে, যখন আমার পাচ বছর বয়স, তখনই আমাকে মক্তবে ভর্তি করে দেওয়া হয়, যখন আমার বয়স সাত হয়, তখন আমার পিতা আমাকে নামায পড়ার আদেশ দেন। আর এই সময়েই আমি হিফজ শেষ করি এবং পনের বছর বয়সেই আমি তাফসীর, হাদীস, ফিকাহ,উসুলে ফিকাহ, তর্কশাস্ত্র, কালাম, চিকিৎসা বিজ্ঞান, জ্যামিতি ইত্যাদি বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করি। আমার বয়স যখন চৌদ্দে পৌছে তখন আমি আমার পিতার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করি এবং এর পরই আমি বিবাহ করি। আমার বিবাহের মাত্র দুই বছর পরই আমার শ্রদ্ধেয় পিতা এই পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে মহান প্রভুর ডাকে সারা দেন। انا لله وانا اليه راجعون
কর্ম জীবন: হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. স্বীয় পিতার ইন্তেকালের পর মাদ্রাসায়ে রহীমিয়াতে অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হন। এ সময় তিনি দীর্ঘ বার বছর তার পরিবার ও সমাজকে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সমাজের অনেক উথান-পতন দেখার পর উপলব্দি করতে পেরেছিলেন যে, মুসলিম জাতিকে সমাজের চলমান গোমরাহী থেকে বাচাতে হলে তিনটি বিষয় একান্ত প্রয়োজন।
১। যুক্তি দর্শন: শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. বর্ণনা করেন যে, তৎকালে মুসলমানেরা গ্রীক দর্শনের প্রতি ঝুকে পরেছিল। আর এই দর্শনের মূল ভিত্তি হল তর্কশাস্ত্র। যার কারণে মুসলিম সমাজে তখন অনেক প্রকার ফিতনা-ফাসাদের অনুপ্রবেশ ঘটে। সুতরাং সমাজকে এহেন অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হলে প্রথমেই যুক্তি-দর্শন শিক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন।
২। আধ্যাত্নিক দর্শন বা তত্ত্বদর্শন: সে যুগের মুসলমানেরা কুরআন-সুন্নাহকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আধ্যাত্নিক সাধনাকে সাফল্যের চাবিকাঠি মনে করত। তাদের অবস্থা এমন ছিল যে, সূফী-সাধকদের অনুমোদন ছাড়া তারা কোন কিছুকেই সত্য বলে বিশ্বাস করতো না। যার কারণে যুগের প্রেক্ষাপটে আধ্যাত্নিক সাধনা তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থার একটি অংশ বলে বিবেচিত হত।
৩। ইলম বির রিওয়ায়াহ: অর্থাৎ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জন হয়েছিল, এর মধ্যে কুরআনই প্রধান।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস রহ. বর্ণনা করেন যে, তৎকালীন যুগের শিক্ষিত ব্যক্তিরা উক্ত তিনটি বিষয় ছাড়াও তারা আত্নকেন্দ্রিকতার রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা কখনো কোন প্রকার জটিল সমস্যার সম্মুখীন হলে কেউ কারো সাথে কোন প্রকার আলাপ আলোচনার প্রয়োজন মনে করতো না। বরং ছোট বড় সকলেই নিজ নিজ ধারণা অনুযায়ী শরীয়ত সংক্রান্ত বিষয়ে কোন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতো। ফলে এ অবস্থার প্রেক্ষিতে তাকে উপযুক্ত তিনটি বিষয়ের প্রতি মনোনিবেশ করতে হয়েছে। বার বছর যাবৎ আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণার পর সংস্কার দ্বারা তার বিপ্লবী আন্দোলনের কর্মসূচী হিসেবে গ্রহণ করেন এবং এব্যাপারে তিনি মৌলিকভাবে দুটি বিষয়ের প্রতি অধিক গ্ররুত্বারোপ করেন।
১। মানুষের ব্যবহারিক জীবন সম্পর্কে কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকৃত পক্ষে কুরআনের অলৌকিকত্ব। পবিত্র কুরআনের এ ব্যবহারিক মূল্যায়নের প্রতিষ্ঠাকে তিনি তার শিক্ষা সংস্কারের বুনিয়াদ রূপে গ্রহণ করেছিলেন।
২। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ভারসাম্যের অভাবকে সমাজ-রাষ্ট ও জাতীয় জীবনের নৈতিক ব্যবহারিক বিপর্যয় ও বিশৃংখলার কারণ বলে তিনি নির্দেশ করেছিলেন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস রহ. এই দুইটি বস্তুকে সামনে রেখেই তার আন্দোলনের পথে যাত্রা শুরু করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, যদি কুরআনের অলৌকিকত্ব একমাত্র তার ভাষাগত অলংকারেই সীমাবদ্ধ হয়, সেক্ষেত্রে কেবল নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক ব্যতীত আর সকলেই করআনের মাধুর্য থেকে বঞ্চিত থাকবে। তাই তিনি কুরআনের ব্যবহারিক দিক ও অর্থনৈতিক সমতাকেও তার সংস্কারমূলক কর্মসূচীর অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন। সাধারণত নৈতিক জীবনবোধই হচ্ছে আধ্যাত্নিকতার ভিত্তি। আর নৈতিকতার বিকাশতো তখনই ঘটবে যখন অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া যাবে। কিন্তু মানব জীবনের সাথে অর্থের সম্পর্কটা এতটা উতপ্রোতভাবে জরিত এটা কেউ কোনদিন উপলব্দিও করতে পারেনি। যার ফলে অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমাদের রাষ্ট্র হয়েছে সার শূণ্য। আধ্যাত্নিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরা আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকাকেই জীবনের জন্য বড় সাফল্য মনে করত। পক্ষান্তরে শাহ ওয়ালি মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. এই বাস্তবতাকে হকের নিরিখে বিচার করেছেন। তার লিখিত গ্রন্থ “হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা” তে তিনি এ বিষয়ের প্রতি বার বার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন। মোট কথা ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রিয় জীবন পর্যন্ত সবখানেই অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিধান একান্ত জরুরী। কেননা মানুষতো তখনই নীতি, আদর্শের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে যখন সে জীবীকা সংস্থানের দুশ্চিন্তা থেকে অবকাশ লাভ করে। নচেৎ মানব জীবন পশুজীবনে পরিণত হয়ে যাবে। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস রহ. এই সত্যকে উপলব্দি করতে পেরে মুসলিম মিল্লাতকে এ ঘোর অমানিশা থেকে মুক্ত করার লক্ষে এ বিষয়ে সুষ্ঠ ও তত্ত্বমূলম গবেষণা করার জন্য তৈরী হয়ে যান। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন ছিল হাদীস শাস্ত্রে পূর্ণ পান্ডিত্য অর্জন করা। অথচ দিল্লিতে তখনও আশানুরুপ হাদীস গ্রন্থ ছিল না বিধায় তাকে হিজাযে সফর করতে হল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন