ওযুর বিধান
লিখেছেন লিখেছেন ফিরেদেখা ১৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০৮:৪২:৪২ রাত
ওযুর বিধান
আল্লাহ ইরশাদ করেন-
يقول الله تعالى "يا أيها الذين آمنوا إذا قمتم إلى الصلاة فاغسلوا وجوهكم وأيديكم إلى المرافق وامسحوا برءوسكم وأرجلكم إلى الكعبين "(المائدة :6)
অর্থাৎ-“হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা নামাযের উদ্দেশ্যে দন্ডায়মান হও তখন (নামাযের পূর্বে)তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতদ্বয় কে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও,আর মাথা মাসেহ কর এবং পা দ্বয় কে টাখনু পর্যন্ত ধৌত কর”
(সূরা মা’য়িদা :৬)
কুরআনের এই আয়াত টি নামাজের জন্য ওযু কে ওয়াজিব করেছেন এবং ওযুর মধ্যে কোন-কোন অঙ্গ গুলি ধৌত ও মাসেহ করা ওয়াজিব,এবং অঙ্গ-প্রতঙ্গ গুলোর সীমা নির্ধারন করেছেন,অত:পর রসূলুল্লাহ (সওযুর পদ্ধতি কথা বা বলা ও কর্মের মাধ্যমে পুর্ণাঙ্গ ভাবে বর্ণনা করেছেন ।
ওযুর ফজিলত:
রসূলুল্লাহ (স ইরশাদ করেন-
عن أبي هريرة رضي الله عنه ,أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال"إذا توضأ العبد المسلم أو المؤمن فغسل وجهه خرج من وجهه كل خطيئة نظر إليها بعينه مع آخر قطر الماء فإذا غسل يديه خرج من يديه كل خطيئة كان بطشتها يداه مع الماء أو مع آخر قطر الماء فإذا غسل رجليه خرجت كل خطيئة مشتها رجلاه مع الماء أو مع آخر قطر الماء حتى يخرج نقيا من الذنوب "(صحيح مسلم في كتاب الطهارة ,باب السواك برقم :255)
অর্থাৎ-
হযরত আবু হুরায়রা (রথেকে বর্ণিত-আল্লাহর রসূল (সইরশাদ করেন “যখন কোন মুসলিম বা মু’মিন ব্যাক্তি ওযু করত,মুখমন্ডল ধৌত করে,তার মুখমন্ডল থেকে ঐ সকল গুনাহ, পানির শেষ ফোটার সাথে বের হয়ে যাবে যা তার চখ্খুর দ্বারা করেছে ।আর যখন হস্তদ্বয় ধৌত করবে,তার হাত থেকে সকল গুনাহ যা তার দিয়ে ধরার কারনে হয়েছে,পানির সাথে বা পানির শেষ বিন্দুর সাথে ঝরে পরে যাবে ।আর যখন পা ধৌত করবে,তখন সে সব গুনাহ যা পা দিয়ে হাটার দরুন হয়েছে,তা পানির সাথে ঝড়ে পড়বে এমন কি ব্যাক্তি গুনাহ থেকে পূত ও পবিত্র হয়ে যাবে। (ছহীহ মুসলীম শরীফ,কিতাবুততাহারা,মিসওয়াকের অধ্যায়,হাদীস নং-২৫৫)
-হে মুসলমানগণ জেনে রাখ !যে ওযুর শর্ত,ফরয ও সুন্নাত রয়েছে।
সম্ভব অনুযায়ী ওযুর শর্ত ও ফরয অবশ্যই আদায় করতে হবে ,যাতে ওযু পরিশুদ্ধ হয়।
আর সুন্নাত হল-ওযু কে পরিপূর্ণতা দান কারী,আর এতে রয়েছে অধিক সওয়াব,আর সুন্নাত ছেড়ে দিলে ওযুর শুদ্ধতায় কোন সমস্যা হবে না ।
ওযুর শর্তসমুহ :
১-মুসলমান হওয়া,অতএব,কাফেরদের ওযু শুদ্ধ হবে না ।
২-ঙ্ঘান থাকা,পাগলের ওযু বৈধ হবে না ।
৩-নাবালক শিশু যে পার্থক্য করতে পারে বা বুঝে ।আর যে শিশু পার্থক্য করতে পারেনা বা বুঝে ও না তার ওযু বৈধ হবে না ।
৪-নিয়্যাত করা ,আর যে ব্যাক্তি ওযুর নিয়্যাত করবে না তার ওযু শুদ্ধ হবে না,যেমন কেহ শরীর ঠান্ডা হওয়া বা ময়লা,নাপাকী দূর করার জন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গ ধৌত করার নিয়্যাত করে ।
৫-পানি পবিত্র হওয়া।
৬-শরীর বা চামরায় পানি পৌছাতে বাধা দানকারী কে দূর করা ।
ওযুর ফরজ সমূহ:
১-পরিপূর্ণভাবে মুখমন্ডল ধৌত করা ।গড়গড়া করা ও নাকে পানি দেওয়া ।
২-কনুই সহ হস্তদ্বয় ধৌত করা ।
৩-সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করা,কান ও মাসেহ করা ।
৪-পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধৌত করা ।
৫-ওযুর মধ্যে ধারাবাহিকতা রখ্খা করা ।
৬-মাওয়ালাত (এক অঙ্গ ধোয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য অঙ্গ ধৌত করা ।
ওযুর সুন্নাত সমূহ:
১-বিসমিল্লাহ বলা ।
২-মেসওয়াক করা ।
৩-ওযুর শুরুতে দুই হাতের কব্জিপর্যন্ত তিন বার ধৌত করা ।
৪-মুখমন্ডল ধোয়ার পূর্বে কুলি করা ও নাকে পানি দিয়ে শুরু করা ।
৫-চেহারা ধৌত করার সময় ঘণ দাড়ি খেলাল করা ।
৬-মাথা মাসেহ করা ।
৭-ডান হাত পা থেকে ধোয়া শুরু করা,বাম দিক বা বাম হাত পা ধৌত করার পূর্বে ।
৮-একাধিক বা তিন বার ধৌত করা চেহারা,হাতদ্বয় ও পা ।
৯-ওযুর শেষে এই দোয়া পাঠ করা –
"أشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له أن محمدا عبده ورسوله اللهم اجعلني من التوابين واجعلني من المتطهرين "
ওযু ভঙ্গের কারন:
১-পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া ।
২-ঘুম ইত্যাদির দ্বারা ঙ্ঘান চলে যাওয়া ।
৩-পর্দা ব্যতিত লজ্জাস্হান স্পর্শ করা চাই পিছন বা সামনের লজ্জাস্হান হোক ।
৪-উটের গোস্ত খাওয়া ।
৫-ইসলাম ছেড়ে মুরতাদ হয়ে যাওয়া ।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন