পিতার জীবিতাবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুত্রের সন্তানাদির অধিকার
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ জিল্লুর রহমান ১৯ অক্টোবর, ২০১৩, ১০:৪৭:৪৩ রাত
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْمِ
পিতার জীবিতাবস্থায় মৃত্যুবরণকারী পুত্রের সন্তানাদির অধিকার
দাদার সম্পদে নাতি নাতিনের অধিকার- এ বিষয়টি ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে সবচেয়ে বিতর্কিত ও আলোচিত বিষয়। যদি কোন লোক তার পিতার জীবদ্দশায় মারা যায়, তাহলে তার সন্তানগণ তার সম্পদে তো উত্তরাধিকারী হবে কিন্তু তার পিতার মৃত্যুর পরে পিতার সম্পদে তার সন্তানগণ, যারা তার পিতার নাতি নাতিন হন, উত্তরাধিকারী গণ্য হবেন কি না? কুরআন, হাদীছ, মানবতাবাদ, মানুষের স্বভাবজাত ইনসাফবোধ ইত্যাদি বিষয়ের আলোকে বিষয়টি পর্যালোচনার দাবী রাখে। সন্তানগণ তাদের জন্ম থেকে নিয়ে তাদের শৈশব ও কৈশোর কাল পর্যন্ত অভিভাবকের উপর নির্ভরশীল থাকেন। তাদের প্রতিপালন, তাদের শিক্ষাদীক্ষা, তাদের চিকিৎসা এমনকি তাদের বিয়ে শাদী পর্যন্ত অভিভাবকের উপর নির্ভর করে। পিতা জীবিত থাকলে তার উপর এ সকল দায়িত্ব বর্তায়। কিন্তু কোন কারণে যদি ছোট সন্তান রেখে পিতা মাতা মারা যান, তাহলে সে সন্তানের দুর্দশার সীমা থাকে না। অনাথ-এতীম এ শিশুদের অসহায় অবস্থায় দাদা, চাচা কিংবা নানা মামাগণ এগিয়ে না আসলে তাদের বাঁচা মরা সমান হয়ে যায়। জালেম লোকেরা এতীম শিশুদের এ অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের সহায় সম্পদ, জমি জিরাত কব্জা করার চেষ্টা করে। আমাদের প্রিয় নবী সা. ছোট বেলায় এতীম হওয়ার কারণে তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর জিম্মাদারী গ্রহন করেছিলেন। পরে দাদার মৃত্যু হলে চাচা আবু তালিব শক্তহাতে শিশু মুহাম্মদ সা. এর প্রতিপালনের দায়িত্ব নেন। চাচার শেল্টারের কারণে নবুয়াত প্রাপ্তির পরে সমগ্র মক্কাবাসী তাঁর দুশমনে রূপান্তরিত হলেও কাফিরেরা মহানবী সা. এর গায়ে হাত তুলতে সাহস পায়নি। দাদা চাচার গুরুত্ব ও দায়িত্ব এখানেই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ কারণেই দাদার সাথে সাথে চাচাকেও পিতা নামে অভিহিত করে প্রকারান্তরে এ দায়িত্ববোধের কথাই মানব জাতিকে জানিয়ে দিলেন। আল্লাহ বলেন: أَمْ كُنْتُمْ شُهَدَاءَ إِذْ حَضَرَ يَعْقُوْبَ الْمَوْتُ إِذْ قَالَ لِبَنِيْهِ مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ بَعْدِيْ قَالُوْا نَعْبُدُ إِلَهَكَ وَإِلَهَ آَبَائِكَ إِبْرَاهِيْمَ وَإِسْمَاعِيْلَ وَإِسْحَاقَ إِلَهًا وَاحِدًا وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُوْنَ “তোমরা কি তখন হাজির ছিলে যখন ইয়াকুবের মৃত্যুর সময় হল, যখন সে তার সন্তানদেরকে বলল: আমার পরে তোমরা কার ইবাদত করবে? তখন তারা বলল: আমরা আপনার প্রভুর ও আপনার পিতাগণ-ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের প্রভুর ইবাদত করব। যে প্রভু একজন আর আমরা তার অনুগত।” (সূরা বাকারা-১৩৩)। এ আয়াতে দাদার সাথে সাথে চাচাকেও পিতা বলে অভিহিত করা হয়েছে। কারণ হযরত ইয়াকুব আ. এর পিতার নাম ইসহাক আ. ও চাচার নাম ইসমাঈল আ.। আর অন্য আয়াতে দাদা নানাকে পিতা বলে অভিহিত করে আল্লাহ বলেন: يَا بَنِيْ آَدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ “হে আদমের সন্তান, তোমাদেরকে যেন শয়তান বিভ্রান্ত না করে; যেমন তোমাদের পিতামাতাকে সে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিল।” (সূরা আল আ’রাফ-২৭)। এ আয়াত থেকে আমরা জানতে পারলাম যে দাদা দাদী এবং নানা নানীও আদি পিতামাতা বলে গণ্য। আর সবাই তাদেরকে এক বাক্যে উর্দ্ধতন পিতামাতা বলে স্বীকারও করে থাকেন। এখন প্রশ্ন হল এ উর্দ্ধতন পিতামাতার সম্পদে নাতি-পুতির হক আছে কি নেই ? দাদা দাদী, নানা নানী মারা গেলে ছেলে বা মেয়ের তরফের নাতি নসা সম্পদ পায় কি না? আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষনা করেন: يُوْصِيْكُمُ اللهُ فِيْ أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ “আল্লাহ তোমাদের আওলাদ বা সন্তানদের ব্যাপারে নির্দেশনা দিচ্ছেন: একজন পুত্র সন্তান পাবে দু’জন কন্যা সন্তানের সমান হিস্সা।” (সূরা নিসা-১১)। আমরা আগের আয়াতে দেখেছি যে, নাতি পুতি আওলাদের অন্তর্ভুক্ত। আর সেই আওলাদের ব্যাপারে এ আয়াতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, একজন পুত্র সন্তান ততটুকু সম্পদ পাবে, দু’জন কন্যা সন্তান সম্মিলিতভাবে যতটুকু সম্পদ পায়। সুতরাং এ আয়াতদ্বয়ের মাধ্যমে প্রমাণীত হল যে, নাতি-পুতি সম্পদ পায়। তাদেরকে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এখন যদি অপর কোন নির্দেশনার মাধ্যমে তাদেরকে বাদ দেয়ার কোন দলীল পাওয়া যায়, তাহলেই কেবল তাদেরকে বাদ দেয়া যাবে। যেহেতু এরকম কোন দলীল পাওয়া যায়নি, সুতরাং তাদেরকে বাদ দেয়ার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। যেমন মনে করুণ কোন সন্তান অমুসলিম হলে কিংবা পিতামাতার হত্যাকারী হলেও উপরের নির্দেশনা মোতাবেক তারাও উত্তরাধিকারী পরিগণিত হয়ে সম্পদ পাওয়ার কথা। কিন্তু যেহেতু রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: لاَ يَرِثُ الْمُسْلِمُ الْكَافِرَ وَلاَ يَرِثُ الْكَافِرُ الْمُسْلِمَ ‘একজন মুসলমান কোন অমুসলিমের সম্পদে উত্তরাধিকারী হবে না এবং কোন অমুসলিম কোন মুসলমানের সম্পদে উত্তরাধিকারী হবে না।’ (মুসলিম, বুখারী, তিরমিযী, আবু দাঊদ, ইবনু মাজাহ)১। এবং তিনি আরও বলেছেন: اَلْقَاتِلُ لاَ يَرِثُ ‘হত্যাকারী সম্পদে উত্তরাধিকারী হবে না।’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)২, সেহেতু এ হাদীছ দু’টির ভিত্তিতে কাফির ও হত্যাকারী সন্তানকে উত্তরাধিকারীর তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। যদি এ হাদীছ দু’টি না থাকত, তাহলে তারাও অমুসলিম ও হত্যাকারী হওয়া সত্বেও সম্পদে হিস্সা পেত।
আলোচনা ও পর্যালোচনা:
উলামায়ে কেরামের অনেকে মনে করেন যে, দাদার জীবিতাবস্থায় পিতা মারা গিয়ে থাকলে সে পিতার সন্তানগণ দাদার মৃত্যুর পরে সম্পদে হিস্সা পাবেন না যদি মৃত দাদার কোন ছেলে জীবিত থাকেন। তবে যদি সে দাদার মৃত্যুর সময় শুধু মেয়ে উত্তরাধিকারী থাকেন, তাহলে সে এক বা একাধিক মেয়ে তাদের জন্য নির্ধারিত হিস্সা নেয়ার পরে যদি সম্পদ অবশিষ্ট থাকে, তাহলে সে অবশিষ্ট সম্পদ নাতি পুতি পাবে। তারা মেয়েদেরকে যবীল ফুরূজ গ্র“পের অন্তর্ভুক্ত উত্তরাধিকারী মনে করেন। তারা বলেন, যেহেতু মেয়েরা অর্ধেক বা দু’তৃতীয়াংশ পান, তাই অবশিষ্ট সম্পদ নাতি থাকলে সে পাবে। যদি একজন মেয়ে ও একজন ছেলের তরফের নাতিন থাকে, তাহলে মেয়ে অর্ধেক নেয়ার পরে এক ষষ্টাংশ নাতিন পাবে, যাতে করে দু’জনের সম্মিলিত হিস্সা মোট দু’তৃতীয়াংশ হয়। আর যদি একাধিক মেয়ে থাকে তাহলে ছেলের তরফের নাতিনেরা কিছুই পাবে না। কারণ মেয়েদের হিস্সা সর্বোচ্চ দু’তৃতীয়াংশ। তবে যদি নাতিনের সাথে একজন নাতিও থাকে, তাহলে মেয়েদের জন্য নির্ধারিত হিস্সার পরে অবশিষ্ট অংশ নাতি ও নাতিন পাবে। তারা বলেন, তখন নাতিন, নাতি থাকার কারণে তার সাথে যৌথভাবে আছাবা গণ্য হবে। কিন্তু কোন ছেলে জীবিত থাকলে নাতি নাতিন কিছুই পাবে না। তাদের বক্তব্য হল- ছেলে আছাবা। সে একা সব সম্পদ লাভ করার অধিকার রাখে। এ কারণে কোন ছেলে থাকলে অন্য কোন নাতি-পুতি কিছুই পাবে না। তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে তারা নিম্নোক্ত প্রমাণ পেশ করেন:
১. তারা মনে করেন যে, যদিও নাতি পুতি সন্তান হিসাবে গণ্য হন কিন্তু তা রূপক বা ‘মজাযী’ অর্থে। ‘হাকিকী’ অর্থে আপন ‘ছুলবী’ সন্তান হলেন প্রকৃত সন্তান। ছুলবী বলতে নিজের সন্তান বুঝায় যেখানে মধ্যখানে অন্য সন্তান ঢুকে পড়েনি। সে কারণে সন্তানের সন্তান মজাযী অর্থে সন্তান হিসাবে গণ্য হন। আর হাকীকী ও মজাযী অর্থ একসাথে গ্রহন করা জায়েয নয়। এ কারণে ছুলবী ছেলে বর্তমান থাকলে মজাযী ছেলে অর্থাৎ নাতি-পুতি কিছুই পাবে না।
২. তাদের আরেকটি যুক্তি হল এই যে, পিতা যেমন পিতা, দাদাও তেমনি পিতা। পিতার বর্তমানে দাদা যেমন উত্তরাধিকারী গণ্য হন না, তেমনি ছেলের বর্তমানে নাতি-পুতি উত্তরাধিকারী গণ্য হতে পারেন না। তবে কন্যা সন্তানের সাথে নাতিপুতি পাবে। কারণ কন্যা সন্তান একা সকল সম্পদ লাভ করতে পারে না। এ কারণে তাদের নির্ধারিত হিস্সার পরে যে সম্পদ অবশিষ্ট থাকবে, তা নাতিপুতি আছাবা হয়ে লাভ করবে। মেয়েরা সকল সম্পদ পায় না এ কারণেই কেবল নাতি-পুতি অবশিষ্ট সম্পদ পাবে।
৩. তাদের আরেকটি যুক্তি হল: উত্তরাধিকার আইনে অধিকতর কাছের আত্মীয় তুলনামূলক দূরের আত্মীয়কে বঞ্চিত বা বহির্ভুত করে । আপন সন্তান যেহেতু সন্তানের সন্তান অর্থাৎ নাতি-পুতির চেয়ে নিকটতর, তাই সে তুলনামূলক দূরের সন্তান নাতিপুতিকে বঞ্চিতও বহির্ভুত করবে।
৪. তাদের আরেকটি যুক্তি হল হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত হাদীছ। সে হাদীছে এসেছে:
عَنْ اَبُوْقَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ هُذَيْلَ بْنَ شُرَحْبِيْلَ يَقُوْلُ سُئِلَ اَبُوْ مُوْسَى عَنْ اِبْنَةٍ وَاِبْنَةِ اِبْنٍ وَاُخْتٍ فَقَالَ لِلاِبْنَةِ النِّصْفُ وَلِلأُخْتِ النِّصْفُ وَائْتِ اِبْنَ مَسْعُوْدٍ فَسَيُتَابِعُنِى فَسُئِلَ اِبْنُ مَسْعُوْدٍ وَاُخْبِرَ بِقَوْلِ اَبِىْ مُوْسَى فَقَالَ لَقَدْ ضَلَلْتُ اِذَنْ وَمَا اَنَا مِنَ الْمُهْتَدِيْنَ أَقْضِيْ فِيْهَا بِمَا قَضَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِلاِبْنَةِ النِّصْفُ وَلاِبْنَةِ اْلاِبْنِ السُّدُسُ تَكْمِلَةَ الثُّلُثَيْنِ وَمَا بَقِيَ فَلِلأُخْتِ فَأَتَيْنَا اَباَمُوْسَيْ فَاَخْبَرْنَاهُ بِقَوْلِ اِبْنِ مَسْعُوْدٍ فَقَالَ لاَ تَسْأَلُوْنِيْ مَا دَامَ هَذَا الْحَبْرُ فِيْكُمْ
‘হযরত আবু কায়েস রাহ. বলেন: আমি হুযাইল বিন শুরাহবীল রাহ. কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, হযরত আবু মূসা আশআরী রা. কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, যদি একজন মেয়ে, একজন ছেলের তরফের নাতিন ও একজন বোন থাকেন, তাহলে কে কত হিস্সা করে পাবে ? তখন তিনি বললেন: মেয়ে অর্ধাংশ পাবে আর বাকী অর্ধেক পাবে বোন। তুমি হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. এর কাছে গিয়ে দেখতে পার, তিনিও আমার অনুসরণ করবেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. কে জিজ্ঞাসা করলে ও আবু মুসা রা. এর মতামতের কথা জানালে তিনি বললেন: ‘আমি সঠিক পথের দিশা না পেলে পথভ্রষ্ট হয়ে যেতাম’, আমি এমন রায় দেব যে রকম রায় দিয়েছিলেন রাসূলুল্লাহ সা.। মেয়ে অর্ধাংশ পাবে, নাতিন পাবে এক ষষ্টাংশ যাতে করে দু’জনের হিস্সা মোট দু’তৃতীয়াংশ হয়। আর বাকীটুকু পাবে বোন। আমরা হযরত আবু মূসা আশআরী রা. এর কাছে ফেরত গিয়ে তার কাছে ইবনে মাসউদ রা. এর রায়ের কথা জানালে তিনি বললেন: ‘এ ‘পন্ডিত’ যতদিন আছে, ততদিন আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা কর না। (বুখারী, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মুসনাদু আহমদ, দারিমী)৩।
৫. তাদের সর্বশেষ যুক্তি হল ‘ইজমায়ে উম্মাত’। মুসলিম উম্মার সকল আলেম এ ব্যাপারে একমত যে, আপন ছেলে থাকলে মৃত ছেলের তরফের নাতি পুতি কিছুই পাবে না। আর ইজমা হল ইসলামের একটি বড় স্থম্ভ।
উপরে বর্ণিত যুক্তিগুলোর ভিত্তিতে উলামায়ে কেরাম নাতিপুতিকে দাদা, দাদী, নানা, নানীর সম্পদ থেকে বঞ্চিত বলে ঘোষনা করেন।
আমরা উলামায়ে কেরামের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ রেখেই বলব- তাদের সকল দাবী দালিলিক ভিত্তি ও যৌক্তিকতার দিক থেকে দূর্বল ও ভিত্তিহীন। আসুন আমরা তাদের দাবীর অসারতা ও যুক্তিহীনতা প্রমাণ করি।
১. আপন ছুলবী সন্তান হলেন হাকিকী অর্থে সন্তান আর নাতি পুতি মজাযী অর্থে সন্তান বলে তাদের বক্তব্যটি ত্র“টিপূর্ণ। প্রকৃত অর্থে আপন সন্তান ও সন্তানের সন্তান হল হাকিকী অর্থে ‘ছুলবী’ সন্তান আর ভাতিজা ভাতিঝি ‘মজাযী’ অর্থে সন্তান বলে পরিগণিত হন। যেমন আল্লাহ বলেন: وَحَلاَئِلُ اَبْنَائِكُمُ الَّذِيْنَ مِنْ اَصْلاَبِكُمْ “আর তোমাদের ছেলেদের স্ত্রীগণকে বিয়ে করা হারাম করা হয়েছে যে ছেলেরা তোমাদের ছুলবী ছেলে।” (সূরা নিসা- ২৩)। এ আয়াতে ছুলবী শব্দ দ্বারা আপন ঔরসজাত সকল সন্তানের কথা বুঝানো হয়েছে। এ কারণেই ছেলের বা মেয়ের তরফের নাতির তালাক প্রাপ্তা স্ত্রীকে বিয়ে করা দাদা নানার উপর জায়েয নয়। আর ভাতিজা ভাতিঝিদেরকে মজাযী অর্থে সন্তান বলা হয় যার উদাহরণ সূরা বাকারার ১৩৩ নং আয়াত যা উপরে বর্ণিত হয়েছে। কারণ চাচা পিতা হলে ভাতিজা তো ছেলে হয়। এই ছেলে বলতে রূপক অর্থে ছেলে বুঝানো হয়েছে। ‘হাকিকী ও মজাযী অর্থ এক সাথে গ্রহন করা জায়েয নয়’ বলে তাদের বক্তব্যও সঠিক নয়। কারণ সূরা বাকারার ১৩৩ নং আয়াতে আল্লাহ হাকিকী ও মজাযী অর্থ এক সাথেই গ্রহন করেছেন।
২. ‘ছেলে আছাবা হওয়ার কারণে সে একাই সব সম্পদ পাবে, নাতি পুতি পাবে না। আর মেয়েরা একা সকল সম্পদ লাভ করতে পারে না এ কারণে মেয়ের সাথে নাতি নাতিন পেতে পারে।’ তাদের এ দাবী কুরআনের সিদ্ধান্তের খেলাফ। আল্লাহ বলেন: وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ مِمَّا تَرَكَ الْوَالِدَانِ وَالْأَقْرَبُوْنَ আর পুরুষ নারীর সকলকে আমরা আছাবা বানিয়েছি তাদের পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজন যা কিছু রেখে যাবেন তাতে।” (সূরা নিসা-৩৩)। এ আয়াতে নারী পুরুষের সকলকে আছাবা ঘোষনা করা হয়েছে। সুতরাং নারী সন্তানের সাথে নাতিপুতি পাবে, পুরুষ সন্তানের সাথে পাবে না- এ রকম বক্তব্য চলবে না। দাদা পিতার স্থলাভিষিক্ত হন; এজন্য যার স্থলাভিষিক্ত হবেন তার বর্তমানে স্থলাভিষিক্তির প্রশ্ন আসে না। এ কারণে পিতা থাকলে দাদা উত্তরাধিকারী হন না। কিন্তু ছেলে ও নাতির ক্ষেত্র সে রকম নয়। জীবিত ছেলের নাতি তো আর তার পিতার বর্তমানে উত্তরাধিকারী হবে না। কিন্তু যে ছেলে মারা গিয়েছে, তার সন্তান উত্তরাধিকারী হওয়ার পথে অপর জীবিত ছেলে প্রতিবন্ধক হতে পারে না। কারণ নাতির ‘হাজিব’ (বঞ্চিত বা বহির্ভুতকারী) তার নিজের পিতা হতে পারেন কিন্তু তার চাচা হতে পারেন না। দুই ভাই যেমন পারস্পরিক একজনের হাজিব অন্যজন নন, তেমনি এক ভাইয়ের সন্তানের হাজিব অন্য ভাই হতে পারবেন না। তাছাড়া নবীজির একটি হাদীছ থেকে জানা যায় যে, নাতি হলেন পুত্র। এজন্য কেউ তার এক পুত্র ও একজন পুত্রের তরফের নাতি রেখে মারা গেলে বুঝতে হবে যে, প্রকৃতপক্ষে তিনি দু’জন পুত্র রেখে মারা গিয়েছেন। তখন তার সম্পদ দু’ভাগ করে বণ্টিত হবে। একভাগ পুত্র ও অপর ভাগ নাতি পাবে। নাতি যে পুত্র তার দলীল হল নিম্নোক্ত হাদীছ। বর্ণিত আছে: عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَأَلَ رَجُلُ الْبَرَاءَ فَقَالَ : يَا أَبَا عَمَّارَةَ أَوَلَّيْتُمْ يَوْمَ حُنَيْنٍ ؟ قَالَ الْبَرَاءُ وَأَنَا أَسْمَعُ أَمَّا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لَمْ يُوَلِّ يَوْمَئِذٍ كَانَ أَبُوْ سُفْيَانَ بْنِ الْحَارِثِ آخِذًا بِعِنَانِ بَغْلَتِهِ فَلَمَّا غَشِيَهُ الْمُشْرِكُوْنَ نَزَلَ فَجَعَلَ يَقُوْلُ أَنَا النَّبِىُّ لاَ كَذِبْ أَنَا اِبْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ . قَالَ فَمَا رُئِيَ مِنَ النَّاسِ يَوْمَئِذٍ أَشَدَّ مِنْهُ. ‘হযরত আবু ইসহাক রাহ. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক ব্যক্তি হযরত বারা রা. কে জিজ্ঞাসা করে বলল: ‘হে আবু আম্মারা, হুনাইন যুদ্ধের দিন আপনারা কি পালিয়ে গিয়েছিলেন?’ তখন বারা রা. বললেন, আমি শুনছিলাম: রসলুলাহ ছা. পালান নি। আবু সুফিয়ান বিন হারিছ রা. তার উটনীটির লাগাম ধরে দাড়িয়েছিলেন। যখন মুশরিকেরা তাকে ঘিরে ফেলেছিল, তখন তিনি নামলেন ও বলতে শুরু করলেন: ‘আমি তো নবী মিথ্যুক নই; আমি তো হলাম আব্দুল মুত্তলিবের পুত্র’। বর্ণণাকারী বলেন, এর চেয়ে কঠিন অবস্থায় লোকদেরকে ঐদিন আর দেখা যায় নি। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, মুসনাদু আহমাদ)৪। এ হাদীছে নবীজি নিজেকে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র বলেছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন আব্দুল মুত্তালিবেন নাতি। তাতে জানা গেল যে, ‘নাতি হল পুত্র’। এজন্য নাতিকে অপর পুত্র বঞ্চিত করতে পারবে না। যেমন এক পুত্র অপর পুত্রকে বঞ্চিত করতে পারে না।
৩. অধিকতর কাছের আত্মীয় তুলনামূলক দূরের আত্মীয়কে বঞ্চিত করে- এ যুক্তি সর্বক্ষেত্রে প্রযোয্য নয়। ‘সমস্তরের কাছের আত্মীয় তুলনামূলক দূরের আত্মীয়কে বঞ্চিত করে।’ ভিন্ন স্তরের আত্মীয়দের ক্ষেত্রে এ যুক্তি খাটে না। যেমন যদি কারো পিতা জীবিত থাকেন ও ছেলের নাতি জীবিত থাকে, তাহলে পিতা অধিকতর কাছের আত্মীয় হওয়া সত্বেও ছেলের নাতিকে বঞ্চিত করতে পারবেন না। কারণ ছেলে বা নাতি সন্তানের স্তরের আর পিতা ভিন্ন স্তরের আত্মীয়। তখন পিতা মাত্র এক ষষ্টাংশ পাবেন আর আওলাদ হওয়ার কারণে ছেলের নাতি অবশিষ্ট পাঁচ ষষ্টাংশ লাভ করবে।
৪. হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত এ হাদীছে করীমা পালকপুত্রদের উত্তরাধিকার প্রাপ্তি যখন বৈধ ছিল, সে সময়কার হতে পারে। যে নাতিনকে এক ষষ্টাংশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সে নাতিন পালক পুত্রের তরফের হতে পারেন। কারণ পঞ্চম হিজরী সনের পূর্ব পর্যন্ত পালক পুত্র বা তাবান্নীগণ এবং তাদের সন্তানগণ উত্তরাধিকার পেতেন। সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে যে, সে নাতিন পালক পুত্রের তরফের ছিলেন। তাছাড়া এ হাদীছখানা খবরে ওয়াহিদ ও কুরআনের খেলাফ হওয়ায় গ্রহনযোগ্য নয়। কারণ খবরে ওয়াহিদ দিয়ে কুরআনের বিধানকে রহিত করা যায় না। আর আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন:إِنِ امْرُؤٌ هَلَكَ لَيْسَ لَهُ وَلَدٌ وَلَهُ أُخْتٌ فَلَهَا نِصْفُ مَا تَرَكَ وَهُوَ يَرِثُهَا إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهَا وَلَدٌ “যদি কোন লোক নি:সন্তান অবস্থায় মারা যায় এবং তার একজন বোন থাকে, তাহলে সে বোন মৃত ব্যক্তি যা কিছু ছেড়ে যাবে তার অর্ধেক পাবে। বোন মারা গেলে ভাইও উত্তরাধিকারী হবে, তবে শর্ত হল মৃত লোক নি:সন্তান হতে হবে।” (সূরা নিসা-১৭৬)। আল্লাহর পরিষ্কার নির্দেশনার খেলাফ কন্যা সন্তানের সাথে বোনকে হিস্সা দেয়ার বর্ণনা সঠিক হতে পারে না। এখানে উল্লেখ্য যে, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হয়েছে উহুদ যুদ্ধের পরে। তখনও নারীকে মাওলা করা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হয়নি। তাছাড়া ‘সন্তানের উপস্থিতিতে ভাইবোন কোন হিস্সা পায় না’ সংক্রান্ত সূরা নিসার ১৭৬ নং আয়াত বিদায় হজ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পরে পথিমধ্যে নাযিল হয়। এ আয়াত গুলোর মাধ্যমে আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. বর্ণিত হাদীছখানা রহিত হয়ে গিয়েছে। এ কারণে ‘মানসূখ’ হাদীছের দলীল দিয়ে নাতিপুতিকে বঞ্চিত করা যাবে না।
৫. ইজমার দোহাই দিয়েও নাতি পুতিকে বঞ্চিত করা যাবে না; কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে, ইজমার দাবী সঠিক নয়। এ ক্ষেত্রেও তাই। নীরব ইজমা কোন ইজমা নয়। কখন কাদের দ্বারা ইজমা সংগঠিত হল ? সবচেয়ে বড় কথা হল কুরআনের হুকুমের খেলাফ কোন ইজমা হতে পারে না। সারা পৃথিবীর সকল লোকও যদি কুরআনের খেলাফ কোন ব্যাপারে একমত হন, তবুও উহার দ্বারা শরীয়তের কোন বিধান পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বাতিল বা স্থগিত করতে পারবেন না। সকল মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি, আল্লাহর গোলাম। গোলাম হয়ে মুনিবের কোন হুকুম কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন: وَلاَ مُبَدِّلَ لِكَلِمَاتِ اللهِ ‘আর আল্লাহর বক্তব্যগুলোর কোন পরিবর্তনকারী নেই।’ (সূরা আল আনআম-৩৪)। উপরন্তু ইজমা অলঙ্ঘনীয় কোন বিধান নয়।
আমাদের উপরের আলোচনায় এ কথা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, নাতি পুতিদেরকে দাদা নানার সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার স্বপক্ষে কোন যুক্তি সংগত দলীল প্রমাণ কুরআন হাদীছে বর্তমান নেই। সম্পূর্ণ অযৌক্তিভাবে ফতোয়া দেয়া হয় যে, ছেলেমেয়ে থাকলে নাতি পুতি পাবে না। অথচ আল্লাহ তা’আলা ঘোষনা করেন: يُوْصِيْكُمُ اللهُ فِيْ أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ “আল্লাহ তোমাদের আওলাদ বা সন্তানদের ব্যাপারে নির্দেশনা দিচ্ছেন- একজন পুত্র সন্তান দু’জন কন্যা সন্তানের সমান হিস্সা পাবে।” (সূরা নিসা-১১)। যেহেতু নাতি পুতি বা অধ:স্থন বংশের লোকেরা সন্তানের অন্তর্ভুক্ত, তাই তারা উর্ধতন উত্তরাধিকারীর মৃত্যুতে হিস্সা পাবে। সে হিস্সা প্রদান করা ফরজ কাজ ও হিস্সা প্রদান না করা কবীরা গুনাহ বলে বিবেচিত হবে। কুরআন কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয়। ইচ্ছা মাফিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে ইলমুল ফারাইজকে ত্র“টিপূর্ণ করা হয়েছে। এ কারণে রাসূল সা. যথার্থই বলেছেন:عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَعَلَّمُوْا الْفَراَئِضَ وَعَلِّمُّوْهُ النَّاسَ فَاِنَّهُ نِصْفُ الْعِلْمِ وَهُوَ اَوَّلُ شَيْئٍ يُنْسَي وَهُوَ اَوَّلُ َشَيْئٍ يُنْزَعُ مِنْ أُمَّتِيْ ‘হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণীত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: ‘তোমরা ইলমুল ফারাইজ নিজেরা শিক্ষা কর এবং অন্য লোকদেরকে তা শিক্ষা দান কর। কারণ উহা সমগ্র জ্ঞানের অর্ধেক। উহাতে অচিরেই ভুল হবে। উহা প্রথম জিনিস যা আমার উম্মতের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়া হবে।’ (দার কুথনী, ইবনু মাজাহ, মুসতাদ্রাক)৫। আমরা রাসূলুল্লাহ সা. এর এ ভবিষ্যতবাণীর দিকে উলামায়ে কেরাম ও পাঠক সাধারণের মনযোগ আকর্ষণের পাশাপাশি মহানবী সা. এর আরেকটি ওসিয়াতের দিকে অংগুলি নির্দেশ করতে চাই। বর্ণিত আছে: عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّيْ اُحَرِّجُ عَلَيْكُمْ حَقَّ الضَّعِيْفَيْنِ اَلْيَتِيْمُ وَالْمَرْأَةُ হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন: ‘আমি তোমাদেরকে দু’দূর্বলের অধিকার প্রদানের ব্যাপারে গুরুত্ব (নির্দেশ) দিচ্ছি। সে দূর্বলদ্বয় হল অনাথ (এতীম) ও নারী।’ (আল মুস্তাদরাক)৬। আল্লাহ আমাদেরকে বিষয়টি অনুধাবন করার ও এতীম শিশু ও নারী সাধারণের অধিকার প্রদান করার ব্যাপারে উদার হওয়ার তাওফীক দান করুন। وَمَا عَلَيْنَا اِلاَّ الْبَلاَغُ ॥
তথ্যসূত্র:
১. মুসলিম-৪২২৫, ফারাইজ অধ্যায়; বুখারী-৬৩৮৩, মুসলিম কাফিরের উত্তরাধিকারী হয় না বিষয়ক অধ্যায়; তিরমিযী-২১০৭, কাফির ও মুসলিম লোকদের মধ্যে উত্তরাধিকার বাতিল করা অধ্যায়; আবু দাঊদ-২৯১১, কাফির লোক কি মুসলিমের উত্তরাধিকারী হবে-অধ্যায়; ইবনু মাজাহ-২৭২৯, ইসলামের অনুসারীদের উত্তরাধিকার অধ্যায়।
২. তিরমিযী-২১০৯, হত্যাকারীর উত্তরাধিকার বাতিল করা অধ্যায়; ইবনু মাজাহ-২৭৩৫, হত্যাকারীর উত্তরাধিকার অধ্যায়; দারিমী-৩০৮৩, হত্যাকারীর উত্তরাধিকার অধ্যায়।
৩. বুখারী-৬৩৫৫, পুত্রের কন্যার উত্তরাধিকার আপন কন্যার সাথে বিষয়ক অধ্যায়; তিরমিযী-২০৯৩, কন্যার সাথে ছেলের কন্যার উত্তরাধিকার অধ্যায়; ইবনু মাজাহ-২৭২১, সন্তানের উত্তরাধিকার অধ্যায়; মুসনাদু আহমদ-৩৬৯১, পৃ-২১৭, ভ-৬; দারিমী-২৮৯০, কন্যা, পুত্রের কন্যা ও বোন অধ্যায়।
৪. বুখারী-২৮৭৭, নাও আমি অমুকের সন্তান অধ্যায়; মুসলিম-৪৭১৭, হুনাইন যুদ্ধের অধ্যায়; তিরমিযী-১৬৮৮, যুদ্ধের সময় জামা বিষয়ক অধ্যায়; মুসনাদু আহমাদ-১৮৪৭৫, পৃ-৪২৫, ভ-৩০।
৫. দার কুথনী-১, ফারাইজ ও চরিত্র পুস্তক; ইবনু মাজাহ-২৭১৯, ফরাইজের পঠন-পাঠনে উৎসাহ দান প্রসঙ্গে; মুসতাদ্রাক-৭৯৪৮, ফারাইজ পুস্তক।
৬. আল মুস্তাদরাক-২১১, ঈমান পুস্তক।
বিষয়: বিবিধ
২৫০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন