উন্নতমানের ও প্রসিদ্ধ প্রাইভেট হাসপাতাল গুলি এভাবে অনিয়ম করলে সাধারণ ক্লিনিক গুলির অবস্থা কি হবে?
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৩৬:৫৯ সকাল
অ্যাপোলো, ইউনাইটেড সহ বেশ কয়েকটি উন্নতমানের বেসরকারী হাসপাতাল যখন ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় তখন মনে হইছিল যাক ধনী ও উচ্চ মধ্যবিত্তদের ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এবং পশ্চিমা দেশ গুলোতে চিকিৎসার জন্য গমন কমে আসবে। কিন্তু বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি এই সমস্ত প্রাইভেট হাসপাতাল গুলি এত উচ্চ ভিজিট, টেষ্ট, অপারেশন, রুম ভাড়া ইত্যাদি খরচ নেওয়ার পরও চিকিৎসা, টেষ্ট, ওষুধের ক্ষেত্রে অনেক অনিয়ম করে। এত বেশী অর্থ নেওয়ার পরও কিভাবে এই ধরণের অন্যায় মেনে নেওয়া যায়? কয়েকদিন আগে খবরে দেখি;
অ্যাপোলো হাসপাতালে র্যাবের অভিযান; নকল ওষুধের সন্ধান: মানুষ যাবে কোথায়?
http://parstoday.com/bn/news/bangladesh-i53325
অ্যাপোলো হাসপাতালকে নিয়ে আমার অনেকটাই ভাল ধারণা ছিল। এই খবর দেখেতো অবাকতো হই উপরন্ত দেখি এর আগেও ২০১৫তে নাকি এভাবে পুলিশ ও ওষুধ প্রশাসনের অভিযানে এই রকম নকল ওষুধ জব্দ করে। আর এবারও যথারীতি শুধুই জরিমানা করে ছাড় দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছর আমার বন্ধুর এক আত্নীয়র ৫ বছরের এক মেয়ের নাকে ও শ্বাসনালীতে কিছু সমস্যা থাকার কারণে তাকে এক মোটামুটি উন্নতমানের ক্লিনিকের স্পেশালিষ্টের কাছে যায়। সেখানে তারা বলে দুই লক্ষ টাকায় অপারেশন করলে ছোট মেয়েটির শ্বাস নেওয়ার সমস্যা সেরে যাবে। তারপর তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতার ডাক্তার মাত্র ১২ হাজার রুপিতে কোন প্রকার অপারেশন ছাড়াই সাধারণ চিকিৎসা ও ওষুধে মেয়েটা সুস্থ হয়ে উঠে।
আরেকবার এবার আমারই দূর সম্পর্কের এক আত্নীয়র ৮ মাসের ছেলের কিডনীতে সমস্যা দেখা দিলে তার জীবনশংকা দেখা দেয়। তখন ঢাকার একটা উন্নত বেসরকারী হাসপাতাল বলে যে ১৫ লক্ষ টাকা লাগবে অপারেশন করে কিডনী সমস্যা দূর করতে। তারাও গেল সেই কোলকাতাতেই। সেখানে মাত্র ৬০ হাজার রুপিতে শিশুটা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে।
উপরের এরা কেউ সমাজ বা রাষ্ট্রের কোন বিখ্যাত বা প্রভাবশালী ব্যাক্তি নন। একই খবরে প্রকাশ যে বাংলাদেশের সাবেক পেস বোলার সৈয়দ রাসেলের ত্রূটিপূর্ণ এমআরআই করে অ্যাপোলো হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলে যে তার কাধের চারটা শিরা ছিড়ে গেছে। কিন্তু একই টেষ্ট সে ভারতের মুম্বাইতে করালে সেখানে দেখা যায় কোন শিরাই ছিড়ে নাই তবে একটা শিরা কিছুটা শুকিয়ে গেছে। এখানে বলতেই হবে যে আজকালকার চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির যূগে ঢাকার অ্যাপোলো ও মুম্বাইয়ের সেই এমআরআই মেশিনের মধ্যে গুরুতর কোন পার্থক্য নাই। কিন্তু আছে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের চরিত্রগত পার্থক্য। সেটা হইল মানুষকে জিম্মি করে চিকিৎসার নামে ডাকাতি করা। বাংলাদেশে না আছে সরকারী তথা জাতীয় ভাবে সকল জনগণের বিনামূল্যে সুষ্ঠ চিকিৎসার ব্যাবস্থা না আছে কোন প্রাইভেট বীমা। উচ্চ অর্থের ফি নিয়েও যদি এভাবে অনিয়ম ও র্দূনীতি করে রোগীদের ভোগান্তি করে সেটা কিভাবে প্রতিরোধ সম্ভব? বাংলাদেশের মানুষ যদি সাধ্যের মধ্যে ভারতে ভাল চিকিৎসা পায় তাহলে তারা সেখানে যাবে না কেন? আর বাকী যারা দরিদ্র ও অসামর্থ্যবান তাদের যে কতটুকু সুষ্ঠ চিকিৎসা হবে সেটা আল্লাহই জানেন!
বিষয়: বিবিধ
৮৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন