বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবার জন্য সবার ক্রমিক, তথ্য সহ জাতীয় ডেটাবেইজ কবে হবে?
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৪:৩৯:৪২ রাত
ধরুন আপানর শিশু সন্তানের টিকা, ভ্যাকসিন তথা প্রতিরোধক নিতে হবে। এতে কবে কোথায় কোন টিকা নিছেন তা যদি একটা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সংরক্ষিত থাকে তাইলে সারা বাংলাদেশের যেকোন লাইসেন্সধারী ও রেজিষ্টার্ড ডাক্তারের চেক করতে সহজ হবে। তাতে আপনার সন্তানের জন্মগত, বাড়ন্ত সহ ভবিষ্যতে সে বড় হলে স্বাস্থ্য, টিকা, চিকিৎসা ও টেষ্ট সহ পূর্ণ মেডিক্যাল ইতিহাস জানা যাবে। একই ভাবে বাসায় বিশেষ কর বায়োজোষ্ঠদের যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস সহ নানা স্থায়ী রোগের বিবরণ সহ ওষুধ, টেষ্ট ও চিকিৎসার বিষয়াদিও লিপিবদ্ধ থাকলে ভবিষ্যতের চিকিৎসায় সুবিধা হবে। অনেকেই আমরা নিজেদের অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র বাস করতে হয় তা শিক্ষা, চাকরী, ব্যাবসায়িক কারণে। তখন যদি সবার মেডিক্যাল রেকর্ড জাতীয় ডেটাবেইজে থাকে তাহলে অহেতুক অনেক ঝামেলা যেমন নিজের শরীরের ইতিহাস, পূর্বে করা বিভিন্ন টেষ্ট ও ওষুধ গ্রহণ ইত্যাদি আর ডাক্তারকে বলতে হয় না। উন্নত দেশগুলিতে সবারই একটা সিরিয়াল নাম্বার থাকে তাদের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবার জাতীয় সার্ভারের মেমরীতে! যেহেতু বৃটেনে থাকি এখানে National Health Service জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (NHS) যার অধীনে জাতীয় ভাবে সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় General Practitioner ডাক্তার (GP) ও তাদের কয়েকজন সহকর্মী সহ কয়েকজন নার্স ও প্রশাসনিক কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র অথবা ডাক্তারখানা থাকে। এখানে যারা জন্মগত ভাবে বৃটিশ ও অভিবাসীদের অনেক বছর ধরে আছেন তাদের সবার একটি করে NHSর ক্রমিক নাম্বার থাকে। তাদের জাতীয় সার্ভার ও নেটওয়ার্কে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, টেষ্ট, ওষুধ গ্রহণের পূর্ণ বিবরণ থাকে! হঠাৎ কোন নতুন এলাকায় গেলে সেখানকার GPর অফিস হতে নিজ বিষয়ের তথ্যে শুধু ফরম পূরণ ও পাসপোর্ট/রেসিডেন্ট পারমিট দেখালেই হল। ২/১ দিনেই নতুন GPতে আপনার রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন। তখন আর এখানে অহেতুক শরীর, রোগ, ওষুধ, টেষ্ট ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে পূর্বের একগাদা প্রেসক্রিপশন, টেষ্ট রিপোর্ট পেপারস নিতে হয় না। ইইউ ভূক্ত সহ নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও আইসল্যান্ডে এভাবেই প্রত্যেক বাসিন্দাদের পুরো মেডিক্যাল ইতিহাস আছে।
৫/৬ বছর আগে শুনছিলাম যে গাজীপুরের আইটি পার্কে দেশের পুলিশ, প্রশাসন সহ সকল সরকারী কাজের তথ্য ভান্ডার তথা জাতীয় ডেটাবেইজ সার্ভার ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। কিন্তু পত্র পত্রিকা বা অনলাইন মিডিয়াতে বর্তমানে এই বিষয়ে আর কোন অগ্রগতি দেখি না। যদি এটাই হয় যে সরকারের এই বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনা আছে তাইলে এখানে স্বাস্থ্যখাতের কথা লক্ষ্য রেখে জনগণকে জাতীয় আইডি কার্ডের মতই সবাইকে স্বাস্থ্য-চিকিৎসা সুবিধার্তে এর জন্যও ডেটাবেইজ গড়ার উদ্যোগ নিক। এই বিষয়ে ঢামেক, ঢাবি, বুয়েটের শিক্ষক, গবেষকগণ ভাল ভূমিকা রাখতে পারবে। এটা কঠিন ও সময় সাপেক্ষ তবে অসম্ভব নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আন্তরিক ও উদ্যোগী হইলেই এই বিষয়ে আগামী ৩-৪ বছরে অগ্রসর হওয়া সম্ভব!
বিষয়: বিবিধ
৮৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন