মুহিত সাহেব কিভাবে কর সংগৃহিত, জমা এবং কোন কোন খাতে ব্যায় হবে তার সঠিক হিসাব প্রদানও নিশ্চিত করবেন!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:৩২:২১ রাত
৫, ১০ টাকা যাই হোক, সবাইকে বাধ্যতামূলক কর দিতে হবে: অর্থমন্ত্রী
আমি বরাবর কর দেওয়ার পক্ষে। একটা রাষ্ট্র কর বা রাজস্ব ছাড়া চলতে পারে না। যতই প্রাকৃতিক সম্পদ থাকুক দিন শেষে দেশের সকল প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান মানুষ হতে কর নিতেই হবে। দেড়ীতে হলেও এই বিষয়টা অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব তুলে ধরছেন। এখন এই বিষয়ে উনার ও রাষ্ট্রের কি পরিকল্পনা সেটাও স্থির করতে হবে;
http://parstoday.com/bn/news/bangladesh-i19495
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মুশকিল হচ্ছে কর আদায়ের ব্যাবস্থার বিশাল অংশই ম্যানুয়াল বা মনুষ্য তথা কাগজে কলমে। মুদি হতে হোটেল, রেস্তোরা, কল-কারখানা সহ আয়কর যোগ্য প্রতিষ্ঠানে প্রদত্ত কর কাগজে কলমেই আদায় হয়। এখানে কেনা-বেচা, উৎপাদন সবই সেই কাগজে কলমেই নথিভূক্ত হয়। এটাকে ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল না করা পর্যন্ত সঠিক হিসাব অজ্ঞাত থেকেই যাবে। এখানে অনিয়ম ও র্দূনীতি খুবই সহজ। যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল। এখানে কম-বেশী গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট সরকারী বিভাগের কর্মচারীরা যোগসাজশ করে রিডিং কমিয়ে রাষ্ট্রকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্থ করে। সেখানে যথাযথ ডিজিটাল ব্যাবস্থা না থাকলে সাধারণ মুদি, রেস্তোরা, মিল-কারখানা সহ আয়যোগ্য প্রতিষ্ঠান সমূহ কতটা তাদের আয় ও ব্যায় এর সঠিক হিসাব প্রাপ্তির বিষয়টা সন্দেহ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেই যাবে।
এরপর জনগণ ও প্রতিষ্ঠান সমূহ হতে আদায়কৃত কর যথাযথ ভাবে রাষ্ট্রীয় জমা হচ্ছে কিনা সেটাই বিরাট চ্যালেঞ্জ। সৎ ও দক্ষ সরকারী কর্মচারী ছাড়া এই কর গুলো ঠিকমত জমা হবে না। রাজস্ব জমার বিষয়টা ভাল ভাবে ও সব সময় মনিটরিং করতে হবে। এই তদারকি ঠিকমত হলে রাষ্ট্রের কোষাগারে অনেক অর্থ জমা হবে।
এরপর এই ব্যাপক ভিত্তিক আদায়কৃত কর কিভাবে কোন কোন খাতে ব্যায় হবে সেটারও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছল না হলেও একেবারে অসামর্থ্যবানও না। তাই তাদের কষ্টের অর্থ সঠিক ভাবে ব্যায় হয় এবং তারা লাভবান হন সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মানুষকে বাসস্থান, দুই বেলা খাবার সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিশ্চিত করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলেও পুরোটা পারে না। কাজেই এই অবস্থায়ও যদি তাদের থেকে কর আদায় করলে সেটা যেন বৃথা না যায়। রাস্তা, ঘাট, রেলপথ, বিদ্যু কেন্দ্র সহ বিভিন্ন নির্মাণ খাতে যেন অনিয়ম ও র্দূনীতি না হয় সেটা রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই সব নির্মাণে জনগণের কর্মক্ষেত্রে ও উৎপাদনে সক্রিয়তা বাড়ে। তাতে বেকারত্ব সহ মানুষের অসচ্ছলতাও হ্রাস পায়। সমস্যা হইল যে আমাদের দেশে কি নির্মাণ সহ রাষ্ট্রের ব্যায়ের জন্য নির্ধারিত বিষয় গুলা অতটা স্বচ্ছ নয়। তাই অনিয়ম ও র্দূনীতির সুযোগ থেকেই যায়।
অর্থমন্ত্রী মুহিতকে বুঝতে হবে উনি যে উদ্যোগের কথাটা বলছেন এটাই উন্নত ও বিশেষ করে পশ্চিমা দেশ গুলিতে হয়। সেখানে খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, সামাজিক ন্যায় বিচার সহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক সুবিধা দেয় রাষ্ট্র। বাংলাদেশের জনগণকে যদি ব্যাপক ভিত্তিক কর দিতেই হয় এর রিটার্ন বা প্রতিদানটাও যেন যথাযথ হয় এটাও মুহিত ও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
একটি পশ্চিমা দেশে থাকি তাই এখানে যথাযথ কর আদায় এবং জনগণের প্রাপ্ত সুবিধা ও অধিকার স্বচক্ষে দেখে বিমোহিত হই। এর আগের পোষ্টেও বলছি যে করের একটা অংশ স্বাস্থ্য খাতের জন্য নির্ধারণ করে রাখলে বাংলাদেশের মানুষ আরো ভাল স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
বিষয়: বিবিধ
৯৬০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণের বেশী থাকলে মোট সম্পদের ২.৫% যাকাত দিলে দেশটা থেকে দারিদ্র দূর হয়ে যেত ।
উনারা ৫ টাকা / ১০ টাকা কর দেনে ওয়ালাদের উপরই ফাঁপড়বাজি করতে পারবেন । শত কোটি ওয়ালাদের সাথে উনাদের দোস্তি । উনাদেরকে ঘাটাতে সাহস করেন না মন্ত্রী মহোদয় । উপরন্তু উনারা লোন নিয়ে দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছেন।
শুনলাম মাসিক ইনকাম ১৬০০০ টাকা হলেই (বছরে ১৯২০০০ টাকা)কর দিতে হবে । আগে ছিল ২২০০০০ টাকা , ২৪০০০০ টাকা (মহিলাদের জন্য)।
যখনই ব্যাংকে টাকা পয়সার বড় কোন গরমিল দেখা যায় তখনই ট্যাক্সের আওতা বাড়ানো হয় , খড়গে পড়তে হয় নিম্নমধ্যবিত্ত আয়ের লোকদের সেটার মেকআপ করতে । অথচ এই সব কাজে সাধারণ মানুষেরা না বরং শত কোটি টাকা ট্যাক্স খেলাপি/ঋণ খেলাপিরাই জড়িত থাকে । অথচ এদের নাম প্রকাশ করলে সমস্যা হবে বলে মানুষদের সতর্ক করেন !
মন্তব্য করতে লগইন করুন