বোনাস রোনাল্ডো সহ অবশেষে মেসিকে দেখার সুযোগ হল, স্থান সেই ওল্ডট্রাফোর্ড!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ২৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:০৯:৫৯ রাত
২০১১ সালে যখন মেসির আর্জেন্টিনা জাতীয় দল বাংলাদেশে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে আসে তখন অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সেই ম্যাচ দেখা সম্ভব হয় নাই। বিলাত থেকে ষ্টাডি ও কাজ কর্ম বাদ দিয়ে খেলা দেখা মোটেও সহজ নয়। ইচ্ছা আছে যে যদি বৃটিশ পাসপোর্ট পাই তখন অবশ্যই রিয়াল ও বার্সার মধ্যকার খেলা স্পেনে গিয়ে দেখব। কিন্তু কিছুদিন আগেই শুনি যে মেসি ও রোনাল্ডো কেউই আরো ৩-৪ বছর বার্সা ও রিয়ালে থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। এরই মধ্যে হঠাৎ ১৮ই নভেম্বর দুফুরে জানতে পারলাম যে আজকে ম্যান ইউর ওল্ড ট্রাফোর্ডে আর্জেন্টিনা ও পর্তূগালের মধ্যে প্রদর্শনী ফুটবল খেলা। যেখানে মেসি, রোনাল্ডো ও ডি মারিয়া এরা সবাই খেলবে। এই খবর জানা মাত্রই ফোন দিলাম ম্যান ইউর টিকেট বিক্রির সেকশনে। কিন্তু সহজে কোন অপরাটেরকে লাইনে পাচ্ছিলাম না কেবলই ওয়েটিং মিউজিক টোন শুনছি। এভাবে ২৫-২৮ মিনিট পর পেলাম এক তরুণী অপারেটরকে। ভাগ্য ভাল যে এই ম্যাচের জন্য ক্লাব মেম্বারশীপ লাগবে না। আমিও এইবার ইউনাইটেডের পারফরমেন্স তেমন ভাল না হওয়ায় মেম্বার হই নাই। কারণ এত দূরে গিয়ে খেলা দেখে যদি দল ভাল না করে তখন বিষন্ন মনে বাসায় ফেরা কষ্টকর। সে যাই হৌক টিকিটের মূল্য ৪০ পাউন্ড এবং বুকিং চার্জ ৪ পাউন্ড। যথারীতি বাংলাদেশী পাসপোর্ট ও ব্যাংক ষ্টেটমেন্ড নিয়ে গেলাম পরিচয়পত্রের জন্য।
এবার খেলার সমন্ধে বলতে গেলে যা বুঝলাম টিভিতে রোনাল্ডোকে দেখে আমরা অনেকেই কমবেশী আচ করতে পারি সে তার কোন সতীর্থকে পাস দিবে অথবা গোলে শট নিবে। কিন্তু মাঠের রোনাল্ডকে দেখে সেটা আচ করা বড়ই দুরুহ! সে যেভাবে পাস দেয় তাতে বিপক্ষের খেলোয়াড়রা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় এবং সব সময় আতংকের মধ্যে থাকে। তবে মাঠে রোনাল্ডেকে দেখে মনে হল তার বয়স হইছে। যদিও ২৯ বছর চলে লাগে তার বয়স ৩২। অন্যদিকে বিশ্ব সেরা মেসি এক কথায় জাদুকর। বল যে সে কিভাবে রিসিভ করে মনে হয় কেউ যেন একটি লোহাকে চুম্বকের দিকে ছুড়ে দেয়। আর মেসি যাকে বল দেয় যেন কোন দূধর্ষ স্নাইপার বরাবরই তার লক্ষ্য অর্জন করে। আর যে ভাবে বল নিয়ে ড্রিবলিং ডজ দেয় মনে হয় বল মেসির কথা শোনে। যেন বলটা তার শরীরেই অংশ। যদিও তাদেরকে প্রথমার্ধ পর তুলে নেওয়া হয় তারপরেও বলতেই হয় বার্সা ও রিয়ালের জন্য মেসি, রোনাল্ডো যেভাবে উজাড় করে খেলে জাতীয় দলের জন্য সব সময় সেভাবে খেলে না। তবে আর্জেন্টিনার পক্ষে ডি মারিয়া ও পর্তূগালের পক্ষে ন্যানি যথেষ্ঠ পরিশ্রম করে খেলছে। বাকী অন্যরা অতটা সিরিয়াস ছিল না। আর্জেন্টিনা অনেক আক্রমণ ও গোলের সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যার্থ। ২০১৪র ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালের মতই হিগুয়াইন দুইটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে। শেষমেশ পর্তূগালই বেশ কয়েকটি আক্রমণ থেকে একটিকে গোলে পরিণত করে ১-০তে জয়ী হয়। আমি মনে করি পর্তূগাল ঝড়ে বক জিতেনি বরং নিজ রক্ষণভাগকে সামলে সুযোগ মত মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণ করে। তাদের এই ভূমিকা আমার কাছে বুদ্ধিমানদের মতই লাগছে। তুলনার বিচারে আর্জেন্টিনা পর্তূগালের চেয়ে ভাল দল। সেই আর্জেন্টিনাকে ৯০ গোল বঞ্চিত করে রাখা সহজ নয়। যদিও আমার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা হারছে ও খেলাটাও তেমন প্রবল লড়াই (যা ঘরোয়া ও ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লীগে দেখে থাকি) হয় নাই তবুও যে দুই বর্তমান সময়ের বিশ্বের সেরা দুই ফুটবলার ও কিংবদন্তীদের স্বচোক্ষে দেখলাম এটাই বড় কথা। আর জাতীয় দলের হয়ে মেসি ও রোনাল্ডো মুখোমুখি হবে সেটা মনে সহজে ঘটবে না।
বিষয়: বিবিধ
১৪১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন