সাবধান প্রতিবাদ করলে আপনি রাজাকার ও পাকিস্তানী হয়ে যেতে পারেন! Happy

লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ০৬ মার্চ, ২০১৪, ১২:৩৮:৪৪ রাত



স্মরণকালের বৃহত্তম বালুচর

গজলডোবার সব গেট বন্ধ : পানি নেই তিস্তায়




এক দিকে ভারতের কাছ থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়া অন্য দিকে তিস্তার ভারত অংশে গজলডোবা ব্যারাজের সব গেট বন্ধ করে দেয়ায় বন্ধ হতে বসেছে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প। এ মুহূর্তে সেখানে সাড়ে তিন হাজার কিউসেক পানি থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেক, যা চাহিদার মাত্র ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। ফলে উত্তরাঞ্চলের তিন জেলার ১২ উপজেলার ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টরে বোরোর চারা সেচের অভাবে মরে যাচ্ছে। অসহায় কৃষক হাপিত্যেস করে ধরণা দিচ্ছেন পাউবোর কাছে। সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে চলছে কৃষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ। পানি দেয়ার জন্য পাউবো টাকা নিয়ে পড়ে গেছে বেকায়দায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, তিস্তা এখন অনেকটাই মরা খাল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিস্তার মরণদশার একমাত্র কারণ চুক্তি অনুযায়ী পানি না পাওয়া। ভারত নীলফামারীর ডালিয়ার তিস্তা ব্যারাজের ৬৫ কিলোমিটার উজানে কুচবিহার জেলার মেকলিগঞ্জ থানার গজলডোবা নামক স্থানে ব্যারাজ দিয়ে তিস্তার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেয়ায় তিস্তার বাংলাদেশ অংশ সরু খালে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতি বছর প্রয়োজনের সময় তিস্তার বাংলাদেশ অংশ পানিশূন্য থাকে। আর অসময়ে পানি ছেড়ে দেয়ায় প্রয়োজন না থাকলেও বর্ষায় দেখা দেয় বন্যা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তিস্তার পানির হিস্যার বিষয়টি জেআরসির বৈঠকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলেও আজো এর কোনো সুরাহা হয়নি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের জোরালো চাপ সৃষ্টির পরও ভারত সরকারের সাথে আজ পর্যন্ত কোনো দ্বিপীয় চুক্তি কার্যকরও হয়নি। ১৯৯৬ সালের সমঝোতা অনুযায়ী শুষ্ক মওসুমে ভারত ৪০ শতাংশ, বাংলাদেশ ৩৫ শতাংশ এবং স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে ২০ শতাংশ পানি ছাড়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। পাউবো বলছে ’৯৬ সালে সমঝোতার পর আজ পর্যন্ত তিস্তার ভাগ্যে ১০ শতাংশ পানিও জোটেনি।

পাউবো সূত্রে প্রকাশ, এবার শুষ্ক মওসুমের শুরুতেই ভারত গজলডোবার সব ক’টি গেট বন্ধ করে দেয়ায় তিস্তায় পানির প্রবাহমাত্রা বিগত ১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কম। প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, ১৯৬১ থেকে ’৬৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিস্তায় পানির প্রবাহমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৬৭০ কিউসেক। কিন্তু চলতি মওসুমের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই তিস্তার পানি প্রবাহমাত্রা মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কিউসেকের মধ্যে উঠানামা করছে। একদিকে গজলডোবার গেট বন্ধ, অন্য দিকে বিগত দিনগুলোর চেয়ে চলতি বোরো মওসুমের শুরু থেকেই চলছে অনাবৃষ্টি। ফলে তিস্তায় পানির অভাবে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট থেকে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা বাহাদুরাবাদ ঘাটের ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত ১৫২ কিলোমিটার নদী অববাহিকায় তৈরি হয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহ বালুচর। রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের তিস্তা অববাহিকায় পানির স্তর মারাত্মক নিচে নেমে গেছে। ডোবা, নালা, জলাশয়গুলো শুকিয়ে গেছে। টিউবওয়েল, বিদ্যুৎচালিত মোটর ও ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। এতে অকার্যকর হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্পে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর নাব্যতা ধরে রাখা তো দূরের কথা, পানিশূন্যতায় তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকায় বোরোর ভরা মওসুমে মারাত্মক সেচ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, প্রকল্পের প্রথম ধাপে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ১২টি উপজেলার ৮৬ হাজার ৭৫৯ হেক্টরে সেচ সুবিধা দেয়ার কথা থাকলেও এবার ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর এর আওতায় আনা হয়েছে। এই পরিমাণ বোরোর জমিতে সেচ দিতে সেচ ক্যানেলে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কিউসেক পানির প্রবাহমাত্রা থাকা প্রয়োজন। সেচ সুবিধা দিতে কৃষক সমিতির মাধ্যমে বোরো মওসুমের শুরুতেই মাস খানেক আগে প্রতি বিঘার জন্য ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা হারে আগাম টাকাও জমা নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু পানি না থাকায় তারা পানি দিতে পারছে না। পাউবো ডালিয়া সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার তিস্তা ব্যারাজে পানির প্রবাহমাত্রা ছিল মাত্রা ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেক।

প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল বোরো চাষিদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। ধানতে মরে যাচ্ছে। লালচে হয়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে যাচ্ছে। কম খরচে এবং যথাসময়ে উন্নত সেচ পাওয়ার জন্য তারা প্রকল্পের অধীনে বোরো চাষে উদ্যোগী হলেও এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ডালিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কৃষকদের শুধু আশ্বাসই দিচ্ছেন। কিন্তু দেড় মাসেও কোনো সমাধান মেলেনি। বোরো চাষিরা এখন পানির জন্য ধরনা দিচ্ছেন পাউবোর আওতাধীন সেচ প্রকল্পের অফিসগুলোতে। চলছে আন্দোলনও। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।

গত ৩ মার্চ বোরো জমিতে পানির দাবিতে প্রকল্পের ক্যাচমেন্ড এরিয়ার দিনাজপুরে চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেহজংপুর ইউনিয়নের দেবীগঞ্জে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়ক ৫ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে চাকলা, বাঙ্গালপাড়া, দেউল, হাশিমপুর, পাইকারপাড়া, চক সন্ন্যাসী, দেবীগঞ্জ, বেকিপুল, ডাঙ্গারহাট এলাকার পাঁচ শতাধিক কৃষক। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু পানি না আসায় আবারো তারা গতকাল বুধবার একই স্থানে অবরোধ গড়ে তুলেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বেলা ৩টায় ঘটনাস্থলে গিয়েও কৃষকদের শান্ত করতে পারছেন না। এ দিকে আন্দোলনরত কৃষক আবদুস সামাদ, নওশাদ হোসেন, বিমল কুমার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পানি দিতে না পারলে আগে বলতে হতো। আমরা টাকাও দিলাম। ক্যানেলের পানির জন্য জমিতে ধানও লাগালাম। এখন মাঝপথে এসে বলছে পানি নেই। তা হলে আবাদ কিভাবে হবে। আবাদ না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব।

নীলফামারীর জলঢাকার পুন্নতিঝাড় গ্রামের কৃষক ইউনুস আলী জানান, পানির অভাবে বোরো তে নষ্টের পথে। তিস্তার পানি ছাড়া বিকল্প সেচের ব্যবস্থাও নেই আমাদের। এবার যে কী হবে তা ওপরওয়ালাই জানেন। একই ধরনের অভিযোগ করলেন রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের বোরোচাষি নুরুন্নবী, নুরুল হুদা আর আতাউর রহমান।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান নয়া দিগন্তকে জানান, ভারত গজলডোবার সব ক’টি গেট বন্ধ করে দেয়ায় তিস্তায় পানির প্রবাহমাত্রার এই করুণ দশা। রোটেশনের মাধ্যমে কৃষকদের পানি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানেরও তাগিদ দেন তিনি।

http://www.dailynayadiganta.com/details.php?nayadiganta=MjE4NzI=&s=MTY=

************

গতকাল তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির এক কান্ডারী যা বললেন;

"বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন, ‘ট্রানজিট-করিডোর নিয়ে আমাদের এক ধরনের মাইন্ডসেট আছে। সেটা পরিবর্তন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের দরজা বন্ধ করে দেই, অন্য জায়গা দিয়ে দরজা করে নেবে। কেউ কারো জন্য বসে থাকবে না। এর মানে এই নয় যে, বিনা স্বার্থে আমরা দরজা খুলে দেব। এটা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়।"

ভারতকে ট্রানজিট-করিডোর দেয়ার পক্ষে মত দিলেন তোফায়েল আহমেদ

http://bangla.irib.ir/2010-04-21-08-29-09/item/59448

কিভাবে ট্রানজিট হবে, ভারত কত অর্থ দিবে বা না দিবে এবং আমরা ভর্তূকী মূল্যে জ্বালানি তাদের যানবাহনকে দিব কিনা এই সব বিষয় দেশের মানুষ ও সংসদে আলোচনা না করেই তোফায়েল বলে যে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। এখন সারা বিশ্বে দেশে দেশে লেনদেন হয় ন্যায্য স্বার্থের বিনিময়ে। এখানে মুখে মুখে বা গোপনে চলে না। ভারত ও হাসিনার সরকার এই বিষয়ে খোলসা করার বিষয়ে আদৌ আগ্রহী না। কারণ এতে দিল্লীর একতরফা সুবিধা ব্যাহত হবে। এই যখন অবস্থা তখন দিল্লী তিস্তা দিয়ে শুস্ক মৌসুমে পানি দিলেই কি বা দিলেই কি। এখন কেউ যদি ভারতের পানি লুটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কোন সন্দেহ নাই তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির কাছে সে নির্ঘাত রাজাকার ও পাকিস্তানী হয়ে যাবে। ভারতের কোন একতরফা স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটে যদি বাংলাদেশ ন্যায্য ভাবে লাভবান হয় সেটাও নাকি পাকিস্তানেরই লাভ!

বিষয়: রাজনীতি

১০১২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

187531
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১২:৫৪
এনামুল মামুন১৩০৫ লিখেছেন : ধন্যবাদ
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৩২
139093
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। আমাদের সবার উচিত এই সমস্ত খবর বেশী করে শেয়ার করা।
187535
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:০৭
গেরিলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৩২
139094
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
187544
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৩৭
সজল আহমেদ লিখেছেন : আল্লাহরে!পড়তে পড়তে দাঁত তো ভাইঙ্গা যাওয়ার পালা।ভাই ২ পর্বে ভাগ করতে পারলেন না?!
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:৪৯
139096
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : ভাই কি যে বলেন এর চেয়েও বড় পোষ্ট থাকে। মূল সোর্স নয়াদিগন্তের সেই খবর পুরোটা তুলে ধরা প্রয়োজন করি।

কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ সজল ভাই।
187610
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:২৬
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
০৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৪:২৪
139133
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : ধন্যবাদ।
187659
০৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:৫০
শেখের পোলা লিখেছেন : বাঁধের ওপাশে পানি আছেনা? যাইয়া গোছল ওজু যা দরকার করে আসেন৷
০৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৪
139396
বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ লিখেছেন : Smug

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File