১/১১ ভারতের নির্দেশেই ঘটেছিল!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলাদেশ_জিন্দাবাদ ০২ নভেম্বর, ২০১৩, ০২:২১:৫৮ রাত
হাসিনা সরকারকে রক্ষায় ভারতকে সব কিছু করতে হবে : ইকোনমিক টাইমস
//দিল্লির কাছে প্রকৃত উদ্বেগের হলো জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম//
ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে হাসিনা সরকারকে রক্ষায় ভারতকে সবকিছু করতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছে দেশটির ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা। শুক্রবার বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচারিত ব্যবসায়ভিত্তিক ইংরেজি সংবাদপত্রটির অনলাইন সংস্করণে এ মন্তব্য করা হয়। প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়, বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক সঙ্কটের দিকে ধাবিত হচ্ছে, তা এশিয়ার আঞ্চলিক ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন চীনে সীমান্ত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করছেন এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টি স্কুলে ভবিষ্যতের মতাদর্শ নিয়ে বক্তৃতা করছেন, তখন ঢাকায় ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশের শীর্ষ দুই নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়া যাতে পরস্পরের সাথে কথা বলেন এবং গণতান্ত্রিক পালাবদল নিশ্চিত করতে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সংলাপ শুরু করেন সে চেষ্টা বেপরোয়াভাবে করে যাচ্ছেন। সুবীর ভৌমিকের লেখা ‘বাংলাদেশ ইজ ইন অ্য ভায়োলেন্স ফেজ অ্যান্ড ইন্ডিয়া মাস্ট ডু অল ইট ক্যান’ প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা অবশেষে নীরবতা ভেঙে আসন্ন সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে সর্বদলীয় অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এরপরপরই তিনি খালেদা জিয়ার সাথে টেলিফোনে কথা বলেন এবং তাকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান। খালেদা জিয়া আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন, ৬০ ঘণ্টার হরতাল পালনে দৃঢ় থাকেন, যা অত্যন্ত সহিংস ঘটনায় পরিণত হয়। ৩৭ মিনিটের টেলিফোন সংলাপটি অতীত সময়ের তুচ্ছ বিষয়ে ঝগড়াক্ষেত্রে পরিণত হয়। এই টেলিফোন জাতির আত্মবিশ্বাস জাগাতে ব্যর্থ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি প্রধান নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবির প্রতি অনড় থাকে। আর শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে সেটা আর সম্ভব নয়। তিনি এর বদলে সর্বদলীয় অন্তর্র্বতী সরকারের প্রস্তাব দেন। বিএনপি প্রধান তার দাবিতে অনড় থাকায় রাজনৈতিক সমঝোতার আশা বিলীন হয়ে যায়। এই সংলাপ ইন্টারনেট ও ঢাকার টিভিগুলোতে প্রচার হতে থাকায় আগামী দিন সম্পর্কে বাংলাদেশ এখন দোলাচলে দুলছে। ইকোনমিক টাইমসে বলা হয়, প্রধান ঘটনার আড়ালে আরো কিছু ঘটেছে। এর একটি হলো এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয় রাষ্ট্রদূতেরা জড়িয়ে পড়েছেন। আবার স্থানীয় মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা ভারতীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য নয়াদিল্লি রওনা হওয়ার আগে ভারতীয় হাইকমিশনারের সাথে এক প্রাতরাশে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়েছে। মজিনার ঢাকায় ফেরার পর মার্কিন দূতাবাস সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় যে, ‘বাংলাদেশে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একইভাবে চিন্তা করছে।’ এসব খবরে ভারতীয় হাইকমিশন এবং ভারতের পররাষ্ট্র দফতর ক্রদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পরিচয় প্রকাশ না করা ভারতীয় কূটনীতিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ‘একইভাবে চিন্তা করছে না।’ ভারতীয় কূটনীতিকেরা ব্যক্তিগতভাবে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মজিনা ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মতো আচরণ করছেন।’ তারা বলছেন, তিনি ‘বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য সবকিছু করছেন’ এবং খালেদা জিয়া রাজপথে সহিংস প্রতিবাদের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে আরো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একই চিন্তা করছে বলে মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হওয়াটাকে ভারতীয় কূটনীতিকরা মনে করছেন, এটা হলো ভারত ও ঢাকায় তার শ্রেষ্ঠ বন্ধুর মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ ঘটানোর আমেরিকান পদক্ষেপ। এতে বলা হয়, ঢাকায় আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে নিরাপত্তা ও কানেকটিভিটির যে সুবিধা দিয়েছে, তা ঢাকার কোনো সরকার আগে কখনো দেয়নি। হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে ভারতের যৌক্তিক কারণ রয়েছে, যদিও তিনি যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছেন, সে সম্পর্কে কূটনীতিকরা অসচেতন নন। তবে ঢাকার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের কোনো পছন্দ থেকে থাকলে কিভাবে এটাও অস্বীকার করা যায় যে এক বন্ধুর ব্যাপারে ভারতেরও নিজস্ব পছন্দ আছে? ইকোনমিক টাইমসে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার তার কৌশলগত স্বার্থ দেখবে এবং বাংলাদেশে চীনা আগ্রাসন বন্ধে সহায়তা করবে। ২০০১-০৬ সালে বিএনপি শাসনকালের বৈরিতার জন্য ভারত দলটির প্রতি বিরূপ। দিল্লির কাছে প্রকৃত উদ্বেগের হলো জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলাম। ঢাকা প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বন্দ্বের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ভারতীয় কূটনীতিক বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কটে চীনের ভূমিকাকে ‘গঠনমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। চীনা রাষ্ট্রদূত লি জুন তার পূর্বসূরিদের চেয়ে অনেক বেশি সরব। বাংলাদেশের বিদ্যমান সঙ্কট নিয়ে তিনি তিনবার বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি সহিংসতা পরিহার করে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এমনকি ‘উভয় দলের মধ্যে আমাদের বন্ধুদের মাধ্যমে’ সঙ্কট নিরসনে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছেন। চীন চট্টগ্রাম উপকূলের সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে আগ্রহী। এই প্রথমবারের মতো ভারতীয় কূটনীতিবিদেরা ‘মালার আরেকটি মুক্তা’র ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নন। তারা মনে করছেন, সোনাদিয়া দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরো ভালোভাবে প্রবেশ করা যাবে এবং এটা আরো বাণিজ্য, বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টিতে বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ করে তুলবে। নদি
স্থানীয় সময় : ০০৫৪ ঘণ্টা, ০২ নভেম্বর ২০১৩
http://www.amadershomoybd.com/content/2013/11/02/middle0633.htm
*************
কিছুদিন আগে লিখেছিলাম;
১০ টাকা কেজি চাউল খাইতে চাইলে এবং ভারতেকে ফ্রি সেবা অব্যাহত রাখতে পুনরায় নৌকায় ভোট দিনঃ হাসিনা
http://www.somewhereinblog.net/blog/Bangladesh_Zindabad/29856117
ভারত সরকার সরাসরি কিছু না বললেও তার মিডিয়া এলিট শ্রেণী এবং জনগণের একটা বড় অংশ হাসিনা ও তার আলীগকেই পুনরায় ক্ষমতায় দেখতে চায়। ভারতের মিডিয়া ও এলিট শ্রেণী ভারত সরকারের অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ভারত অন্যায্যকর ও একতরফা সুবিধা পাবে না বিধায় হাসিনা ও তার আলীগই দিল্লীর একমাত্র ভরসা। হাসিনা সহ সমমনা ধর্মনিরপেক্ষ ও ভারপন্থী বুদ্ধিজীবি প্রআলোর মতি, মাহফুজ গংরাও একই বিষয় চায়। যেই কারণে এই মতি গংরা ১/১১ সমর্থন করলেও আজকে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছে না। তারা চায় হাসিনার অধীনেই যেন পরবর্তী নির্বাচনটা হয়। ভারতীয় ইকোনোমিক টাইমস প্রকৃতপক্ষে ভারতের নীতি নির্ধারকদের মনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরছে। এখন দেশের জনগণ ইসলামী মূল্যবোধ(৫ম ও ৮ম সংশোধনী) এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে চলমান আন্দোলন এগিয়ে না নিলে হাসিনা কারচুপি, ডাকতির মাধ্যমে অবৈধ ভাবে জনমত উপেক্ষা করেই ক্ষমতায় আসবে। এই আন্দোলন সফল হলে বাংলাদেশ সার্বভৌম থাকবে নতুবা চিরস্থায়ী ভারতের গোলামী করে যেতে হবে। এর বাইরে অন্য কিছু নাই।
বিষয়: বিবিধ
১৯৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন