অনুমতি না মেলায় স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে ।( কপি পেষ্ট )
লিখেছেন লিখেছেন বাংগালী ২০ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৪১:১৬ দুপুর
মিন্টু চৌধুরী৷ পেশায় বুয়েট অটোমোবাইল শপের টেকনিশিয়ান৷ কয়েক বছর আগে নিজের তৈরি গ্লাইডারে চড়ে কিছুক্ষণের জন্য আকাশে উড়েছিলেন তিনি৷ স্বপ্ন ছিল আরও এগিয়ে যাবার৷ কিন্তু সেটা আর হয়নি৷ সময়টা ২০০৮ সালের শেষ দিক৷ রাঙামাটির পাহাড়ঘেরা অঞ্চলে নিজের গ্রামে গ্লাইডার নিয়ে আকাশে উড়াল দিয়েছিলেন মিন্টু ও তাঁর সহযোগী ওয়াকী আবদুল্লাহ৷ প্রায় ১৫ মিনিট করে তিন-চারবার আকাশে উড়েছিলেন তাঁরা৷ ওড়ার অনুমতি না থাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে পাহাড়ঘেরা এলাকায় বেছে নিয়েছিলেন৷
পরবর্তীতে সরকারের কাছে অনুমতি নিতে গেলে বারবারই ফিরে আসতে হয়েছে৷ একেক সময় একেক অজুহাতে আজও তাঁর সরকারি অনুমতি পাওয়া হয়নি৷ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মিন্টু জানান, একবার সিভিল অ্যাভিয়েশনের অনুমতি পেতে সেখানকার দুজন কর্মকর্তাকে নিজের গ্লাইডারটি দেখিয়েছিলেন৷ ‘‘তাঁরা দেখে বললেন এটা অ্যামেরিকান স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী হয়নি৷ আমরা বলেছিলাম, এটা তো অ্যামেরিকান স্ট্যান্ডার্ড হওয়ার কথাই না৷ এটা বাংলাদেশে তৈরি৷ এটা বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ডে হয়েছে কিনা সেটা দেখেন৷ তখন ওনারা বললেন, না ভাই আমরা এটা বুঝতে পারবো না৷ কারণ আমরা অ্যামেরিকান ছাড়া বা অন্য কোনো কান্ট্রি ছাড়া আমরা এটা বুঝবো না৷ বাংলাদেশে তো কখনো এটা হয় নাই এবং এটা আমরা বলতে পারবো না৷ এই বলে ওনারা আমাদের ফিরিয়ে দিলেন৷'
এর পরেও অনেকবার অনেক জায়গায় দৌ়ড়াদৌড়ির কথা জানান মিন্টু৷ কিন্তু কোনো কাজ হয়নি৷ অনুমতি পেতে তিনি ও ওয়াকী আব্দুল্লাহ মিলে ‘মা অ্যাভিয়েশন' নামে একটি কোম্পানিও গঠন করেছিলেন৷ কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি৷ তাই নিজের তৈরি গ্লাইডারটির বিভিন্ন অংশ খুলে এখন ওয়ার্কশপেই ফেলে রেখেছেন৷
মিন্টুর ইচ্ছা আর পাঁচ বছর পর যখন তাঁর বুয়েটের চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর হয়ে যাবে তখন তিনি পেনশন পাবার যোগ্য হবেন৷ সেই টাকা দিয়ে তিনি আবার গ্লাইডার তৈরি করে সবার সামনেই আকাশে উড়বেন৷ ‘‘ঐ সময় যদি কেউ আমাকে গ্রেপ্তারও করে, আমাকে যদি সারা জীবন জেলেও পঁচতে হয় তাও আমি আরেকবার গ্লাইডার তৈরি করে আমার শখ মেটাবো,'' বলেন মিন্টু৷ এ প্রসঙ্গে তাঁর কাছে জানতে চাই তাঁর শখ সম্পর্কে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার শখ হইলো বাংলাদেশের একজন কৃষক বলবে যে আমার বাংলাদেশ তৈরি করতে পারে, বিমান উড়াইতে পারে৷ আর সরকারের কাছে আমার চাওয়া ছিল, যদি সরকার আমাকে একটা ছোটখাটো জায়গা দিত তাহলে আমি সেখানে একটা রিসার্চ সেন্টার করতাম৷''
বাণিজ্যিক দিক
মিন্টু বলেন, চাইলে বাণিজ্যিকভাবেও গ্লাইডার তৈরি করা যেত৷ তাহলে কক্সবাজার সহ অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানে পর্যটকদের এ সব গ্লাইডারে চড়ানোর ব্যবস্থা করা যেত৷
এছাড়া দুর্যোগের সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও গ্লাইডার ব্যবহার করতে পারতো৷ এ প্রসঙ্গে মিন্টু জানান, সেনাবাহিনী থেকে দু'জন কর্মকর্তা তাঁর গ্লাইডার দেখে সেটা নিয়ে যেতে চেয়েছিল৷ ‘‘কিন্তু আমি দেয়নি৷ ওনারা চেয়েছিলেন, ওনাদের নামেই এটা ওড়ানোর জন্য৷ তো আমার এতো কষ্ট, এতকিছু৷ যদি ওনাদের নামেই উড়াতে হয় তাহলে তো আর কিছুই থাকবে না,'' বলেন মিন্টু৷
গ্লাইডার থেকে বিমান
মিন্টু জানান, একটা গ্লাইডারে সর্বোচ্চ তিনজন চড়তে পারে৷ ‘‘তবে আমাদের পরিকল্পনা ছিল, আমার কাছে যন্ত্রপাতি কেনা আছে যে, আমরা ৮-১০ জন চড়তে পারে এমন একটা প্লেন তৈরি করবো৷''
স্বশিক্ষিত
শুধুমাত্র বিদেশ থেকে পাওয়া এবং অনলাইনে পাওয়া বইপুস্তক পড়েই গ্লাইডার তৈরি করেছেন বলে জানান মিন্টু৷ ছোটবেলায় প্লেন উড়তে দেখেই তাঁর মনে বিমান তৈরির আগ্রহ জন্মে বলে জানান তিনি৷
ডয়চে ভেল .
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন