পাকিস্তানফোবিয়া নিয়া সাত কথা .।

লিখেছেন লিখেছেন পাথরের প্রতিবাদ ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:০৭:১২ সকাল

এক. ৭১ এ পাকিস্তান সরকারের ভুমিকা আজকের সরকারের মতই ছিল। পাকিস্তান কি করেছে তা বুঝার জন্য একাত্তরে জন্ম নেবার দরকার নাই। লীগ ও যৌথবাহিনী এখন যা করছে পাকিস্তান ও তাদের অনুসারীরা একই কাজ করেছে। তবে তখন কিছু কিছু কাজের লক্ষ্য ছিল মানুষকে বাঁচানো। এখন একমাত্র লক্ষ্য হল মারা।

দুই. ৭১ এর পাকিস্তান শাসক। যার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। আর এখনকার পাকিস্তান রাষ্ট্র এক জিনিস না। এখনকার পাকিস্তান বিশ্ব-রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি বলি আমেরিকা যদি হয় সন্ত্রাসের আব্বা তাইলে পাকিস্তান পালক পিতা। ওয়ার অন টেরর প্রোজেক্টে পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এবং এই অংশীদারি গোলামির মত না। সে মাঝে মাঝেই ডাবলস্ট্যান্ডাড শো করতেছে। যেটা আমলে নেবার মত বিষয়।

( এই প্রোজেক্টে- র, সিআই. আইএস আই, গলায় গলায় ভাব বজায় রেখে বাংলাদেশে ফাংশন করেছে, এখন এজেন্সিগুলা আলাদ হয়ে যাচ্ছে। ভারতের একতরফা নাপতামির কারনে এটা ঘটছে।অলরেডি ভারত-আমেরিকা কূটনৈতিক ভাবে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। নারী কূটনীতিক দেবযানি কে স্টিভ সর্চ করে আমেরিকা ই প্রচার করিয়েছে যে, ন্যাংটা করে তল্লাশি করা হয়েছে। আর ইন্ডিয়া তো ফালপড়া শুরু করে দিছে। আমাদের পাকনা মিডিয়াও বেশ রসায়া এই খবর প্রচার করতেছে। এতে কূটনেতিক ভাবে আমেরকিা যে মেসেজ দিছে তার সরল মানে হল, তুমি মাতবরি করলে ন্যাংটা কইরা ছাইড়া দিব।যা হোক কূটনৈতিক লড়াইয়ে অনেক প্রতিকী ক্যাপারও গুরুত্ব রাখে। এখানেও তাই হইছে। আর দেবযানী আজ যে প্রতিকী অপমানের শিকার হইচে তার জন্য বাংলাদেশ নিয়া সুজাতার বেয়াদবী দায়ি ---এটা ভারতের কূটনীতি বিশ্লেষকরা স্বীকার করেছেন। সূত্র: বিডি নিউজ)

তিন. মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বেহুদা পাকিস্তানফোবিয়া ছড়ানো হয়েছে। পাকিস্তানের মুক্তিকামি মানুষের সাথে আমাদের শত্রুতা থাকতে পারে না। হাসিনাও শাসক ইয়াহিয়াও শাসক। ৭১ কইরা আমরা কি করলাম, বিদেশি লোক বাদ দিয়া দেশি বোনের অত্যাচার মেনে নিচ্ছি---এখন এই তো অবস্থা।

চার. যে প্রজন্ম আজ লীগের কূটনৈতিক গেইম না বুঝে পাকিস্তান বিদ্বেষ ছড়ানোকে চেতনার দায়িত্ব আকারে নিতেছে তাদের বলি পাকিস্তান কি চিজ তা যদি বুঝতা তাইলে আর ফাল পাড়তা না। তালেবান যখন একে-৪৭ ধরে বলবে গাও তো বাবা চেতনার গান তখন বুঝবা রবীন্দ্র সঙ্গিত কি অমঙ্গল ডাইকা আনছে।

ফলে সাংস্কৃতিক ঘৃণার পার্ট আকারে যারা পাকিস্তান মানেই বর্বর আর খারাপ এই রকাম রেসিস্ট দৃষ্টি ভঙ্গি পালন করেন তাদের বলব, পশ্চিমা একাডেমিতে যায়া একটু খোজ নিয়া দেখগা। তুমি তো কোন কিছু করার মুরুদ রাখ না। কেন এই আক্রোশ।

পাঁচ. এখনকার এই গেইমের মর্ম হল, ইউএস লবিকে বুঝানো যে, যেই পাকিস্তান এত দিন র, সি.আই.এর সাথে একই তালে বাংলাদেশে কাজ করেছে তাকে তো আমি রক্ষা করতে পারতেছি না। দেশে তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জোয়ার। আমি করব? মানুষ আমারে চায়... দেখ দেখ দূতাবাস পর্যন্ত পাবলিক খায়া ফেলতে চাইতেছে। আমি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। সরকারের উপর ক্রমাগত বিদেশি চাপকে পাশকাটানোর জন্য এই গেইম সরকারের দিকে থেকে ভাল। আমি এর প্রশংসা করি। এতে লাভ দুইটা। ১. পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণাটা উস্কে দেয়া চেতনার ফেন্টাসিটা আবার ছড়ানো।২. আন্তর্জাতিক মহলকে নিজের পিপল বেইস যে মজবুত তা জানান দেয়া। বলাই বাহুল্য, এই দুইটাই ফ্যাসিবাদের দামি কৌশল।ক্লাসিক কৌশল।

ছয়. পাকিস্তানের প্রতি বর্ণবাদি আচরণের কোন মানে হয় না। আমাদের যে সব মগাবুদ্ধিজিবি পাকিস্তানকে একটা দানব আকারে হাজির করছেন তাদেরকে বলা দরকার এটা ৭১ সাল না। এখন পাকিস্তান অনেক কমপ্লেকস গেইমে নিজেরে শামিল রাখছে। রিজিওনাল গেইমে পাকিস্তানরে কোন দিন হম্বিতম্বি করতে দেখবেন না। কিন্তু সে আছে, তার ভুমিকা সমেত আছে। আর কাদের মোল্লার ব্যাপারে অন্য দেশগুলা যা করছে পাকিস্তান তাঁর চেয়ে বেশি কিছু করেছে বলে মনে হয় না। তুরষ্ক বাংলাদেশ কে দ্বিতীয় ইসরাযেল বলেছে। কেরিও ক্ষেপছে। তাইলে পাকিস্তানের দোষটা এত বেশি কেন হইছে? কারণ এই তথাকথিত প্রজন্মকে তো পাকিস্তান আক্রমনের স্বাদ দেয়া যাবে না। তাই দূতাবাস মুখি ক্ষিপ্র গমনের মধ্যে একটা যুদ্ধের স্বাদ দেয়া। এটা নগদ লাভ।

সাত. আমি পাকিস্তানকে ঘৃণা করি না। আমি পাকিস্তানের নীপিড়িত মানুষের সংগ্রামের সাথে একমত। জালেম শাসক তা যত মহান চেতনারই হোক তার বিরুদ্ধে জেহাদে আমি মজলুম জনগোষ্ঠির ঐক্যের পক্ষে। শ্রেণী ঘৃণা..জাতি ঘৃণা আমাদের অমানুষে পরিণত করে ফেলবে। প্রজন্ম মানুষ হ.....

--রেজাউল করিম রনি

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File