সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩
লিখেছেন লিখেছেন পাথরের প্রতিবাদ ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:০৯:০০ রাত
লিবারেল ডেমোক্রেসি পুঁজিতান্ত্রিক মতাদর্শের রাজনৈতিক হাতিয়ার হলেও এখানে চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার একটা জায়গা রাখা হয়েছে কেননা লিবারেলিজম মানুষের ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য নিজস্ব চিন্তা ও তৎপরতার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।অবশ্য লিবারেলিজম এর স্বাধীনতা তত্ত্বের নানান ক্রিটিকও আছে তা এখানে আলোচনা করার সুযোগ নেই। লিবারেলিজমের এই প্রত্যয় ও ধারণার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সংবিধানও এই চিন্তা, মতপ্রকাশ ও বাক স্বাধীনতার স্বীকৃতি ও সুরক্ষাকে সুনিশ্চিত করাকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে গণ্য করে। কিন্তু রাডিক্যাল রাজনৈতিক মতাদর্শ তো দুরের কথা বাংলাদেশের শাসক গোষ্ঠী বর্তমানে এই লিবারেলিজমের বয়ানও আর অনুসরণ করতে রাজি নয়।বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার লিবারেল স্পেসও ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। গণমাধ্যমে প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য নিয়ন্ত্রণ আরোপের পাশাপাশি রাষ্ট্রযন্ত্র এখন ফেসবুক, টুইটার এর মত সোশ্যাল মিডিয়ার এক্টিভিজমও সরাসরি রাষ্ট্রীয় ও আইনি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে চায়! সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে দানা বেঁধে উঠা যে কোন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন এর উদ্ভব ঠেকিয়ে দেয়াই এই নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩, তবে এই আইন প্রণয়নের দায় ভার বিএনপি জামাত জোট সরকারের , নিবর্তনমূলক ৫৭ ধারাসহ এই আইন ২০০৬ সালে গৃহীত হয়। আর বর্তমান সরকার এই আইনের অধীনে বিবেচিত অপরাধকে জামিন অযোগ্য করে এবং পুলিশকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের অবাধ ক্ষমতা দিয়ে আর শাস্তির মেয়াদ বাড়িয়ে এই আইনকে কালাকানুনে পরিণত করার সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে। রাষ্ট্রকে নিপীড়নমূলক করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক ধারার এই মেলবন্ধন হতাশাজনক! আমরা তথ্য প্রযুক্তি ইউজ করে সাইবার অপরাধের বিরোধী কিন্তু তার জন্য ভয়াবহ নিপীড়নমূলক এবং সংবিধানে প্রদত্ত নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণকারী ধারা সংযুক্ত করে আইন প্রণয়ন করতে হবে কেন?
(collected)
বিষয়: বিবিধ
১০৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন