একটু থামেন ভাই। ৫ই মে তেমন কিছু হয় নাই। এতো প্যাঁচাল পাড়তেছেন ক্যান?
লিখেছেন লিখেছেন সাদাসিধে ঝুলিওয়ালা ০৫ মে, ২০১৪, ১১:৪৮:৫৬ রাত
সেদিন লাখো লাখো হেফাজত কর্মীরা জড়ো হয়েছিল শাপলা চত্বরে। কারা এই হেফাজত কর্মী? এরা মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক, বিশেষ করে কওমী মাদ্রাসার। এদের কোনও মারামারির ট্রেইনিং ছিলনা, হাতে ছিলনা কোনও দেশীয় অথবা বিদেশী অস্ত্র। সমস্বরে "আল্লাহু আকবার" বলাই ছিল এদের প্রধান অস্ত্র। এদের মধ্যে অনেকেই ছিল যারা ঐদিনের আগে কখনও ঢাকা যায়নি। অনেকেরই বয়স ছিল ১২-১৫। এদের ছিলনা অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতা, যে মাঠপর্যায়ে এদের নেতৃত্ব দেবে।
এদের উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত ঢাকা ঘেরাও দিয়ে সরকার পতন ঘটানো অথবা পূর্বোত্থাপিত ১৩ দফা বাস্তবায়ন।
কারা দিয়েছিল এদের সমর্থন?
বিএনপি, জামায়াত এবং আপনি আমি, যারা আজ ৫ই মে - ৫ই মে বলে ফেসবুকে ঝড় তুলছি।
৫ই মে ছিল ছিনেমার মতো। তারা ঢাকায় আসার পূর্বে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের পূর্ণ সমর্থন পূর্বক সকল প্রকার সহায়তা দেয়ার পূর্ণ আশ্বাস দেয়া হলো। সরকার পতনের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলেন ম্যাডাম জিয়া। ভাবলাম এবার কিছু একটা হবে। বিএনপি হেফাজত মিলে এক অভূতপূর্ব আন্দোলন হবে। তার উপর ছিল জামায়াত শিবিরের সমর্থন এবং জনবলের আশ্বাস এবং সাধারণ জনগণের মনোবল, শক্তি এবং সহায়তা।
কিন্তু একি দেখলাম?
সবাই তাদের সামনের দিকে বাড়তে বলে পেছনে কেউ নাই। ঐদিন রাতে শাপলা চত্ত্বরে শুধু হেফাজতিরাই ছিল। ম্যাডাম জিয়া হেফাজতের কাঁধে বন্দুক রেখে শিকার করতে চেয়েছিলেন। আর জামায়াত শিবির কোন্ দ্বন্দ্বের কারণে সেখানে যায়নি তা এখানে বিশ্লেষণ করলে বক্তব্য দীর্ঘ হয়ে যাবে। আর আপনার আমার মতো যারা হেফাজতের সমর্থক ছিলাম তারা শুধু ফেসবুকে আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত ছিলাম।
অযথাই প্রাণ গেল কয়েকটি নিষ্পাপ প্রানীর। আর সেজন্য আমি সম্পূর্ণ দায়ী করবো বিএনপি, জামায়াত এবং আমি নিজেকে।
ইতিহাসের সর্ববৃহৎ একটি আন্দোলনে যদি সেদিন বিএনপি, জামায়াত এবং আমি (জনসাধারণ) একত্রিত থাকতাম তাহলে আমাদের দেখতে হতোনা ৬ই মের কালো রাত, সরকার পতিত হতো তিন দিনের মাথায়। কিন্তু তা না করে তাদের একা ছেড়ে দিয়ে, কোনও ব্যাকআপ না দিয়ে বসে রইলাম টেলিভিশনের সামনে, পূর্ণদৈর্ঘ্য হেফাজত চলচ্চিত্র দেখার জন্য। দেখলামও মন ভরে। রক্ত আর রক্ত।
আজ ইস্ ফিস্ করি। আফসোস করি। কিন্তু এই আফসোস করার কোনও অধিকার নেই আমার। এমন আন্দোলন শতাব্দীতে শুধু একবারই ঘটে। আমার ছোট ভাই কওমী মাদ্রাসার ছাত্র। আমার কাছে অনুমতি চেয়েছিল সেদিন ঢাকা যাওয়ার জন্য, আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য। আমি নিষেধ করেছিলাম। ভেবেছিলাম যদি কোনও দূর্ঘটনা ঘটে যায়। কিন্তু আজ আমার মনে হয় আমি ভুল করেছি। নিজে উপস্থিত ছিলাম না। তাকে যেতে দেয়া উচিৎ ছিল। অন্তত একটা হলেও "আল্লাহু আকবার" বলা কণ্ঠস্বর বৃদ্ধি পেতো। বুড়োকালে রাজনৈতিক আলোচনায় বসে হয়তো কোনও এক সময় আমাকে বলতো, "ভাইয়া, সেই স্বৈরাচারিনী পতনের আন্দোলনে আমিও সামিল ছিলাম।"
http://www.facebook.com/shadashidhe.jhuliwala
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলাম ধ্বংসের তরে ইহুদি নাসারা একজোট!!
দেখিনি আমি ফিলিস্তিনের আর্তনাদ!!
দেখিছি আমি ৫মের নাস্তিক হঠাও জিহাদ।।
ভাই সেদিন রাতভর শিবিরের কর্মীরা যেভাবে অতন্ত্র পহরীর ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছিল, অতীতের কোন সময় তাদেরকে এভাবে আসতে হয়নি। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। কারণ সরকারের অস্ত্রের মুখে কিছু করার সাধ্য কোন গোষ্ঠী বা দলের সম্ভব নয়। কারণ সরকারের আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে সবাই নি ির্বকার...আমি নিজে সেদিনের এক চাক্ষুস সাক্ষী কারা সেদিন নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল এই ঘুমন্ত মানুষদের পাহারা দেবার জন্য। সুতরাং ময়দানে হাজির না হয়ে যদি বাসায় বসে বসে উল্টা পাল্টা বলে থাকেন তবে বলবো, বাস্তব ময়দানে উপস্থিত না হয়ে দাবার কোটের পাশে বসে অনেক রকম বিষয়ই বলা যায়..!
মন্তব্য করতে লগইন করুন