২৪শে এপ্রিলের তাৎপর্য বয়ান
লিখেছেন লিখেছেন সাদাসিধে ঝুলিওয়ালা ২৪ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:৫৬:২৭ রাত
আরে না না। কি যে বলেন ভাই। রানা প্লাজাকে জাতীয় মাজার হিসেবে ঘোষণা করা হোক। অন্তত প্রতিদিন সেজদার মাধ্যমে কিছু না কিছু ফায়দা হাসিল করা যাবে। আর ঐযে তাজরিন ফ্যাশন? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। তাজরিন ফ্যাশনের সামনে আট দশ হালি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করা হউক। ১৫০ জন ছাই হয়ে যাওয়া পোশাক শ্রমিকের আত্মার উপর প্রতিদিন ফুল ছেটানো যাবে।
রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে জমা হওয়া ১২৭ কোটি টাকার মধ্যে খরচ দেখানো হয়েছে ২২ কোটি টাকা। যদিও আমরা জানি উদ্ধার কাজে একটা মোমবাতি থেকে নিয়ে হেস্কো ব্লেইড পর্যন্ত সব কিছুই সাধারণ জনগণ নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে কিনে দিয়েছে। যাই হোক, বাকি ১০৫ কোটি টাকা গেলো কোথায়?
আপনারা যা ভাবছেন আমি মোটেও সে বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছিনা। আসলে আমি এসব ব্যাপারে মোটেও ইন্টারেস্টেড না। ১০৫ কোটি টাকা গেলো কোথায়, তা আমার মাথা ব্যথা নয়। আমি এই ব্যাপারে কোনও আলোচনা সভার আয়োজন করবোনা, কোনও ব্যানার টানিয়ে হাতে প্লেকার্ড নিয়ে রাস্তায় মিছিলও করবোনা, আমার দ্বারা হবেনা কোনও প্রতিবাদ সভা। এসব চেতনাহীন লোকদের কাজ। যেখানে চেতনা নেই সেখানে আমিও নেই।
আমি চেতনা আন্দোলনে বিশ্বাসী। মূলত আমাদের চেতনা আন্দোলনের ফলেই এই ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক শ্রমিকদের পরিবার দুবেলা খেতে পারছে। এইতো সেদিন রানা প্লাজায় নিহত একজন পোশাক শ্রমিকের বাবার সাথে কথা বললাম। জিজ্ঞেস করলাম, মেয়ে মারা যাওয়ার পর আপনার পরিবার কেমন চলছে? তিনি বললেন, আলহামদুলিল্লাহ্। ভালই চলছে বাবা। আগে রিক্সা চালাতাম। ঘরের ভাড়া পরিশোধ করার জন্য রিক্সাটা বিক্রি করতে হয়েছে। এখন ভিক্ষা করি। লোকজন আজকাল টাকার বদলে আমার থালাতে চেতনা দেয়। বলে, চেতনা টাকার চেয়েও মূল্যবান। সারাদিন চেতনা জমিয়ে রাতে সেই চেতনা গুলো আমার গিন্নী নুন মরিচ ছাড়াই বেশ ভাল করে রান্না করে। তারপর পেট ভরে চেতনা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।
শুনে খুব ভাল লাগলো। চোখের পানি আটকে রাখতে পারলামনা। আমাদের চেতনা এই গরীব পরিবারগুলোকে এতো সাহায্য করছে? নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিনা।
ধার করা সংস্কৃতির একাংশ নিহত পোশাক শ্রমিকদের নামে উৎসর্গ করা হোক। প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারির মতো ২৪শে এপ্রিলও তাদের স্মরণ করা হোক, কোটি টাকার ফুল ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হোক তাদের দূর্ঘটনাস্থলে, মেলা বসানো হোক মাসব্যাপী। আর সেই মেলায় আপনাকে রিক্সা চালিয়ে নিয়ে যাক কোনও নিহত পোশাক শ্রমিকের বাবা, চানাচুর বেচুক কোনও সেলাই দিদিমনির ভাই আর মানবতার ইতি ঘটুক চেতনার খোঁয়াড়ে।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হায় কি ব্যঙ্গ হয়ে পড়ছে এদের জীবন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন