আমাকে আমি --------------- (কঠিনভাবে শাসালাম)
লিখেছেন লিখেছেন সূর্যের পাশে হারিকেন ২০ আগস্ট, ২০১৪, ০২:৩৭:২৩ দুপুর
প্রিয় ব্লগার "হতভাগা" ভাই এর এই স্পট ডিফেরেন্স - পোস্ট এ মন্তব্য দেখতে/পড়তে গেলাম। মন্তব্যে আরেক প্রিয় ব্লগার "ইমরান ভাই" ভাইয়ার দেয়া লিংক এ যেয়ে দেখি....... দারুন এক ফটো-গেইম। ছবিটাও বেশ সুন্দর, আকর্ষনীয়, মনোরম পরিবেশে কিছু আই-ক্যাচিং সীন।
দেখলাম ছবিটা। Give me a clue বাটনটা দেখে ট্রাই করলাম। ভাবলাম ঠিক মতো যদি ধরতে না পারি ক্লু এর সাহয্য নেয়া যাবে...... মন্দ কি! তো শুরু করলাম অপারেশ্যন স্পট ডিটেক্ট! ৮ টা হুট করে ধরলাম, বাকি ২ টা কোন মতেই আমার এই খালি চোখে ধরা পড়ে না। মনে মনে বল্লাম...... যদি ইমরান ভাই ভাইয়ার মতো মোটা গ্লাসের চশমা থাকতো একটা ধরে ফেলতে পারতাম আমিও ওর মতো করে।
যাইহোক...... আমি খোঁজতে থাকলাম বাকি ২টা অমিল স্পট। কারন আমার পরিপূর্ণ বিশ্বাস ছিলো যে এই ছবিটাতে ১০ টা অমিল স্পট আছেই আছে। না হলে সে এভাবে Spot the 10 differences বলে “দশটা স্পট” চিহ্নিত করতে বলতো না। আমি নিজেকে আরও বল্লাম....... “তোমার মনোযোগ এর ঘাটতি আছে বিধায় বাকি ২টা ধররতে পারতেছো না। আরও ভালো করে দেখ”।
কিন্তু মূল ঘটনাটা এখানে এসেই উপলব্ধি করলাম আমি..... নিজেকে বল্লাম। ............ “হায়, আফসোস!! ....... সাধারন একটা লেখার প্রতি তোমার এতই বিশ্বাস! যার লেখককে তুমি জানোইনা। যাকে বিশ্বাস করার মতো যথাযথ কোন প্রমানও নাই তোমার কাছে। আর সেওতো কখনও কোথাও এভাবে ঘোষণা দেয় নি যে সে কখনও মিথ্যা কথা বলে না, কিংবা ক্লেইম করে নাই যে তার ওয়েবসাইটে কোন রকম মিথ্যা ইনফরমেশ্যন নেই। অথবা সে দাবি করেনাই যে তার দেয়া তথ্যের সত্যতার ব্যাপারে সন্দেহ করা যাবে না। তবুও তার কথার প্রতি তোমার এতই অন্ধ(!) বিশ্বাস তৈরি হলো যে ১০টা পার্তক্ষ্য আছেই আছে? ..... রিয়্যেলি এ্যম্যেজিং ........... অথচ এমন একজন সত্তা আছেন যার মহত্ত্ব ও জ্ঞানের কোন সীমা নেই। যার নাজিলকৃত কিতাবের কোন অংশকেই সন্দেহ করার কোন চান্স নাই এবং তিনি সেটা স্পষ্ট করে বলেও দিয়েছেন, তাঁর রচিত সেই মহা গ্রন্থে’র শুরুতে। পৃথিবির শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী/বিজ্ঞানীরাও সেই গ্রন্থের দোষ ক্রুটি কিংবা মডার্ন যোগের সাথে অসামঞ্জস্যতা বের করতে যেয়ে হাজার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে/হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থই হতে থাকবে। এমন একটি গ্রন্থের লেখার/দাবীর প্রতি কি তোমার এরকম প্রগাঢ় বিশ্বাস আছে?”
- আমার মন (মানে নাফ্স) বলে উঠলোঃ- অবশ্যই, আমিতো মুসলিম। সেই গ্রন্থ আল-কুর’আনের প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।
- আমি বল্লামঃ- তাহলে কুরআনে আল্লাহ’ সুবহানাহু ওয়াতা’আলা কত উপদেশ/পরামর্শ দিয়েছেন, আদেশ/নিষেধ করেছেন, তা তুমি কতটুকু মেনে চলো? এই যেমনঃ-
(وَالْعَصْرِ ﴿١﴾ إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ ﴿٢﴾ إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ) সময়ের কসম (করে আল্লাহ্ বলেছেন)। মানুষ আসলে বড়ই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের। [১০৩:১-৩] ---------- তুমি কি এই আয়াত অনুযায়ী আমল করো? নাকি শুধু মুখে বিশ্বাসের কথা বলেই বসে থাকো?
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ) হে ঈমান গ্রহণকারীগণ, যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ। এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। [৪৯:৬] ----------- আর এ আয়াত কতটুকু প্র্যাক্টিস করো দৈনন্দিন জীবনে? নাকি কোন খবর পাইলে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে টানাটানি/গালাগালি/ভিন্নমত পোষণকারীদেরকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে বসো?
(وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۖ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ) সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [৫:২] ---------- এটার ব্যাপারে কি আচরন তোমার? আল্লাহ’র শাস্তির ভয়াবহতাকে বিশ্বাস করলে কি “প্রভুর দিকনির্দেশনা বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো চলতা?”
- আমি আরও বল্লামঃ- “যাইহোক...... এখন থেকে চেষ্টা করো আগের “আমি-সব-জানি ও আমিই-সঠিক-পথে-আছি” মনোভাব ছেড়ে আল্লাহ’র প্রদত্ত সঠিক পদ্ধতি পরিপূর্ণভাবে জেনে/বুঝে/মেনে চলার চেষ্টা করো। অন্তত নিজেকে বাচানো যাবে প্লাস অন্যজনও নিরাপদ থাকবে তোমার অসতর্ক আচরণ থেকে।”
- আমার নাফ্স বল্লোঃ- “এই কথা কখন বল্লাম আমি? তুমি unnecessarily আমাকেই দোষারোপ করো কোন কিছু লাইনচ্যুত হলে।”
-- তো করবো না? তোমাকে একটু লাই দিলেইতো ‘নফসে আম্মারা’র রুপ ধারণ করে বসো। তাই তোমাকে সবসময় কঠিন শাসনে রাখতে হয়।
- ঠিক আছে.... এখন থেকে নিজের সাথে মুহাসাবা করবো, নিজের ভুল শুধরে নেয়ার চেষ্টা করবো।
-- আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ্ যেন সঠিক পথেই রাখেন।
আমি আবার বল্লামঃ- মনে থাকে যেন প্রভুর এই বানী.........
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ) হে ঈমানদার গন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [২:২০৮] --------- চিন্তা ভাবনা/মতাদর্শ/আচার ব্যবহার/লেনদেন সব-সবকিছুকেই ইসলামইজ্ড্ করতে হবে। মানে কিছু কিছু ব্যাপারে ইসলাম ফলো করা হবে, অন্য কিছুর ব্যাপারে নিজের ইচ্ছা কিংবা মনগড়া পদ্ধতি দিয়ে চালাবা? তা যেন না হয়.... (এমনটি চিন্তায় আসলে আল্লাহ’র এই আয়াতটা মনে করবা......)
(أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّـهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ) তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। [২:৮৫]
আমাকে আমি কঠিনভাবে শাসালাম, অবশেষে ক্লু এর সাহায্যে বাকি দুটো আবিষ্কার করলাম। তবে বড়ো একটা ধাক্কা খাইলাম।
[বিশেষ কৃতজ্ঞতা : ব্লগার হতভাগা ও ইমরান ভাই ভাইয়াকে]
বিষয়: বিবিধ
৩৬৩০ বার পঠিত, ৭৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার চিন্তার গভীরতায় দেখে অনেক ভাল লাগল ।
@মনা পাখি.... একদম আমার মনের মতো হয়েছে কথাটা, স্প্যেশ্যাল থ্যাংক্স আপ্নাকে
@আমার ভাইয়া হারিকেন,
তোমারে নকল কইরা আমার আজ এই দশা হুহুহু
কিভাবে কোন
মানুষকে সত্যকে জানার বুঝার
উপলদ্ধি দান করবেন সেটা আল্লাহই
ভাল জানেন ।
আপনার চিন্তার গভীরতায়
দেখে অনেক ভাল লাগল ।
ঐকমত্য হারিকেনের চিন্তার গভীরতা অনেক।
অসাধারণ! মনকে ছুঁয়ে দিলো পোস্টটি! অসম্ভব ভালো লাগলো!!
অল্লাহ আপনার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিক!! আমীন!!
আমীন! জাযাকাল্লাহু খাইরান!!
আপনার চিন্তার গভীরতায় দেখে অনেক ভাল লাগল ।
পবিত্র লিখেছেন :
অসাধারণ! মনকে ছুঁয়ে দিলো পোস্টটি! অসম্ভব ভালো লাগলো!!
অল্লাহ আপনার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিক!! আমীন!!
===============
এবার আমার পালা
===============
যাক ধন্য মনে হইছে আমার নিজের একজন হলেও আমার লিংক কাজে লাগাইছে। আলহামদুলিল্লাহ!
এভাবে একজন মুসলিম আল্লাহর দেয়া সরল পথে থাকতে পারে আর উদাহরন হিসেবে তোমর নিজের+নফসের কথাগুলো স্বরন রাখলেই যথেষ্ট হবে বলে আমি মনে করি।
আল্লহা তোমার জ্ঞানকে আরো বৃদ্ধি করুন।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
এই নাও তোমার প্রিয়
তোমার কথাগুলো বেশ ভালো লেগেছে দাদা..... যাজাকাল্লাহু খাইর সুন্দর দোআটি যেন আল্লাহ্ তোমার জন্যও কবুল করেন
=====================
নাও তোমারটাও নকল করে দিলুম..
=====================
এখন খুশিতো...........
পালতে হইবে ১২ বছর তার পরে বিয়া
হাতে কলমে শিখাইবা যেমন তোমার দরকার...কি রাজি...
হতভাগা ভাইয়ের ছবি পার্থক্য হাতে গোনা কয়েকটা বাদ দিয়েছি।
আসলেই তো!!!!!
অনেক শুকরিয়া পোস্ট শুধু পড়ার লক্ষে নয় চিন্তার লক্ষে পড়লে অনেক কিছু শিখা যায়। আল্লাহ আপনার জ্ঞানকে আরো বারিক দিক ,,আমিন
শুভেচ্ছা সতত।
হা দৃস্টিভঙ্গি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
খুব ভালো লাগলো পিলাচ। +++++++++++++++++++++
এমন চিন্তা পজিটিভ থিংকিং সত্যিই ভালো।
থাংকু।
আপনাকে আমার ব্লগে দেখে ভীষণ খুশি লাগলো আসেন দাদুজান একটা ডিম খান
যে কয়েকটা আয়াত মুখস্ত করেছিলাম তার মধ্যে এ আয়াত কয়েকটা একটু ব্যতিক্রমভাবে ভালো লাগে –
ইয়া আইয়্যাতুহান নাফসুল মুতমাইন্নাহ
ইরযিই ইলা রাব্বিকি রাদিয়াতাম মারদিয়্যাহ
ফাদখুলি ফি ইবাদী
ওয়াদখুলি জান্নাতী
আচ্ছা ভাইয়া...... আপনার নামটার অর্থ কি?
আপনার মন্তব্যটা দেখে চিন্তার মধ্যেও ভিন্নরকম আনন্দ ফীল করলাম... ধন্যবাদ প্রিয় আপুনিটি আমার
আসলে বিস্তারিত
বুঝতে পারবেন....
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/4081/kala/52132#.U_9kiMuoVAg
আমার ভয় হচ্ছে, আবার অন্য কেউ এসে আপনাকে লাস্টু হওয়া থেকে বঞ্চিত করে দিবে কি না
মন্তব্য করতে লগইন করুন