রাজপথে গড়াচ্ছে রাজনীতি

লিখেছেন লিখেছেন যায়েদ ভাই ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:১৪:৫৫ বিকাল

২৪ অক্টোবরের পর রাজপথ

দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ

ও বিএনপি।

ফলে রাজনীতি গড়াচ্ছে রাজপথে।

২৫ অক্টোবর

রাজধানীতে বিশাল

শো ডাউনের

ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর

আওয়ামী লীগ। অন্য দিকে প্রধান

বিরোধী দল

বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের

ঘোষণা না দিলেও

ভেতরে ভেতরে ওই দিন

রাজধানী দখলে রাখার

সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনটি জায়গায় সমাবেশের

অনুমতি চেয়ে গতকাল

ঢাকা মহানগর

পুলিশকে চিঠি দিয়েছে দলটি।

রাজপথ

ছেড়ে দেবে না আওয়ামী লীগ :

বিএনপি নেতৃত্বাধীন

বিরোধী জোট মোকাবেলায়

মাঠে নামছে ক্ষমতাসীন

আওয়ামী লীগ।

আগামী নির্বাচন

সামনে রেখে কোনোভাবেই

বিরোধীদের রাজপথ

ছেড়ে দেবে না তারা। দলটির

নীতিনির্ধারকেরা বিরোধী দলের

অস্থিরতা সৃষ্টির

যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে বদ্ধপরিকর।

ঈদের পর অক্টোবরের সম্ভাব্য

রাজনৈতিক ঝড় যাতে বড়

কোনো আঘাত

হানতে না পারে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ

সতর্কতা অবলম্বন করছে তারা।

সেই লক্ষ্যে চলছে প্রশাসনিক ও

সাংগঠনিক প্রতিরোধের

সর্বাত্মক প্রস্তুতি। এর অংশ

হিসেবে বহুল আলোচিত ২৪

অক্টোবরের পরদিন ২৫ অক্টোবর

রাজধানীতে সমাবেশ

কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীনেরা।

গতকাল ঢাকা মহানগর

আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত

সভা থেকে এ

কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

আওয়ামী লীগের একাধিক

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়,

সংবিধান অনুযায়ী দলীয়

সরকারের অধীনে নির্বাচন

আয়োজনে সরকার বদ্ধপরিকর।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

অধীনে এ

নির্বাচনে বিরোধী দল

বিএনপি না এলে একক

নির্বাচনের পথেই

হাঁটবে তারা। এ

ক্ষেত্রে বিরোধী দলের

‘বিশৃঙ্খলা’

রোধে নেতাকর্মীদের

নামে মামলা, পুলিশ বাহিনীর

সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ ও

নানা ধরনের রাজনৈতিক

কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মাঠ

দখলে রাখার গুচ্ছ

পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যেই

রাজধানীতে বিএনপির

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড

পুলিশি জালের মধ্যে সীমাবদ্ধ

করে রাখা হয়েছে। উন্মুক্ত সভা-

সমাবেশে চলছে অলিখিত

নিষেধাজ্ঞা। কোনো ধরনের

অনুমতি নিয়ে মাঠে দাঁড়াতে পারছে না বিরোধী জোটের

অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতও।

আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এ

অবস্থা বহাল রাখার

পরিকল্পনা সরকারের।

পাশাপাশি সাংগঠনিক

কর্মসূচি নিয়ে মাঠ

দখলে রাখতে চায় তারা।

বিশেষ করে রাজধানী ও

বিভাগীয় শহরগুলোতে দলীয়

অবস্থান মজবুত করতে চায়

আওয়ামী লীগ। এর অংশ

হিসেবে রাজপথে মিছিল,

সমাবেশ, মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন

রাজনৈতিক

কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকবেন

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

বিশেষ করে বিরোধী দল

যাতে ফাঁকা মাঠে গোল

না দিতে পারে সে জন্য

সরকারবিরোধী কর্মসূচির

পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে মাঠে থাকবেন

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

দলের বিভিন্নপর্যায়ের

নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত

করেছেন। সূত্র জানায়,

আগামী ২৫ অক্টোবর

রাজধানীতে সমাবেশ করার

গোপন সিদ্ধান্ত

রয়েছে বিরোধী দল বিএনপির।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

ইতোমধ্যেই সেই সিদ্ধান্তের

কথা জেনেছে। সে জন্য ওই

সমাবেশের

পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করতে গতকাল

তড়িঘড়ি বর্ধিত সভা ডেকে ওই

দিন রাজধানীতে সমাবেশের

ডাক দিয়েছে মহানগর

আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়

কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ

হবে। গতকাল ঢাকা মহানগর

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত

সভাপতি এম এ আজিজের

সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর

আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়

কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য

রাখেন আওয়ামী লীগ

সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও

কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র

মোহাম্মদ নাসিম, মহানগর

আওয়ামী লীগের সাধারণ

সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন

চৌধুরী মায়া, আইন

প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট

কামরুল ইসলাম, মহানগর

আওয়ামী লীগের

সহসভাপতি কামাল আহমেদ

মজুমদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক

হাজী মো: সেলিম, সাংগঠনিক

সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, প্রচার

ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল হক সবুজ,

দফতর সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মিলন

প্রমুখ। মোহাম্মদ নাসিম বলেন,

আগামী ২৪ অক্টোবর

দেশে ভয়াবহ বিপর্যয় আসার

কোনো আশঙ্কা নেই। ওই দিন

কিছুই হবে না। বিরোধী দল

নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও

নির্বাচন হবে। আর

যদি কোনো কারণে নির্বাচন

না হয়, তাহলে সংবিধান

মোতাবেক দেশ পরিচালিত

হবে। মোফাজ্জল হোসেন

চৌধুরী মায়া কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন,

ওরা (বিএনপি-জামায়াত)

যে কর্মসূচি দেবে আমরা তার

পাল্টা কর্মসূচি গ্রহণ করব।

তিনি বলেন, ঈদের পর

ধারাবাহিকভাবে আরো কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলন

চালিয়ে যাবে বিএনপি : এ

দিকে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে,

নির্দলীয় সরকার

বহালে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার

‘সর্বশেষ’ আলটিমেটাম

দিতে যাচ্ছে বিএনপি।

আগামী ২২ অক্টোবর বরিশালের

জনসভা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন

বেগম খালেদা জিয়া ৪৮ ঘণ্টার

এই আলটিমেটাম দেবেন। ২৪

অক্টোবরের মধ্যে নির্দলীয়

সরকার বহালের

দাবি মেনে নেয়া না হলে রাজপথে গড়াবে চূড়ান্ত

আন্দোলন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ অক্টোবর

ঢাকার সমাবেশ

থেকে সরকারকে বেকায়দায়

ফেলার মতো কঠোর

কর্মসূচি দেয়া হবে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে,

নির্দলীয় সরকারের

দাবি আদায়ে সারা দেশকে অন্তত

৪০ ভাগে ভাগ করে ওই সব

স্থানে অবরোধ

সৃষ্টি করবে বিএনপি। ২৫

অক্টোবরকে ‘ডেডলাইন’ ধরেই এ

ধরনের কর্মসূচিতে যাওয়ার

পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। এর

মাধ্যমে সারা দেশ

থেকে ‘ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন’

করে দিতে চায় তারা।

ঢাকাকে সারা দেশ

থেকে বিচ্ছিন্ন করার

পরিকল্পনার পাশাপাশি একই

সময়ে রাজধানীতে টানা অবরোধের

ডাকও দিতে পারে দলটি।

সারা দেশে যখন আন্দোলন

দানা বাঁধবে তখন

রাজধানীতে মূল আঘাত

হানা হবে। ঢাকার কর্মসূচি সফল

করার মূল

দায়িত্বে থাকবে ঢাকা মহানগর

বিএনপি এবং ছাত্রদল, যুবদল ও

স্বেচ্ছাসেবক দলের হাতে।

এ েেত্র যতটা ‘কঠোর’ হতে হয়,

ততটাই হবেন নেতাকর্মীরা।

সর্বোচ্চ সাত দিনে ‘প্রাণপণ’

আন্দোলনের ‘ফল’ পেতে চায়

দলটি। বিএনপির

পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে দলের

স্থায়ী কমিটির এক

প্রভাবশালী নেতা বলেন,

প্রতিটি বিভাগ থেকে ঢাকার

প্রবেশপথের রাস্তাকে ভাগ

করা হবে। এ সংখ্যা আপাতত ৪০।

অর্থাৎ চট্টগ্রাম, রাজশাহী,

খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর

বিভাগগুলো যে পথ ধরে ঢাকায়

এসেছে, সেগুলোকে ভাগ

করে দেয়া হবে। এ

ছাড়া জেলা ও

মহানগরপর্যায়েও কয়েকটি স্পট

থাকবে। এসব

স্থানে নেতাকর্মীরা অবস্থান

নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করবে।

কেন্দ্রীয় সাত নেতা সাত

বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন।

বিএনপি নেতারা বলছেন,

তারা সারা দেশের

৪০টি পয়েন্টে অবরোধ

সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করলেও

নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ

স্বতঃস্ফূর্তভাবে আরো অনেক

জায়গায় অবরোধ করবেন।

ইতোমধ্যে ঢাকার

বাইরে কয়েকটি জনসভায়

বিএনপি চেয়ারপারসন

খালেদা জিয়া আগামী ২৪

অক্টোবরের পর হরতাল, অবরোধ

এবং ঘেরাও

কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জানা গেছে, ২৫ অক্টোবর

ঢাকায় সমাবেশ নিয়ে গতকাল

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয়

কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার

মিটিং করেছেন দলের

ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,

ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক

হোসেন খোকা, মহানগর

বিএনপির সদস্যসচিব আবদুস

সালাম। ওই বৈঠক

শেষে রাজধানীর নয়াপল্টন,

পল্টন ও

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৫

অক্টোবর সমাবেশের

অনুমতি চেয়ে ডিএমপি বরাবর

চিঠি দেয়া হয়।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসেন

আন্দোলন

কর্মসূচি প্রসঙ্গে নয়া দিগন্ত

বলেছেন, সংসদের

চলতি অধিবেশনে সরকার

কী করে, আমরা তা দেখছি।

সরকার

দাবি না মানলে যা যা করা দরকার

তা-ই করা হবে। দলটির

নেতারা এ-ও মনে করেছেন,

সরকার ও বিরোধী দলের

মধ্যে আলোচনার

মাধ্যমে অথবা বিদেশীদের

চাপে চলমান রাজনৈতিক

সঙ্কটের সমাধান হবে না।

সমাধান রাজপথেই হবে।

বিএনপি নেতারা বলছেন,

ধীরে ধীরে পুলিশ ও প্রশাসনের

ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।

২৫ অক্টোবরের পর সব

প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের শত

ভাগ নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।

কর্মসূচি প্রণয়নে এই

বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

কারণ ওই সময়

নেতাকর্মীরা শতভাগ ‘ঝুঁকি’

নিতে চাইবে। ওই সময়

নেতাকর্মীদের

সাথে বিএনপি চেয়ারপারসন

খালেদা জিয়াও

রাজপথে থাকবেন।

বিষয়: রাজনীতি

১২৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File