ভারত ই আমাদের প্রকৃত বন্ধু, এই হচ্ছে তার নমুনা!!
লিখেছেন লিখেছেন অরণ্যে রোদন ০২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:৪৮:১৯ রাত
বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতার মাশুল দেবে বাংলাদেশ! আগামী ডিসেম্বর থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানা কেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে। এটি নির্মাণের মালামাল পরিবহনে বিনা মাশুলে ‘ট্রানজিট’ সুবিধার দেয় বর্তমান সরকার। কথা ছিল তাদের কাছ থেকে সুবিধামতো মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। কিন্তু এখন বর্তমান মূল্যের চেয়ে বেশি দাম চাইছে ত্রিপুরা সরকার।
এখন ভারত থেকে আনা বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি গড় মূল্য পড়ছে চার টাকা। কিন্তু ত্রিপুরার বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের (কিলোওয়াট/ঘণ্টা) মূল্য হিসেবে ৬ টাকা ৩৪ পয়সা (আট সেন্ট) চাওয়া হচ্ছে।
২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর ভারত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়। ভারত থেকে দৈনিক ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে।
এভাবে মানুষ চলাচলের রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
উল্লেখ্য, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ৭২৬ মেগাওয়াটের পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারি যন্ত্রপাতি পরিবহনে ‘ট্রানজিট’ সুবিধা দেয় বাংলাদেশ। কেন্দ্র নির্মাণের মালামাল নেয়া শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের মার্চ থেকে। আগস্ট পর্যন্ত ১৪টি চালানে ভারি যন্ত্রপাতি ত্রিপুরা নেয়া হয়। আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে লম্বা ট্রেলারে করে যন্ত্রপাতিগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ওপর দিয়ে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ত্রিপুরার আগরতলায় যায়। এতে করে স্থানীয় রাস্তা ও নদী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ওই সময় ত্রিপুরা রাজ্য সরকার এ কেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘কৃতজ্ঞতাস্বরূপ’ বাংলাদেশকে এ কেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেয়া হবে।
আগামী ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এখন এসে বেশি চাচ্ছে ত্রিপুরা। ফলে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ চূড়ান্ত হয়নি। সর্বশেষ নয়াদিল্লিতে দুই দেশের বিদ্যুৎসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। গত ২৭ ও ২৮ নভেম্বর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা দেশে ফিরে বাংলামেইলকে বলেন, ‘ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। ডিসেম্বরেই আমাদনি শুরু হতে পারে। তবে দামের বিষয়টি ঠিক না হওয়ায় বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
ওই কর্মকর্তা জানান, আগে ইউনিট প্রতি ৯ সেন্ট ( ৭ টাকা ১৩ পয়সা) চাইলেও সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আট সেন্ট এ নামে ভারত। বাংলাদেশ প্রতি ইউনিটের জন্য ৬ সেন্ট (৪ টাকা ৭৫ পয়সা ) দিতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের প্রস্তাবে এখনো রাজি না হলেও বিষয়টি ভেবে দেখার কথা জানিয়েছে ভারত।
ভারতীয় ট্রেলারের জন্য রাস্তা প্রস্তুত করার দৃশ্য
এ বিষেয়ে বিদ্যুতের ক্রেতা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলামেইলকে বলেন, ‘এখন আমরা ভারত থেকে যে বিদ্যুৎ আনছি তাতে গড়ে ৪ টাকা (৫ সেন্ট) খরচ হচ্ছে। সেখানে ত্রিপুরার ১০০ মেগাওয়াটের জন্য ৬ সেন্ট দিতে চাইছি। তাতেও রাজি নয় ভারত। তাহলে একে “কৃতজ্ঞার বিদ্যুৎ” বলি কী করে?’
ইতিমধ্যে ত্রিপুরার সুরজমনি নগর থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করেছে পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (পিজিসিআইএল)। আর বাংলাদেশের ভেতরে আরও ৪৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।
ভারতে থেকে আমদানি করা ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ২৫০ মেগাওয়াট আসছে সে দেশের সরকারি খাত থেকে। এর দাম পড়ছে প্রতি ইউনিটে সাড়ে চার সেন্ট (তিন টাকা ৫৬ পয়সা)। আর ২৫০ মেগাওয়াট বেসরকারি কোম্পানির কাছ থেকে কিনে আনা হচ্ছে। এর জন্য প্রতি ইউনিটের ব্যয় সাড়ে পাঁচ সেন্ট (চার টাকা ৩৬ পয়সা)।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর থেকে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হয়ে এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়।
( বাংলা মেইল থেকে)
বিষয়: বিবিধ
১২২৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন