সামাজিক অবক্ষয় নাকি অন্য কিছু?বলার ভাষা নেই
লিখেছেন লিখেছেন অরণ্যে রোদন ০৮ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫৬:০৫ দুপুর
রংপুরের মেডিকেলের পূর্বগেটে ডাস্টবিনে একটি নবজাতকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
......পাষণ্ডরা ওকে দুমড়ে মুচড়ে ভাজ করে ছোট একটি ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলে গেছে।
.
গতমাসের ঘটনা, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের ডাস্টবিনে একটি নবজাতককে ফেলে যায় পাষন্ডরা।
...... ডাস্টবিন থেকে লাশটি একদল কুকুর টেনে হেঁছড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে। এরপর খাওয়া শুরু করে। কুকুরের সাথে যোগ দিয়েছিলো কাঁকও। প্রায় অর্ধেক খাবার পর পথচারীরা বাকি অংশ মাটিচাপা দেয়।
.
গতমাসেই (১২ অক্টোবর), রাজধানীর মীরপুরে ২দিন বয়সী ফুটফুটে এক ছেলে নবজাতকের লাশ পাওয়া যায় ডাস্টবিনে। একই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কাগজের বক্সের ভেতরে আনুমানিক একদিন বয়সের আরও একটি নবজাতক ছেলের লাশ পাওয়া যায়। ঐ দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতির ঝিলে পাওয়া যায় আরেক নবজাতকের লাশ।
.
গত সপ্তাহের (৩১ অক্টোবর) ঘটনা, মোহাম্মাদ পুরের আজিজ খান রোড শ্মশান ঘাট এলাকায় এক নবজাতককে পাওয়া যায়।
......আনুমানিক মাত্র ১ দিন বয়সের নবজাতকটি একটি কার্টনের ভেতর কাপড়ে মোড়ানো ছিলো।
.
গত বছর, রাজধানীর হাজারীবাগের রাস্তার পাশে ঝোপঝাড় থেকে পাওয়া যায় এক জীবিত নবজাতককে। পরে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
.
উত্তর যাত্রবাড়ীর বিবির বাগিচা এলাকায় ডাস্টবিনে একসাথে ৪ নবজাতকের লাশ পাওয়ার ঘটনা ওই এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো।
...... ৪টির মধ্যে একটির বয়স ছিলো আনুমানিক ৩৬ সপ্তাহ আর আরেকটির বয়স ৩২ সপ্তাহ। অপর দুটির ভ্রুণের বয়স ও লিঙ্গ সবই ছিলো অস্পষ্ট।
.
ঢাকার রূপনগর আবাসিক এলাকার ৩১ নম্বর রোডের একটি ডাস্টবিনে এক নবজাতকের লাশ পাওয়া যায়।
.......দুটি চোখ খুলে ঝুলে আছে। ধারনা করা যায় গলায় অনেক জোরে টিপে ধরেই হত্যা করা হয়েছিলো বেবিটাকে।
.
নবীগঞ্জে একটি ডোবায় একটি নবজাতকের মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। কোন কিছুতে না মুড়িয়েই মানুষরুপি জানোয়ার তাকে ছুড়ে ফেলেছে ডোবায়। মাছেরা ওকে ঠুকরে ঠুকরে খাচ্ছিলো।
.
কিছুদিন আগেই, ঢাকায় ডাস্টবিনে পড়ে থাকা এক জীবিত নবজাতকের হাতের আঙুল ও নাকের মাংস খেয়ে ফেলেছিলো কুকুর। এরপর কিছু মানুষের কল্যানে তার জায়গা হয় ঢাকা মেডিকেলে। প্রাণে বেঁচে যায় পিচ্চিটা...
.
উপরের এগুলো অল্প কিছু খন্ডচিত্র মাত্র.....
সারাদেশে ২০১৩ তে ৬৯ টি, ২০১৪ তে ১২৩ টি নবজাতককের মৃতদেহ ডাস্টবিন, ডোবা, ঝোপঝাড়ে পাওয়া যায়। যার সংখ্যা ২০১৫ তে প্রায় ২০০ এর কাছাকাছি!!
.
আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামেই প্রতিমাসে গড়ে ১১ টি নবজাতকের লাশ দাফন করা হয়। আর শুধুমাত্র ঢাকা মেডিকেলেই প্রতিমাসে প্রায় ২০+ নবজাতকের মৃতদেহ জমা হয় DNA টেস্টের জন্য!!!
.
এসব দেখে ঘৃণা জন্মায় না বরং কষ্ট লাগে...
কষ্ট লাগে এই বাচ্চাগুলোর জন্যে। যাদের জন্মের পরেই হতে হয় বর্জ্য।
.
এ বর্জ্য বড় লোকের ক্ষণিক আনন্দের বর্জ্যই হোক, কোন পাপিষ্ঠ ধর্ষকের সুখ বর্জ্য হউক আর ছোট লোকদের সস্তা বিনোদনের বর্জ্যই হোক.....
.
প্রশ্ন জাগে মনে, বাচ্চাগুলোর অজ্ঞাত সেই জন্মদাতারা কখনো কি বিবেকের দংশনে জর্জরিত হবে?
.
খুব জানতে ইচ্ছে হয়, বিধাতার অন্তিম বিচারের দিন শাস্তিস্বরূপ কথিত জন্মদাতাদের চেহারাগুলো কি দেখতে কুকুরের মতো হবে???
.
দৃশ্যত এবং কার্য্যত তাদের মধ্যে আদৌ কোনো বৈসাদৃশ্য/পার্থক্য আছে কি...???
বিষয়: বিবিধ
১৫১৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেয়ামতের দিন যদি আল্লাহ সুযোগ দেয় তো এই সমাজের পতিসম কীটগুলোর অবস্থাও দেখার শখ থাকল৷ধন্যবাদ৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন