কুর’আনে প্রযুক্তি [পর্ব-০৪] :: সম্প্রসারিত মহাবিশ্ব

লিখেছেন লিখেছেন অরণ্যে রোদন ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ০৬:৫৯:৪৬ সন্ধ্যা





আসসালামুআলাইকুম ও শুভেচ্ছা সবাইকে

তাত্বিকগতভাবে প্রতিভাবান বিজ্ঞানী আইনেষ্টাইন প্রথম “সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের” মডেল উপস্থাপনা করেন, সে সময়টা মানুষ মহাবিশ্বের স্থিরতায় বিস্বাসী ছিল, তুখোর বিজ্ঞানী আইনেষ্টাইন তা বিস্বাস করতেননা, তিনি সবার নিকট সম্প্রসারিত মহাবিশ্বের তত্বটা প্রন্তাবিত করেন, যা বেশিরভাগ প্রথাগত বিজ্ঞানীরাই হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। মহাকাশ বিজ্ঞানীগণ শতাব্দীর বিশ দশক পর্যন্ত ধারণ করতেন যে, মহা বিশ্ব স্থির রয়েছে। অর্থাৎ এর কোন শুরুও নেই পরিবর্তন নেই। তাদের কাছে প্রকৃত সত্য তখনো এসে পৌঁছেনি। বিংশ শতাব্দির গোড়ার দিকে রাশিয়ান পর্দাথবিদ Alexander Friedman এবং বেলজিয়ামের মহাবিশ্বতত্ববিদ George Lemaitre থিওরি দিয়ে বা তত্বগতভাবে গননা করে দেখেন যে এই মহাবিশ্ব অবিরত গতিময় হচ্ছে, অর্থাৎ এর গতি সময়ের সাথে সাথে কমছেনা বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯২৯ সালে পর্যবেক্ষনমূলক তথ্যের মাধ্যমেও এব্যাপারে নিশ্চিত প্রমানিক হয়। আমেরিকান জ্যের্তিবিদ Edwin Hubble টেলিস্কোপ পর্যবেক্ষন প্রমানের মাধ্যমে আবিষ্কার করেন প্রতিটি নক্ষত্রমন্ডলী আর গ্যালাক্সীগুলো একে অপর হতে দুরে সরে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, এ মহাবিশ্বে প্রতিটি অংশই পরস্পর থেকে দুরে সরে যাচ্ছে। যা আমরা বিখ্যাত বেলুন সুত্রে দেখতে পাচ্ছি (সুত্র: ছবি)। পরে এ আবিষ্কারকে জ্যের্তিবিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আবিষ্কার বলে ঘোষনা দেয়া হয়। এই সুচারু observation-এর সময় হাভেল দেখলেন নক্ষত্রগুলো পরস্পর হতে সরে যাচ্ছে ও ক্রমাগত নিষ্প্রভ হয়ে যাচ্ছে, তা পদার্থবিজ্ঞানের সুত্রানুযায়ী নিকটবর্তী কাছের নক্ষত্রগুলো থাকে উজ্জল বেগুনি রঙের কিছু সময়কাল পর্যবেক্ষন পর দেখা যায় তা লালচে রঙ ধারন করেছে এবং আরো বেশ কিছু সময় পর এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাছে অর্থাৎ সেটি দুরে... হারিয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর এভাবে গবেষনার পর পরিশেষে আধুনিক বিজ্ঞান আবিস্কার করেছে যে, মহা বিশ্ব ক্রমান্বয়ে সুষমভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে অর্থাৎ গ্যালাক্সিগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ২০১১ সালে দুজন মার্কিন মহাকাশ-পদার্থ বিজ্ঞানী আবারো ভিন্ন আঙ্গিকে প্রমান করেন এই মহাবিশ্বের সম্প্রসারন গতি দ্রুত হতে দ্রুততর হচ্ছে , এই যুগান্তকারী তথ্যবহুল বিস্তারিত বিশ্লেষনের জন্য তারাঁ যৌথভাবে নোবেল পুরষ্কাররে সম্মাননা অর্জন করেন।

এছাড়াও বহু বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানীগণ মহা বিশ্বের এই সম্প্রসারন সমর্থনে বহু বাস্তব থিওরি পেশ করেছেন যা অস্বীকার করার মত নয়। অথচ পবিত্র কুরআন তাদের এই আবিষ্কারের বহু পূর্বে নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে এই মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ তথ্যটি জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে যা সর্বতোতভাবে গ্রহনযোগ্য। ১৪০০ বছর পূর্বে জ্যের্তিবিদ্যা ছিল অপরিপক্ক,অথচ এই তথ্য কুরআনে উল্লেখ রয়েছে সুরা জারিয়াত-৫১:আয়াত-৪৭-

“আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে মহাকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছি আর আমি নিঃসন্দেহে তা প্রসারিত করছি।।”

সুবিখ্যাত মহাকাশ পদার্থবিজ্ঞানী Stephen hawking তাঁর বিখ্যাত বই ’A brief history of time’-এ বলেন-দ্বাদশ শতাব্দিতে এটাই সবচাইতে বড় বৈপ্লবিক আবিষ্কার। পবিত্র কুরআন সম্প্রসারিত বিশ্ববক্ষান্ডের তথ্য এমন একটা সময়ে প্রকাশ করছে যখন মানুষ টেলিস্কোপ বানাতে শেখেনি।

কুরআনের এই বর্ণনাটি সত্যই বিজ্ঞানের চূড়ান্ত রায়ের সাথে হুবহু মিলে যায়। যা শত শত বছর গবেষণার পর বিজ্ঞানীগণ অর্জন করেছেন। তাতে প্রশ্ন দাড়ায় জ্ঞান বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ১৪০০ বছর পূর্বে তা কি রূপে সম্ভব হলো? এই প্রশ্নটি প্রতিটি চিন্তাশীল মানুষকেই ভাবিত করবে এবং এর সঠিক উত্তর পেতে হলে আল-কুরআন যে স্বয়ং আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত ও সর্বশেষ নবীও রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর নাজিলকৃত এক অলৌকিক জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থ তা নির্দ্বিধায় মেনে নিতেই হবে।

আল্লাহ বলেন সুরা ফুসিলাত ৪১:৫৩-

“অচিরেই আমি এদেরকে র্সবত্র আমার নির্দশনসমূহ দেখাবো এবং তাদের নিজেদেরে মধ্যও ৷ তাদের কাছে একথা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এ কুরআন যর্থাথ সত্য এটাই কি যথেষ্ঠ নয় যে, তোমার রব প্রতিটি জিনিষ দেখছেন? ”

বিষয়: বিবিধ

১৪৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File