অদেখা সন্তানের আকুতি " মা আমাকে মেরো না "

লিখেছেন লিখেছেন ম্যাজিক মুনসি ১২ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:০৩:৫৩ দুপুর

কপির মগ হাতে নিয়ে সকালের নরম

রোদে বসে আছে সায়লা আমিন।শিতের সকালের

রোদ তার খুব প্রিয়।ঘরের ভিতর এ রুম থেকে ঐ

রুম দৌড়া দৌড়ি করে মাতিয়ে তুলছে তার তিন

বছরে মেয়ে নিহিতা।

সায়লা খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছে কিন্তু

পারছে না! গতকাল রাতের অপ্রিতিকর ঘটনা তার

মনে পড়ে যাচ্ছে।বার বার মনে হচ্ছে তার

সন্তানের সাথে সে খুব অন্যায় করে ফেলেছে।

তার হাজব্যান্ড ব্যবসার কাজে বাইরে গেছে।

নিহিতার সাথেই গতকাল রাতে ঘুমিয়েছে সে।

হটাৎ করেই সায়লার ঘুম ভেঙ্গে গেল

একটা কোমল কন্ঠের কাতরতায়।সেই

কন্ঠে মিশে আছে বেচে থাকার তিব্র

আকাঙ্খা,মা কে মা বলে ডাকার প্রচন্ড

অভিপ্রায়।সায়লা বিচলিত হয়ে যায়।

-------------------------------------

সায়লার মনে পড়ে সাজ্জাদের কথা যার

সাথে জিবনের ছয়টি বছর কাটিয়েছে।

সায়লা তখন কলেজ শেষ

করে ভার্সিটি তে পা দিয়েছে।মনের

ক্যানভাসে আকা সাদা কালো ছবি গুলো রঙ

পেতে শুরু করেছে।বুকের খাচায়

আটকে রাখা পাখি ডানা মেলে উড়তে শিখেছে।মন

সারা দিন উড়ু উড়ু করতে থাকে।সেই

মুহুর্তে জীবন কে আরো রাঙিয়ে দিয়ে তার

সাথে পরিচয় হয় সাজ্জাদের।পরিচয়

থেকে ভাললাগা।ভাললাগা থেকে ভালবাসা কিন্তু

সেই ভালবাসা খুব বেশিদিন পবিত্র থাকে না।

উদ্দাম যৌবন সমাজের বাধা মানে না।

বাধা পেলে-ই যেন নিয়ন্ত্রন

হারিয়ে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে যায়।মধুরতায়

ভরে উঠে তার জীবন।গভির

থেকে আরো গভীরতা খুজে পায় ভালবাসা।

হঠাৎ একদিন সায়লা নতুন প্রানের উপস্থিতি টের

পেয়ে সাজ্জাদ কে জানায়।সাজ্জাদ

সিরিয়াসলি নেয় না।সে সায়লা কে সান্তনা দেয়

একটা প্রোবলেম হলে ১০টা সলিউসন থাকে।এত

টেন্সান করার কি আছে?

পরের দিন ক্লাস শেষ করে তারা পরিচিত একজন

ডাক্তারের কাছে যায়।শেষ পর্জন্ত সায়্লার

ধারনা-ই ঠিক হল,তাদের তিব্র ভালবাসার ফসল

তিল তিল করে গড়ে উঠছে তার শরিরে।

সমাজ কি স্বীকৃতি দিবে এই ভালবাসার?সমাজের

চোখে এটা নোংরামি ছাড়া আর কিছু-ই নয়।

২টি পথ খোলা আছে হয় সন্তান নষ্ট

করতে হবে নাহয় বিয়ে করতে হবে।

বিয়ে-ই পারে তাদের এই সন্তানের স্বীকৃতি দিতে।

কিন্তু এখানেই সাজ্জাদের

আপত্তি সে প্রতিষ্ঠিত না হয়ে বিয়ে করবে না।

--শুনো সায়লা অসতর্কতার কারনে একটা ভুল

হয়ে গেছে।ভালবাসার জন্য এতটুকু সেক্রিফাইস

করলে কিছু হবে না।

তাছাড়া আমরা তো বিয়ে করবই শুদু একটু সময়ের

ব্যাপার।এভরিথিং উইল বি ফাইন।

সায়লা বুঝে উঠতে পারে না তার এখন

কি করা উচিৎ।কি করে এমন নিকৃস্ট কাজ

করবে তার মত একটা স্বশিক্ষিতা মেয়ে।তার কিছু

নোংরামির

কারনে মা জাতি কে কি করে কলঙ্কিত করবে সে!!

অবশেষে নিজের সাথে যুদ্ধে সায়লা হেরে যায়।

একটা তাজা প্রান কেড়ে নেয় ভালবাসার দোহাই

দিয়ে।

কি আশ্চর্য! কিছু কাক আর

ডাস্টবিনে পড়ে থাকা কুকুর ছাড়া কেউ

বলতে পারবে না এই হত্যার কথা।

কি আশ্চর্য! একটা নিষ্পাপ শিশুর আত্মচিৎকার

শুনতে পাবে না কেউ।

ধিক্বার এই নোংরা ভালবাসা কে।

তার কিছু দিন পর তাদের ভালবাসার গতি পথ

বদ্লায়।আস্তে আস্তে সাজ্জাদ ও হারিয়ে যায়

সায়লার জীবন থেকে।

সেই থেকে সায়লা মাঝে মাঝে গভীর রাতে অস্পষ্ট

একটা আর্তনাদ শুন্তে পায়।

কিন্তু গত কাল রাতে আর্তনাদ অস্পষ্ট ছিল

না সে স্পষ্ট শুনতে পেয়েছে "

মা আমাকে মেরো না,আমি বাচতে চাই,আমাকে মেরো না মা "

---সমাপ্ত---

আর

কতটা নোংরামী করলে ভালবাসা হবে পরিপুর্ন?

আর কত গুলো প্রান কেড়ে নিলে এই

নোংরামি হবে ক্ষ্যান্ত?

বিষয়: সাহিত্য

১৩৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File