অব্যক্ত ভালবাসা
লিখেছেন লিখেছেন ম্যাজিক মুনসি ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:০১:২৭ রাত
রাফির মাঝে একটা কবি কবি ভাব আছে।চুল
গুলো একটু বড় বড়,ঢিলে ঢালা জামা পরে সব
সময়। সারা দিন কেমন একটা ভাবুক ভাব
নিয়ে থাকে। ওর চেহারা টাই এমন নাকি সারা দিন
সত্যি কিছু একটা ভাবে সেটা কেউ
বলতে পারে না।
রাফি ঢাকা কলেজে বাংলা বিভাগে সম্মান চতুর্থ
বর্ষে পড়ছে।হলেই থাকে,বেশির ভাব সময় কলেজ
ক্যাম্পাসেই কাটে।বিকেল
হলে মাঠে বসে খেলা দেখে ,ওর ডান
পায়ে সমস্যা তাই ইচ্ছে থাকলেও
খেলতে পারে না।
আজ ওর মন খারাপ সারা দিন আনিকার
কথা মনে পড়েছে,মাঠে এসেছে একাকিত্ব
টা কিছুটা দুর করতে।কিন্তু একাকিত্ব
তাকে ছাড়তে চায় না। আধার যেমন রাত
কে ঘিরে রাখে,তেমনি একাকিত্ব
তাকে ঘিরে রেখেছে।
একাকিত্ব আর সে যেন একি দেহের অভিচ্ছেদ্য
একটি অংশ।
আনিকার সাথে রাফির পরিচয় নীলক্ষেতে।
অনেকটা নাটকীয় স্টাইলে।
রাফি রিকশা থেকে লাফ
দিয়ে নেমে নিজেকে সামলাতে না পেরে আনিকার
সাথে ধাক্কা খায়।তার পর যা হবার কথা তাই হল
জীবনে প্রথম কোনো মেয়ের হাতে অপমান
হতে হল তাকে।
অপমানের পর্ব শেষে দুই জন বই
কিনতে চলে যায়।
রাফি ঘুরতে ঘুরতে দেখে মেয়ে টা রাস্তার
ধারে একটা বইয়ের দোকান থেকে বই
কিনছে,রাফি ও গেলো চরম ভাব নিয়ে,ভাব
দেখে মনে হচ্ছে ও একাই সব বই কিনে ফেলবে।
ভাব বেশিক্ষন থাকল না।
-এই আপনার কাছে ১০০ টাকা আছে।থাকলে দেন
কাল দিয়ে দিব।
রাফি পড়েছে মহা ঝামেলায়
চিনি না জানি না মেয়ে বলে টাকা ধার দিতে।
কি মুসকিল!! পরে ভাবল ১০০টাকা-ই তো,
বেশি না।কাল দেখা করার লোভে রাফি ১০০
টাকার মায়া ত্যাগ করল।
--তা কাল কোথায়
এসে আপনার টাকা ফেরৎ দিব?
--যে জাগাটা তে ধাক্কা খেয়েছিলাম ওই
খানে আসলেই হবে।
--ঠিক আছে কাল ৫টায় এসে টাকা নিয়ে যাইয়েন।
রাফি ঠিক ৫টা বাজে চলে এসেছে কিন্তু মেয়েটার
আসার কোনো নাম নেই।১০০ টাকা নিয়ে আবার
লাপাত্তা হয়ে গেলো নাতো? ১০০ টাকার জন্য
যত টা না কস্ট হচ্ছে তার চেয়ে বেশি কস্ট
হচ্ছে মেয়ে টা কে দেখতে পাবে না।কি অদ্ভুত
একটা মায়া আছে মেয়ে টার মাঝে।সারা জনম
অপলক চেয়ে থাকলেও মায়া একটুও কমবে না।
(রাফি সৃতির জগতে পায়্চারি করছে)
কি ১০০টাকার জন্য রাতে ঘুম হয় নাই??
মেয়েটার কথায় রাফি বাস্তবে ফিরে আসে।
(মেয়েরা কি সত্যি সত্যি ছেলেদের ভেতর
টা বুঝতে পারে।কাল সারা রাত রাফি আসলেই
ঘুমায়নি,শুদু মেয়ে টার কথা ভেবেছে)
অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে.
রাফি কোনো কথা বলে না মেয়ে টাই অনর্গল
কথা বলতে থাকে।কথা বলতে বলতে কখন
যে তাদের মাঝে বন্ধুত্বের ভাব
চলে আসে তারা কেউ-ই বুঝতে পারে না।
সেই থেকে তারা ভাল বন্ধু!! সময় বাড়ে বন্ধুত্ব
গভীর হয়। রাফির আরো গভীরে যেতে ইচ্ছে করে।
(১ বছর আগে আজ কের দিনে)
আজ রাফি আনিকার সাথে একটা বিশেষ
উদ্দেশ্যে দেখা করেছে কিন্তু
বলতে পারেনি রাতে ফোন
করে বলবে কিনা চিন্তা করতেছে।
অনেক ভেবে ফোন দিল আনিকা কে।
--আনিকা তোমাকে আমার একটা কথা বলার ছিল।
--একটু ফোন টা রাখ তো আমার বান্ধবি কল
করেছে।
রাফি ফোন রাখার আগেই আনিকা অন্য কল
টি রিসিভ করে ফেলে।
--এই কার সাথে কথা বলছিস রে?
--আরে ওই
যে ওই ছেলেটা।
--কোন ছেলে টা?চুল বড় বড় যে ওই ছেলে টা?
--হুমম।
--তোর বয়ফ্রেন্ড জানে?
-হুম জানে।
-কি জানে?
--জানে ছেলে টা একটা পাগল।
রাফি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না।
তারপর থেকে সে আর আনিকার সাথে যোগাযোগ
রাখে নি।
অনেক দিন পর আজ আনিকার কথা খুব
মনে পড়ছে
একরাশ কস্ট বুকে নিয়ে রাফি আকাশের
দিকে তাকিয়ে আছে নির্বাক হয়ে,
একি?আকাশ টাও দেখি তাকিয়ে আছে রাফির
দিকে নির্বাক হয়ে!!
বিষয়: বিবিধ
১১৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন