বাতীর নীচে অন্ধকার ----(২য় পর্ব )

লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ৩০ জুলাই, ২০১৪, ০৬:০৫:১৬ সন্ধ্যা



এই পথ চলা সালমা ও সাজ্জাতের জন্য খুব সহজ ছিল না । বিয়ের আসর থেকে সালমা পালিয়ে যাওয়াতে বর পক্ষের কাছে অপমানীত হয়ে সালমার বাবা লজ্জা, আর আপমান সহ্য করতে না পেরে স্টোক করে সেখানেই মারা যান ।কিছুদিন পর মাও মারা যান ।সেই থেকে আজও পর্যন্ত সালমার ভাই- বোনদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ।

সাজ্জাত ধর্মান্তরিত হওয়াতে তার বাবা, মাও লজ্জা ,রাগে দুঃখে অন্য ছেলে মেয়েদের নিয়ে কলকাতায় চলে যায় ।তারা আর কখনো সাজ্জাতের সাথে কোন যোগা যোগ রাখে নি ।

তারা প্রথমে সংসার শুরু করে সালমার গায়ে যে বিয়ের গয়না ছিল সেগুলো বিক্রি করে ছোট একটা টিনশেটের এক রুমের ঘর ভাড়া করে ।

সালমা ,সাদাতের কারো চাকরি ছিল না ।অনেক চেষ্টার পর সালমা একটা ছোটখাট চাকরি পেলেও সাজ্জাদ থেকে যায় বেকার ।

প্রায় দুই বছরে নিজেরা কষ্ট করে চলে সালমা ২৫ হাজার টাকা জমা করে আর আফিস থেকে ২৫ হাজার টাকা লুন নিয়ে মোট ৫০ হাজার টাকা সালমা সাজ্জাতকে দিয়ে বলে তুমি একটা ব্যাবসা শুরু কর ।

সাজ্জাতের ব্যবসার ভাগ্য ভাল সে আস্তে আস্তে ব্যাবসায় উন্নতি লাভ করতে থাকে ।সাজ্জাতের ব্যাবসা আর সালমার চাকরি মিলিয়ে এখন তাদের অবস্থা বেশ ভাল ।

আত্বীয় পরিজন ছাড়া সাজ্জাত ও সালমার মনে কোন কষ্ট ছিল ।তারা দুজন দুজকে ভালবেসে সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে পথ চলছে এটাই তাদের জীবনের বড় শান্তনা ।

সাজ্জাত ব্যাবসায় দিনে দিনে ভাল উন্নতি করতে থাকে ।কিন্ত তাদের কোন সন্তান হচ্ছে না ।

একটা সন্তানের জন্য দুজনেই ব্যাকুল হয়ে উঠে ।তারা ডাক্তারের কাছে যায় ।ডাক্তার দুজনকেই পরিক্ষা করে কারো কোন সমস্যা না পেয়ে বলে আপনাদের কারো কোন সমস্যা নেই তো আমরা কোন হেল্প করতে পারব না । ধৈর্য ধরেন হবে ।

প্রায় ১২ বছর অপেক্ষার পর সালমা সাজ্জাতের ঘর আলো করে আসে এক কন্যা সন্তান নাম রাখা হয় সুজানা ।

সুজানার জন্মের পর থেকে সাজ্জাতের ব্যাবসায় এত বেশী উন্নতি লাভ করে তাদের আর পিছনে তাকাতে হয় নি ।ঢাকায় বাড়ি কিনে নিজেদের বাড়িতে উঠে ।সালমা চাকরি ছেড়ে দিয়ে সারাক্ষন মেয়েকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকে ।

সুজানা বাবা মায়ের আতি আদরে বড় হতে থাকে।সুজানা ৫বছরে পা দিতেই তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয় ।সুজানা স্কুলে সহপাঠিদের সাথে মিশে বুঝতে শিখে আত্বীয় স্বজন সম্পর্কে ।

সুজানা বাবা মাকে দাদা বাড়ি নানা বাড়ি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করে আমার দাদা বাড়ি কোথায় নানা বাড়ি কোথায় আমি তাদের দেখতে চাই তাদের কাছে যেতে যাই ।

সাজ্জাত সালমা মেয়ের এই ধরনের প্রশ্ন গুলো এড়িয়ে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যায় ।

অনেক চাওয়ার পরে পাওয়া তার উপর একমাত্র সন্তান বাবা মায়ের আদরের কোন সীমা নেই । সুজানার কোন চাওয়াই বাবা মা অপূর্ণ রাখেন না ।

কিন্তু একটা প্রশ্ন সুজানার মনে সব সময় ঘোর পাক খায়।আমাদের কোন আত্বীয় স্বজন নেই কেন ?আমরা কখনো কারো বাসায় যাই না বা কেউ আমাদের বাসায় আসে না কেন ? বাবা মাই কেন এই প্রশ্ন এরিয়ে যায় কেন ?

এই প্রশ্ন মনে নিয়েই সুজানা এস এস সি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয় ।

একদিন সালমা ও সাজ্জাত মেয়েকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন ।সুজানা তার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায় ।

কিন্তু এবার সুজানার মনে উদয় হয় নতুন প্রশ্ন বাবা না হয় তার ধর্ম ত্যাগ করেছে তাই তার বাবা মা তাকে ত্যাগ করেছে মাম্মীর বাবা মা কেন তাকে ত্যাগ করল মাম্মী তো তার ধর্ম ত্যাগ করেনি। তাহলে কেন....................?

দেরীতে হলেও .....পরের পর্ব.......আসবে....ইনশা আল্লাহ ।

বিষয়: বিবিধ

১৭৮৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

249541
৩০ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
বেআক্কেল লিখেছেন : কই আঁই তো দেখি, বাতির নিচে মানে আগুনের নীচে ফকফকা সোনালি রং ধারন কইরা আছে। টিউব লাইটের নিচেই তো আমরা খাই, কর্ম সাড়ি। নিচে যদি অন্ধকার হইত তাইলে মানুুষ কি ঘরে লাইট জালাইত। সবাই দেখছি আমার মত বে-আক্কেল হইয়া গেল। ব্যাপার বুঝলাম না।
৩১ জুলাই ২০১৪ রাত ০১:১১
193959
আলোর আভা লিখেছেন : এইযে ভায়া কে বলছে আপনাকে বেআক্কেল !আমার তো মনে হচ্ছে আপনার আক্কেল একটু বেশি আছে ।
249559
৩০ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২২
আহ জীবন লিখেছেন : পরথম পর্বে কইছিলাম থাইকপ। আছি।
গল্প তো নয় যেন নায়াগ্রা জলপ্রপাত।
২ মিনিটে ৩০ বছর শেষ।
৩১ জুলাই ২০১৪ রাত ০১:২৯
193962
আলোর আভা লিখেছেন : লাখে লাখে মানুষ মরে কাতারে কাতার গুনে দেখি মাত্র কয়েকশ ।

এটা তো একটা গল্প আপনার পুরো জীবনটা চোখ বন্ধ করে একটু কল্পনা করুন দেখুন তো কয় মিনিট লাগে ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ কথা রাখার জন্য ।
249562
৩০ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪০
এবেলা ওবেলা লিখেছেন : আহ জীবন লিখেছেন : পরথম পর্বে কইছিলাম থাইকপ। আছি।
গল্প তো নয় যেন নায়াগ্রা জলপ্রপাত।
২ মিনিটে ৩০ বছর শেষ।
৩১ জুলাই ২০১৪ রাত ০১:২৯
193963
আলোর আভা লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ ।
249723
৩১ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:১৩
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : ঈদ মোবারক আপু।
আমার ঈদের সালামি জমা থাকলো।
শুভেচ্ছা নিরন্তন।
১৮ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
199197
আলোর আভা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ছোটভাই ।
249961
০১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৩০
ভিশু লিখেছেন : বেশ মজার এবং প্যাঁচানো কাহিনী তো? লেখার ধরন দেখে মনে হয় আপনি একজন প্রফেশনাল গল্পকার, মাশাআল্লাহ!
১৮ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২১
199198
আলোর আভা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান ।
266634
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩০
বিদ্যালো১ লিখেছেন : আক অন্য রকম ভাল লাগছে;পরের পর্বের অপেক্ষা .।.।.।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File