বাতীর নীচে অন্ধকার -------
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১৭ জুন, ২০১৪, ০৫:৩৩:০২ বিকাল
সালমা চৌধুরী বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে চোখ বন্ধ করে চলে যান আজ থেকে ৩৫ বছর আগে ।সবে মাত্র এইচ এস সি পাশ করে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ।প্রথম ক্লাসেই পরিচয় হয় শুভর সাথে ।
অতি দ্রতই তাদের মাঝে ঘনিষ্ঠতা হয় ।এই ঘনিষ্ঠতা থেকেই একে অন্যের প্রতি ভাল লাগা ।ভাল লাগা থেকেই ভালবাসা হয় ।
একদিন কথা প্রসংগে সালমা ,শুভকে জিজ্ঞাসা করে শুভ তোমার ভাল নাম কি ?
শুভ : বেশ অবাক হয়ে কেন তুমি আমার নাম জান না !
সালমা : তেমন দরকার পড়েনি তাই জানাও হয়নি ।
শুভ : আমার নাম প্রশান্ত কুমার দাস ।
সালমা : খিল খিলিয়ে হেসে উঠে আমার সাথে ফাইজলামী কর ?
শুভ : না সালমা আমি সত্যি বলছি ।
সালমা অবাক হয়ে শুভর দিকে তাকিয়ে তুমি হিন্দু !
হ্যা সালমা আমি হিন্দুর ছেলে ।
সালমার দু চোখ বেয়ে পানি নেমে পড়ছে আর অবাক হয়ে শুভর দিকে তাকিয়ে থাকে ।
সালমা তুমি কাঁদছ কেন আমি একজন মানুষ তুমি ও একজন মানুষ ।তোমার গায়ের রক্ত যেমন লাল আমার গায়ের রক্ত তেমন লাল ।
সালমা কোন কথাই বলতে পারে না শুধু আমি আসি বলেই চলে আসে ।
সারা রাত সালমার ঘুম আসে না নিজেকে খুব বোকা মনে হয় এত দিনে সে শুভর কোন কথা বা আচরনে সে কেন বুঝতে পারল না শুভ মুসলমান নয় ।
প্রচন্ড মানসিক ধাক্কা খেলে শুভর কাছ থেকে সালমার ফিরে আসা সন্বব নয় ।সালমা শুভকে এত টাই ভালবেসে ফেলেছে যে শুভর জায়গায় অন্য কাউকে কল্পনায় করতে পারে না ।
পরের দিন সকালে সালমা শুভর সাথে দেখা করে ।শুভ আমি তোমাকে ছাড়া বাচব না আবার তুমি হিন্দু আমি এটাও মেনে নিতে পারছি বলে কান্নায় ভেংগে পরে ।
সালমা কেঁদনা আমি কি করতে পারি বল ।
তোমাকে তোমার ধর্ম ত্যাগ করে আমার ধর্ম গ্রহন করতে হবে ।
শুভ খুব সহজ ভাবেই বলে ঠিক আছে আমি তাই করব তবু তুমি কেঁদ না সালমা ।আমি তোমাকে ভালবাসি তোমার জন্য সবই করতে পারি ।
শুভর কথায় সালমা শান্ত হয় মনে কিছুটা সাহস ও পায় ।পরে এক সময় মত শুভ ম্যাজিট্রেট এর কাছে যেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে নতুন নাম রাখে সাজ্জাত চৌধুরী ।যদিও নামেই শুধু মুসলমান হয় তবু শুভর পরিবারের কাছে কথাটা গোপন রাখা হয় ।
সালমার পরিবার থেকে বিয়ের ব্যাপারে কথা তুললেই সালমা পড়া শুনা শেষ না করে বিয়ে করব না এড়িয়ে যায় এভাবেই সালমার মাষ্টার্স পরিক্ষা শেষ হয় ।
এবার সালমার বাবা ,ভাইয়েরা বিয়ের জন্য ব্যাস্ত হয়ে উঠেন । সালমা কোন অজুহাত না পেয়ে বড় ভাবীর কাছে শুভর কথা খুলে বলেন ।
সালমার সব কথা শুনে ভাবী বলেন জানি এ বিয়েতে কেউই রাজী হবেন না তার পরো তুমি বলছ আমি বলে দেখব ।
সুমাইয়া রাতে খাবার টেবিলে শুশুর শাশুরী আর সালমার ভাইদের শুভর কথা বলেন । একথা শুনে সালমার বাবা ও ভাইরা রাগে ফেটে পড়েন । আর নির্দেশ দেন সালমা যেন বাসার বাহিরে না যেতে পারে তাকে চোখে চোখে রাখতে ।
দুই সপ্তাহের ভিতর তারা সালমার বিয়ে ঠিক করেন ।
বিয়ের সমস্ত আয়োজন শেষ ।আত্বীয়-স্বজন , অন্যান্য মেহমান এমন কি বরযাত্রীও এসে উপস্থিত হয়েছেন ,সালমাকেও সাজানো হয়েছে বিয়ের সাজে এই অবস্থায় সালমা এক ফাঁকে পালিয়ে গিয়ে শুভ কে নিয়ে সোজা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করে।
সেই থেকে একসাথে পথচলা শুরু দুজনের -------------------------------------- ।
ইনশা আল্লাহ চলবে---
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৮ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মেঘা সিরিয়ালের মত টার্ন নিতেই পর্ব শেষ।
গুড।
এই বিষয়ের গোরা পইরজন্ত জাইনবার চাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন