ফিরে এসো শান্তির পথে (পর্ব ৫ )
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৪৩:৫৫ রাত
রাহেলার কাছে এই খবর অতিশয় আনন্দের ।তার নারী জীবন হবে সার্থক সে পাবে মাতৃত্বের স্বাধ একজন নাড়ীর কাছে এর চেয়ে পরম পাওয়া আর কি হবে পারে কিন্তু তার এই খুশীর খবরে মীনা হয়ে উঠে আগের চেয়েও ক্ষীপ্ত ।
মীনা সরাসরি বাবার সামনে যেয়ে দাড়ায় ।
এসব কি শুনছি ?বিয়ে করেছ তখন বল্লা বন্ধ্যা মহিলা এখন কেন ল্যান্জা বেড়ায় । তোমার মেয়ে পড়ে ইউনির্ভাসিটিতে তোমার লজ্জা করে না !!
তোমার বউ এর এখন বাচ্চা হবে !! ছিঃ ছিঃ বলে মীনা বাসা থেকে বের হয়ে যায় ।
জাফর সাহেব মেয়ের এই উদ্ধত্ত পূর্ণ আচরনে শুধু অসহায় বাবার মত মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই থাকেন কিছুই বলেন না ।
রাহেলা তখন পাশের রুমেই ছিলেন মীনার কথা গুলো তার কানে যাচ্ছিল ।
রাহেলা মীনার এই আচরনে ভীষন ভাবে কষ্ট পেয়ে অনেকক্ষন কেঁদে নিজেকে হালকা করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন :
হে আল্লাহ, দৃষ্টির অন্তরালবর্তী ও দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল বিষয়ে যেন তোমাকে ভয় করতে পারি হে আল্লাহ তুমি আমাকে ধৈর্য দান কর যাতে আমি ধৈর্য হাড়া হয়ে এমন কিছু না করি যেটা আমার জন্য আর এ সংসারের জন্য অকল্যাণ কর ।
হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রভু তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ আর আমি হচ্ছি তোমার নগন্য বান্দী আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করি।আমার ক্রোধকে দমন করার শক্তি আমায় দাও ।
হে আল্লাহ! তোমারই রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি। সুতরাং এক পলের জন্যও তুমি আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোন মা‘বুদ নেই।আমি যেন সমস্ত সমস্যা ধৈর্য ,সবুর ও বুদ্ধীমত্তার সাথে মোকাবিলা করতে পারি।আমীন ।
এ খবরে দীনা ,যবু ,শুভ সহজ ভাবেই মেনে নেয় ।কিন্তু
মীনা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠে কাউকেই পরোয়া করে না নিজের খেয়াল খুশী মত চলে । ঠিকমত বাসায় থাকে না সকালে বেড়িয়ে যায় আর রাত ৯টা ১০ টার আগে বাসায় ফিরে না । খাওয়া দাওয়া লেখা পড়া ঠিক মত করে না । কয়েক দিন পর পর বাবার কাছ থেকে ২০- ২৫ হাজার করে টাকা চেয়ে নেয় ।
জাফর সাহেব মীনার এই ধরনের আচরনে মীনাকে কিছুই বলতে না পারলেও ব্যাথিত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে ।উনি ভীষন ভাবে হতাশ ও ভেংগে পড়েন ।উনি ভেবেই পান না উনি এখন কি করবেন বা কি করা উচিত ।উনি মাঝে মাঝেই এসব নিয়ে টেনশন করে অস্থির হয়ে পড়েন ।
এই অবস্থায় উনার পাশে এসে রাহেলাই শান্তনা দেয় আপনি এতটা ভেংগে পড়বেন না , আপনি বাবা আপনি আল্লাহর কাছে বেশী করে দোয়া করতে থাকুন নিশ্চয় আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন । আল্লাহ এমন একটা উপায় বের করে দিবেন যাতে মীনা সুপথে ফিরে আসে ।
দীনা ও এব্যাপারে মীনাকে অনেক বুঝায় দেখ খালামনির বাচ্চা হবে এটা তো তার জন্য অনেক খুশীর খবর আমাদেরও খুশী হওয়া উচিত যে তার সাথে আমাদের একটা রক্তের বন্দন তৈরি হবে ।তার বাচ্চা আমাদের ভাই বোন হবে ।
সে যখন আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়েই গেছে তাকে আমাদের ভাল ভাবেই গ্রহন করা উচিত ।খালা মনি তো আমাদের কত আপন করে নিয়েছে আমাদের ও উচিত তাকে আপন করে নেয়া । তার সাথে খারাপ আচরন আমাদের জীবনকে শুধুই জটিল করে তুলবে ।
তুই এমন করে নিজের ক্ষতি করিস না পরে আফসোস করেও কোন লাভ হবে না ।
মীনা দীনার কথাকে কোন পাত্তাই দেয় না ।সে তার নিজের মতই চলতে থাকে ।
রাহেলা মীনার এই আচরনে একা একাই কাঁদেন নিজেকে বড় অপরাধী মনে হয় ,আমার জন্য এমন সুন্দর একটা মেয়ের জীবন এমন করে নষ্ট হয়ে যাবে !
আমার কি কিছুই করার নেই ! রাহেলা শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকেন হে আল্লাহ তুমি আমাকে উপায় বলে দাও আমি কি করতে পারি তুমি আমাকে সাহায্য কর ।
রাহেলা অনেক চিন্তা ভাবনা করে মীনার ইউনির্ভারসিটি কয়েকটা মেয়ের সাথে যোগাযোগ করে তাদের বলে তোমরা একটু আমার মেয়েটাকে দেখ ।
তারা রাহেলার কথা মত কয়েক দিন মীনার পিছনে সময় দিয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে বলে ,খালাম্মা এই মেয়ের পিছনে কাজ করা আমাদের পক্ষে সন্বব না সে আমরা সাথে কথা বলেই না আমরা কথা বলতে চাইলে যা তা ব্যবহার করে এখন আবার পুলিশের ভয় দেখায় । সরি খালাম্মা আমরা পারব না ।
রাহেলা তাদের কথায় হতাশ হয়ে পরলেও নিজের মনেই ভাবে ওরা হাল ছেড়ে দিলেও আমি তো হাল ছেড়ে দিতে পারি না । আমাকে পারতেই হবে এত সুন্দর একটা মেয়ের জীবন আমি নষ্ট হয়ে যেতে দিতে পারি না ।
এ পরিবারের একজন হিসাবে আমার দায়িত্ব মীনার ভাল মন্দ দেখার ।এর জন্য আমাকেও আল্লাহর কাছে দায়ী হতে হবে ।
অনেক চিন্তা ভাবনা করে রাহেলার মাথায় একটা বুদ্ধী আসে । যদিও এটাকে রাহেলার জটিল ও নিজেকেই নিজের বিবেকের কাছে ছোট মনে হয় তবু আর কোন উপায় না দেখে রাহেলা এটাই বেছে নেয় .................।
চলবে --------ইনশা আল্লাহ ।
বিষয়: বিবিধ
১৫২০ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লাকি বেগমদের চেতনার অনুসারী।
যদি পারেন তাকে ফিরিয়ে আনেন আলোর পথে। আর নয়তো তাকে বিয়ে দিয়ে ,একটি পরিবারের শান্তি নিশ্চিত করুন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আল্লাহতায়ালা আপনর মেধা ও কলমে বরকত দিন।আমীন
ভাইজান অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
বাস্তবে যদি কেউ আমার দ্বারা একটুও ভাল হত নিজেকে ধন্য মনে করতাম ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান ।
সুন্দর হচ্ছে গল্পটা আপু।
ভাইজান আপনার মুখে ফুল-চন্দন পরুক ।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।
পড়ের পর্ব কবে আসবে অপেক্ষায় রইলাম।
অনেক ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন