আধাঁরের আলো (পর্ব ১০)
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ২৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:২৫:১৬ সন্ধ্যা
আজকে মোনার শেষক্লাস কাল থেকে শুরু হবে প্রায় তিন মাসের স্যামার ভ্যাকেশন।হাসিনের ভ্যাকেশন শুরু হয়েছে গত সপ্তাহ থেকে।
মোনা হাসিনর মিস কল পেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ীতে বসে হাসিনের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে হাসিনকে জিঙ্গেস করে হাসিন তোমার কি শরীর খারাপ তোমাকে কেমন যেন লাগছে।
হাসিন:না এমনি।
মোনা:হাসিন কালকে থেকে তো আমার ইউনির্ভারসিটি বন্ধ,আজকে আমার আপু আসবে ,আমার বড় ভাইয়াও আসবে আমিতো তাদের সাথে অনেক ব্যস্ত থাকব তুমি না হয় কোথাও থেকে ঘুরে এস।
হাসিন:দেখি চিন্তা করছি কি করব ।
মোনা: জান হাসিন যদিও skype তে প্রায় প্রতি দিনই আমার আপুর সাথে কথা হয় দেখা হয় কিন্তু ৯ বছর পার আমার আপুর সাথে সামনা সামনি দেখা হবে তাই আজকে আমার কত খুশীর দিন আর তুমি মন খারাপ করে আছ তাহলে কি আমার ভাল লাগবে বল।
হাসিন একটা দীর্ঘনিঃস্বাস ছেড়ে মোনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে না আপি আমার মন খারাপ না।
মোনা:হাসিন তোমার চোখ এত লালা হয়ে আছে কেন তুমি রাতে ঘুমাও নি।
হাসিন কিছু না বলে গাড়ি পার্ক করে ।মোনা গাড়ী থেকে নেমে
হাসিন আজকে আর তোমাকে আসতে হবে না আমার হয়ত দুই ঘন্টা লাগবে আমি মেট্টোতে চলে যাব তুমি বাসায় যেয়ে রেষ্ট নাও ।
হাসিন:আপি আমি এখানেই আছি তুমি তারা তারি এস।
মোনা অবাক হয়ে হাসিন তুমি দুই ঘন্টা এখানেই বসে থাকবে।
এবারও হাসিন কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়ে।
মোনা আল্লাহ হাফেজ বলে চলে যায়।হাসিন গাড়ীর জানালা দিয়ে মোনার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে বলতে থাকে ,হে আল্লাহ তুমি তো আলিমূল গায়েব তুমি তো আমার মনের খবর জান আমি তো আপিকে নিয়ে কখনো কোন বাজে চিন্তা করিনি আমার মনে কখনো কোন পাপ কাজ করে নি ।প্রায় নয়টি বছর পাশা পাশি থেকে তার প্রতি আমার যে ভাল লাগা বা ভালবাসা সেটা শুধু তার দ্বীনদারী দেখে।তার মাধ্যমেই আমিও তোমার দ্বীনের আলো পেয়েছি আর সেই আলোকে সারা জীবন প্রজ্বোলিত রাখতে আমি সারা জীবন তার পাশে থাকতে চাই।হাসিন এতটাই তন্ময় হয়ে মনে মনে এসব বলতেছিল যে মোনা এসে হাসিন হাসিন ডাকছে হাসিন শুনতেই পায় না বাধ্য হয়ে মোনা জানালায় নখ করলে হাসিনের তন্ময় ভাঙ্গে ।মোনা গাড়ীতে বসেই হাসিন তারাতারি চল আমার আপু বাসায় এসে পৌচ্ছে।
হাসিন: আপি আমার কোথাও একটু বসি তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে।
মোনা:না হাসিন আজকে না তুমি গাড়িতে বসেই বল।
হাসিন :ওকে বলে গাড়ি স্টার্ট করে আপি একটা কথা বলি।
মোনা:বল
হাসিন: আপি মাম্মার কাছে শুনলাম তোমার নাকি বিয়ে।
মোনা:হেসে হা..সি..ন এটা নিয়ে তুমি মন খারাপ করে আছ।হাসিন আমি তোমাকে সরাসরি কয়েকটা কথা বলি।আমি ইউরুপে থাকলেও আমি ইউরুপিয়ান না।এই ব্যাপারে আমি কোন চিন্তা ভাবনা করিনি,এটা সম্পর্ণ আমার গার্জিয়ানদের ব্যাপার তারা যে সিন্ধান্ত নিবে আমি সেটা মেনে নিব।আমি বিস্বাস করি তারা যে সিন্ধান্ত নিবে সেটা আমার কল্যান ও মঙ্গলের জন্যই নিবে।
আর আমার বিয়ে এখনো কোথাও নির্ধারিত হয়নি,কয়েকটা ছেলের ব্যাপারে কথা হচ্ছে তুমি চাইলে তোমরাও প্রপোজাল দিতে পার তবে সেটা তুমি আমাকে নয়,তোমার বাবা মা আমার বাবা মাকে দিবে আর আমার গার্জিয়ানরা যদি তোমাকে সিলেক্ট করে আমি খুশী হব কারন আমারও তোমাকে ভাল লাগে। আর যদি অন্য কাউকে সিলেক্ট করে সেটা আমার কষ্ট হলেও মেনে নিব।কারন আমি আমার একার খুশীর চেয়ে আমার ফ্যামেলীর সবার খুশীকে প্রাধান্য দিব।তো হাসিন আর মন খারাপ কেন?হাসিন: হেসে না আমার তো মন খারাপ নেই আমি তো তোমার ইচ্ছার কথা জেনেছি।
মোনা: হাসিন তোমার বয়স কম,আবেগ বেশী।বিয়েটা কোন ছেলে খেলা নয় ,সারা জীবনের জন্য ।তাই আবেগ দিয়ে নয় তোমার মেধা দিয়ে চিন্তা করে সিন্ধান্ত নিও।আমি তুমি মুসলমান হলেও ভিন্ন দেশের ভিন্ন পরিবেশের মানুষ।এখন সেটা বুঝা যাচ্ছে না কিন্তু বিয়ের পর দেখা যাবে অনেক কিছুতেই মিলছে না।আরেকটা বিষয় আমি তোমার চেয়ে পাঁচ বছরের বড় আমি এখানে এসেই সব সময় তোমাকে শাসন করে যাচ্ছি সেটা সারা জীবন মেনে নিতে পারবে কিনা এগুলো ভালভাবে চিন্তা করে ডিসিশন নাও।
বাসার সামনে এসে হাসিন গাড়ী ব্রেক করে মোনা গাড়ী থেকে নেমে হাসিন এস আামার আপু দুলাভাই এর সাথে দেখা করে যাও।
হাসিন হাসি মুখে না এখন না আজকে পাপ্পা মাম্মাও আসতে পারবে না কালকে ১১ টায় আমার মেডিকেলের রেজাল্ট পেয়ে একেবারে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসব ইনশা আল্লাহ।
মোনাও হাসিমুখে হাসিনকে আল্লাহ হাফেয বলে দৌড়ে ঘরে আসে.........
চলবে.............।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন