আধাঁরের আলো (পর্ব ৯)

লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ২৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০৭:৩০:০৩ সন্ধ্যা



মরিয়ম বেগম ও জামান সাহেবের এখানে আসার এক সপ্তাহ হয়েছে। এর মাঝে মরিয়ম বেগম একদিন শুধু আনজোম আর আহনাফের অনুরোধে উনাদের বাসা থেকে বেড়িয়ে এসেছেন।

মোনা ইউনির্ভাসিটিতে ।দুপুরে খাওয়া শেষে মরিয়ম বেগম ও জামান সাহেব ছেলে আদনান ও ছেলের বউ রাইমাকে নিয়ে লিবিং রুমে বসেন।

মরিয়ম বেগম ছেলে আর ছেলের বউকে উদ্দেশ্য করে বলেন,তোমাদের দেখে আমার বেশ ভাল লাগছে,তোমরা এখানে সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করছ,বাড়ি গাড়ি সবই করেছ,মোনা তোমাদের সাথে আছে তাকে তোমরা অনেক আদরে রেখেছ।আমাদের দেশে মানুষের জান মালের কোন নিরাপত্তা নেই সেদিক দিয়েও তোমরা ভাল আছ।আর তোমাদের ভাল থাকা দেখে আমি সুখী ও খুশী।মা হিসাবে আল্লাহর কাছে সব সময় আমার সন্তানদের সুখী ও সুন্দর জীবন কামনা করি ।

মরিয়ম বেগম আরো বলেন,বাবা আদনান ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান আর একজন প্রকৃত মুসলমান হতে হলে এটাকে পূর্ণাঙ্গ ভাবেই মানতে হবে।সবই মানলে শুধু একটা না মানলেও তুমি প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে না ।আর ঐ একটা দিক দিয়েই তোমার জীবনে বিপর্যয় আসবে।

আমি যেটা নিয়ে খুবই চিন্তিত ও কষ্ট পাচ্ছি সেটা মোনার হাসিনের সাথে এত ফ্রী ভাবে মেলা মিশা ।হাসিন মোনাকে ইউনির্ভাসিটিতে আনা নেওয়া করছে ,হাসিন যখন তখন বাসায় আসছে,মোনাও ওদের বাসায় যাচ্ছে,হাসিন মোনার মাহরাম কেউ না মোনার যে হাসিনের সাথে পর্দা করা ফরজ এটা তোমরাও খেয়াল করছ না হাসিনের মা,বাবাও খেয়াল করছে না।

ওদের এখন যে বয়স এই বয়সে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে এভাবে ফ্রী ভাবে মিশলে এরা যে কোন ধরনের ভূল করতে পারে ।আর এদের ভূলের জন্য দায়ী হবে এদের যারা গার্জিয়ান।

জামান সাহেব,মরিয়ম বেগমকে বলেন,আরমানের মা এর জন্য তুমি দায়ী ,মোনাকে এখানে পাঠানোর পর থেকেই বলছি চল আমরা যেয়ে নিজের চোখে দেখে আসি ছেলে মেয়ে গুলো কি ভাবে আছে,এখন তুমি ওদের দোষ দিচ্ছ কেন ।ওদেরই বা বয়স কত ওদেরও ভূল ত্রুটি শুধরিয়ে দেয়ার জন্য একজন গার্জিয়ান দরকার।

মরিয়ম বেগম আপনি তো সারা জীবন শুধু আমার দোষই ধরলেন কখনো দেখলাম না ছেলেমেয়েদের একটু শাসন করতে।

জামান সাহেব সেটা তুমি যথেষ্ট করেছ।

মরিয়ম বেগম যাক এসব কথা,এখন আমি আর তোমার আব্বু এসেছি,আরমান ও তোবা আসবে,মোনার বয়স তো প্রায় চব্বিশ হয়ে যাচ্ছে ,আমি চাচ্ছি তারা তারি ওকে বিয়ে দিতে।তোমার আব্বুর নানান ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে কখন কি হয় বলা যায় না তাই আমি আর দেরী করতে চাচ্ছি না।তোমরা মোনার বড় ভাই বোন হিসাবে তোমাদেরও মতামত ও পরামর্শ আছে।আমরা কয়েকটা ছেলের ছবি ও বায়োডাটা নিয়ে এসেছি তোমরা এগুলো দেখ।

মোনা ওানজোম বাসায় ঢুকে মোনা আনজোমকে ড্রয়িং রুমে দিয়ে মোনা মোনা রুমে যায়।

আনজোম রুমে ঢুকেই সবাইকে একসঙ্গে দেখে ,আমি কি

অসময়ে আসলাম তোমরা মনে হয় জরুরী কোন বি্ষয়ে কথা বলছিলে।

রাইমা না আন্টি তা হবে কেন,আব্বু আম্মু মোনার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতেছিল আর কয়েকটা ছেলের ছবি ও বায়োডাটা নিয়ে এসেছে সেগুলো আমাদের দেখাচ্ছে।

একথা শুনে আনজোমের মনের ভিতর একটা ধাক্কা লাগলেও মুখে বলে ঠিকই তো মোনাকে এখন বিয়ে দেয়া দরকার।

রাতে খাবার টেবিলে আনজোম আহনাফ ও হাসিনকে বলে মোনার বিয়ের জন্য মোনার বাবা মা ছেলে ঠিক করছে।ছেলের ছবি বায়োডাটা সবই নেয়ে এসেছে।

এ কথা শুনে হাসিনের চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যায় সে আর খেতে পারে না সে উঠে তার রুমে যায়।

আহনাফ দিলেত আমার ছেলের খাওয়া বন্ধ করে ,এটা কি হাসিনের সামনে না বললে হত না।

না হত না আমার ছেলের কোন ইচ্ছাকে আমি অপূর্ন রাখি নি আমার সাধ্যের ভিতরে হলে রাখব ও না,তার আগে তো আমাকে জানতে হবে ছেলে কি চায়।আমি জানি হাসিন মোনাকে পছন্দ করে আজকে সেটা পূরাপূরি সিউর হলাম। আমি ও মোনাকে অনেক পছন্দ করি ,মোনার মত মেয়ে আমার ছেলের বউ হবে সেটা হবে আমাদের পরম সুভাগ্য।এখন আমি চেষ্টা করব আমার ছেলের বউ হিসাবে মোনাকে এনে দিতে।

আহনাফ জী ম্যাডাম আমি ও চাই মোনাকে আমার আমার ছেলের বউ হিসাবে।

হাসিনের ঘুম আসে না সারাক্ষণ মাথার মধ্যে আপির বিয়ে হবে অন্য ছেলের সাথে ,আপি আমার সাথে কথা বলবে না,আমার সামনে আসবে না, আমার সাথে কোথাও যাবে না ।এটা কি করে সন্বব,এটা হতে পারে না...না...না...।

চলবে...... .।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File