আধাঁরের আলো (পর্ব ৬)
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:৪৯:২৮ বিকাল
সময় গড়িয়ে বছর এর পর বছর ৫ বছর চলে যায় ।মোনা দুই বছরের ভাষা কোর্স শেষ করে কলেজ থার্ড ইয়ার শুরো করে।এতদিনে মোনা ইউরুপের ভাল মন্দ সম্পর্কে ভালই বুঝতে পরে ।
এদের অনেক ভাল দিক আছে কিন্তু এদের খারাপ দিকের তুলনায় ভাল দিক কিছু না।এই ভালর কোন মানেই হয় না।মোনা এভাবে চিন্তা করে এদের খারাপ দিক এরা বেশীর ভাগ কোন ধর্ম পালন করে না,সে বছরের পর বছর লিভটুগেদার করছে বা সমকামী।সে নিয়মিত ড্রিংক ও করে।এরা মা বাবার খোজ করে না ,আত্বীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ নেই। আর এরা মানুষের সামনে যতটা ভাল আসলে ততটা ভাল না।
এরা মানুষ হিসাবে ভাল ,এরা সত্য কথা বলে ,কারো সাথে প্রতারনা করে না,এরা দেশের প্রতি আনুগত্য করে ,মানুষের প্রতি এদের মানবতা আছে,জীব জন্তুর প্রতি দয়া করে,এমন কি এরা একটা গাছের পাতাও ছিড়ে না ।আরো হয়ত কিছু ভাল মন্দ এদের ভিতর আছে আমি এখন ও জানি না।এত খরাপের মাঝে এটুকু ভাল তো কিছুই না ।কাজেই মোনার কাছে মনে হয় এদের সবই খারাপ। এরা ধর্ম হীন এরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে ।মোনা এদের নিয়ে ভাবে না ,মোনার কষ্ট হয় যারা ধর্ম বিশ্বাস করে বিশেষ করে যারা মুসলমান তাদের জন্য।
এখানে বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন কারনে মুসলমানরা এদেশে এসেছে।আসুক আসতে তো কোন আসুবিধা নাই ।মোনার মনে এসব দেশে মুসলমানদের আরো বেশী বেশী আসা প্র্য়োজন ।সাড়া দুনিয়াই তো আল্লাহর ।মুসলমারা এসব দেশে এসে ইসলামের আবাদ করুক।কোরআন,হাদীসে বর্ণিত প্রকৃত মুসলমানের মডেল হয়ে ইসলামকে এদের সামনে তুলে ধরুক।কিন্তু মুসলমানরা তা করছে না ,মুসলমানরা তাদের দেশে অভাবের কারনে হুক আর স্বভাবের কারনে হুক তাদের ভিতর যে খারাপ গুলো ছিল এদের ভাল গুলো দেখে তাদের খারাপ গুলোতো ছাড়ছেই না বরং তাদের নিজেদের খারাপ গুলোর সাথে এদের খারাপ গুলো গ্রহন করার প্রতিযোগীতায় নেমে অনেক ক্ষেত্রে খরাপের দিক দিয়ে ইউরুপীয়ানদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মোনার মনে হয় মুসলমানদের এই অধঃপতন দেখে ইউরুপীয়ানরা খুশীতে দুই হাতে তালি বাজাচ্ছে।ওরা ইসলামের শত্রু ,ওরা ইসলামের ধ্বংস চায়।যদিও তা পারবে না ।খারাপের মাঝেও বিভিন্ন দেশ থেকে কিছু ভাল মুসলমান ও এসেছে।আর তারা কাজ ও শুরো করেছে যদিও তা সীমিত ।তবু মোনার বিশ্বাস ও স্বপ্ন দেখে একদিন এই ইউরুপ মুসলমানদের দখলে আসবে ।হয়ত সেদিন আমি থাকবো না, হয়ত বা সেদিন অনেক দূরে তবু মোনা অনেক জোর দিয়েই বলে ইনশা আল্লাহ সেদিন আসবেই।
হাসিন ক্লাস নাইনে অনেক ভাল রেজাল্ট করে এখানকার সবচেয়ে ভাল কলেজে ভর্তি হয় ।হাসিন অনেক লন্বা স্বাস্থ্য ও খরাপ না,সে ইনটেলিজেন্ট ও স্মার্ট ।তার বয়স সতের বছর হলেও দেখতে মনে হয় একুশ-বাইশ বছরের এক সুর্দশন যুবক।সুভাগ্য বা দূভাগ্য ক্রমেই হোক হাসিনের কলেজ হয়ে যায় মোনার কলেজের একেবারে কাছা কাছি।হাসিন তো এতে মহা খুশী ।হাসিন, মোনার সাথে কলেজে আসা যাওয়া করতে শুরো করে। অনেক সময় দুজনের ক্লাস টাইমের সাথে না মিললে হাসিন এটা কোন না কোন ভাবে ম্যানেজ করে নেয়।
মোনা এটা চায় না ,পছন্দও না কিন্তু হাসিনকে এটা মুখে বলতেও পারছে না।হাসিন বড় হয়ে গেছে,মোনা চায়না আর আগের মত হাসিনের সাথে মিশতে।কিন্তু এক সাথে আসা যাওয়াতে মেট্টোতে বসে হাসিনের সাথে অনেক কথা বলতে হয় ।এই কথা বলার বিষয় যেমন হাদীস কোরআন থাকে তেমনি আরো এমন অনেক বিষয় এসে যায় যেটা মোনা হাসিনের সাথে বলতে চায় না।যদিও মোনা এমন বিষয় গুলো এড়িয়ে গিয়ে অন্য বিষয় নিয়ে আসে। কলেজ থেকে ফেরার পথে মেট্টোতে মুখা মুখী সিটে বসে মোনা নিচের দিকে মাথা দিয়ে ভাবতে ছিল কি ভাবে হাসিনকে বলবে বা কি ভাবে হাসিনের কাছ থেকে দূরে থাকা যায় এসব ভাবতে ভাবতেই হঠৎ মোনা মাথা উচু করলেই হাসিনের চোখে চোখ পরে যায় এতে মোনা হাসিনের চোখে এমন কিছু দেখতে পেয়ে মোনার বুকের ভিতর ধুক করে উঠে............।
চলবে........
বিষয়: বিবিধ
২০৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন