কথার বলতে সতর্কতা
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:৫১:১৩ দুপুর
ইসলামেকটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।একজন মুসলিম এই দুনিয়াতে কি ভাবে জীবন যাপন করবে তার ছোট/বড় সমস্ত বিষয় ইসলাম বলে দিয়েছে।
মানুষের সাথে একজন মুসলিম কী ভাবে কথা বলবে তার মুখের ভাষা কি রকম হবে সে বিষয়ে ইসলাম সুনির্দিষ্ট নিয়ম পদ্ধতি বলে দিয়েছে।একজন মুসলিমকে অবশ্যই বিস্বাস রাখতে হবে যে তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত প্রতিটি শব্দের জন্য তাকে জবাব দিহি করতে হবে।উত্তম কথার জন্য তিনি পুরস্ক্বত হবেন আর মন্দ কথার জন্য তাকে অবধারিত ভাবেই শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন," মানুষ যে কথাই উচ্চারন করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সাথেই রয়েছে।" (সুরা কাফঃ১৮)
রাসুল (সাঃ) বলেছেন,"মুখের কথা খুবই বিপদজনক"(তিরমিজি ও ইবনে মাজা)
রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেন,"বান্দা অনেক সময় এমন কথা বলে যা সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহকে সন্তষ্ট করে ফলে আল্লাহ তায়ালা এর দ্বারা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।আবার বান্দা অনেক সময় এমন অনেক কথা বলেন যা সে গুরুত্ব দেয় না অথচ সেই কথা আল্লাহকে অসুন্তষ্ট করে।ফলে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। ( বুখারী)
কাজেই মুখের কথা দ্বারা আপনি জান্নাত ও পেতে পারেন আবার জাহান্নামে ও নিক্ষিপ্ত হতে পারেন।
তাই ,আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ)এর নির্দেশনা আনুযায়ী ইসলামের সীমা রেখার মধ্যে থেকে আমাদের কথা বলতে হবে।
কথা বলার উদ্দেশ্য হতে হবে উত্তম ।যেখানে উত্তম কথা বলার সুযোগ থাকবে না সেখানে চুপ থাকাই উত্তম।
রাসুল (সাঃ)বলেছেন,"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসে বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে নয়ত চুপ করে থাকে।(বুখারী)
হাসান ইবনে হুমাইদ বলেছে, যখন কোন যুবক বুদ্ধিদীপ্ত হবে সে সলাজ ও আল্লাহ-ভীরু হবে এবং সে কথা বার্তায় পরিমিত ওস্বল্পভাষী হবে।
আমাদের দ্বারা যেমন অনেক সময় অনেক অর্থহীন কাজ সংগঠিত হয় তেমনি কথার বেলায় ও হয়।কথাও কাজের একটা অংশ হয়ত আমরা খেয়াল করি না।
উমর ইবনে আবদুল আযিয সুষ্পষ্ট করে বলেছেন,"যে জানবে যে তার কথা কর্মেরি অংশ সে নিরর্থক কথা থেকে বিরত থাকবে।"
যেমন নিত্যদিনের ঘটনা খাবার,শাড়ী,গয়নার আলোচনা,অন্যের সমালোচনা,গীবত করা এরকম আরো অনেক অর্থহীন বলি যেগুলো না বললে আমাদের কোন ক্ষতি হত না কিন্ত বলার ফলে যে আমাদের শুধু পাপের পাল্লাই ভারী হচ্ছে আমরা সেটা খেয়াল করছি না।
আল্লাহ তায়ালা সুরা মু`মিনুন ৩নং আয়াতে বলেছেন,"মুমিনরা বাজে কাজ থেকে দুরে থাকে"
আল্লাহ আরো বলেছেন,"যখন এমন কোন জায়গা দিয়ে তারা চলে যেখানে বাজে কথা হতে থাকে অথবা বাজে কাজের মহড়া চলে তখন তারা ভদ্রভাবে সে জায়গা অতিক্রম করে চলে যায়।"(সুরা আল ফুরকান,৭২ আয়াত)
সাহল ইবনে সা`দ (রাঃ)বর্ণনা করেছেন।রাসুল(সাঃ) বলেছেন,"যে ব্যক্তি জিহবা এবং লজ্জা স্হানের হিফাযতের জামিন হবে ,আমি তার জান্নাতের জামিন হবো।"--(বুখারী)
মানব দেহের এ দুটো অঙ্গ অত্যন্ত দূর্বল ও বিপদজনক।এ দুটো অঙ্গ দ্বারাই সর্বাধিক পাপ সংঘটিত হয়।তবে আমার মনে হয় লজ্জা স্হানের হিফাযত করা যতনা কঠিন তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী কঠিন জিহবার হিফাযত করা।আমরা আমাদের আশে -পাশে এমন অনেক ব্যক্তিকে দেখি তারা হালাল।হারাম,জুলুম,মদপান,চুরি,ব্যাভিচার,নিষিদ্ধ দৃষ্টিদান ইত্যদি বিষয়ের বাপারে অনেক সর্তক ।অথচ ঐ ব্যক্তি এমন সব কথা বলে যা তাকে নির্ঘাত আল্লাহর ক্রোধে নিপতিত করবে।
কাজেই আমাদেরকে আমাদের কথার ধ্বংসাত্নক পরিণাম ও তার বিপদ সম্পর্কে জানতে হবে এবং তা থেকে বেঁচে থাকার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন