আধাঁরের আলো (পর্ব ৫ম)

লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১০ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:০৯:৫৯ দুপুর



মোনা রাহী ও হাসিনকে এক সাথে আরবী পড়ানো শুরু করে সাথে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দোওয়া ও ইসলামের আদব-কায়দা শিখাতে থাকে।

এভাবে সময় গড়িয়ে যায় মোনার সুইডেনের আসার প্রায় বছরের কাছাকাছি এমন সময় মোনার সুইডেনের পারমান্টেন ভিসা হয়।এখন মোনাকে পড়া শুনা করতে হবে।

এদের দেশের নিয়ম অনুযায়ী মোনার বয়স হিসাবে মোনাকে কলেজে ভর্তি করা হয়।মোনা ভাষা পারে না এজন্য এই কলেজেই মোনাকে প্রথম দুই বছর ভাষা শিখতে হবে তারপর তিন বছর কলেজ।

মোনা কলেজ শুরু করে কিন্তু টিচার কি বলে মোনা কিছু বুঝতে পারে না ।শুধু বোর্ডে যা লিখে তাই খাতায় লিখে নেয়ে আসে।ভাবী যতক্ষন বাসায় থাকে সংসারের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর ভাইয়া তো বাসায় আসে রাত দশটায় মোনাকে কে হেল্প করবে বাধ্য হয়ে মোনাকে হাসিনের কাছে যেতে হয়।হাসিন এতে বেশ খুশীই হয় কারন স্কুল, কলেজ থেকে ফেরার পর হাসিন আর মোনা প্রায় নয়টা দশটা পর্যন্ত একসাথেই থাকে । কলেজে অন্যান্য ছেলে মেয়েদের টুকটাক কথা বলে ও হাসিনের সাহায্যে মোনা বেশ তারা তারি কথা বলা শুরু করে। মোনাও এখন সহজেই হাসিনকে ইসলামের আদব কায়দা সম্পর্কে বলতে পারে।হাসিন মোনাকে এত পছন্দ করে যে মোনাকে এক কথা দুইবার বলতে হয় না।

মোনার কথামত হাসিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করে।ছেলের নামাজ পড়া দেখে আনজোম ও আহনাফ খুব খুশী হয়।তারা নিজেরাও নামাজের ব্যাপারে সিরিয়াস হয়।

হাসিন এখন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবা মাকে গুড মরনিং না বলে বলে আসসালামুআলাইকূম।খেতে বসলে নিজে বলে "বিসমিল্লাহি আলা বারাকাতিল্লাহ" ,বাবা মাকেও মনে করিয়ে দেয় ।খাওয়া শেষে বলে "আলহামদুলিল্লাহ"বাহিরে যাবার সময় বাই বাই না বলে আল্লাহ হাফেজ।মোনার সাহচর্যে এরকম ছোটখাট আরো অনেক পরিবর্তন হয় হাসিনের।

হাসিনের বাবা মা ও মোনাকে অনেক আদর করত,হাসিনের এসব পরিবর্তন দেখে তারা মোনাকে আরো কাছে টেনে নেয়।এতদিন মোনার সাথে কথা বলার যে সমস্যা ছিল এখন আর সে সমস্যা নেই।আনজোম আহনাফ মোনাকে এতটাই ভালবেসে ফেলে যে বাসায় এসেই মোনাকে ডেকে নিবে,মোনাকে সাথে নিয়ে খাবে,বাহিরে বেড়াতে গেলে মোনার জন্য এটা সেটা কিনে আনবে আর এমন কোন বিষয় নেই যেটা মোনার সাথে শেয়ার না করে।মোনাই একদিন আনজোমের কাছে প্রস্তাব করে মাম্মা আমরা সবাই মিলে সপ্তাহে একদিন কি বসতে পারি কোরআন থেকে কোন সুরা বা রাসুল(সাঃ)এর কোন হাদীস নিয়ে আমরা আলোচনা করব?আনজোম মোনার প্রস্তাবে সানন্দে রাজী হয়।আনজোম আগ্রহী হয়ে আহনাফ,রাইমা,আদনানের সাথে আলোচনা করে প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় বসার ব্যাবস্থা করে।এখানে তারা একেক দিন একেক জন একেকটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।আগের সপ্তাহেই বলে দেয়া হয় পরবর্তী দিন কে আলোচনে করবে কি বি্ষয়।আর একদিন এই প্রগ্রাম হয় হাসিনদের বাসায় আর একদিন রাহীদের বাসায় ।এভাবেই চলতে থাকে তাদের প্রগ্রাম ।এ প্রগ্রামের মাধ্যমেই আহনাফ ও আনজোমের জীবনে আসে ব্যাপক পরিবর্তন।তারা এখন ইসলামের ইসলামের ছোট বড় সব বিষয় জানার চেষ্টা করে আর যেটাই জানতে পারে সেটা মানার চেষ্টা করে ।আনজোমের বাসায় বুকসেলফে সাজানো ছিল নাটক নবেলের বই দিয়ে সেই বুক সেলফ ভরে উঠল সুইডিস ইংরেজী র্ভাসনের ইসলামী বই দিয়ে।তাদের এই পরিবর্তনে মোনা খুব খুশী যে, সে এখন আনজোমের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে।

আনজোম আবশ্য মোনাকে বলে আমাদের এই পরিবর্তন আল্লাহর ইচ্ছা ,আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করি আমাদের হেদায়াত দানের জন্য।তারপর যার অবদান সে হচ্ছ তুমি ।আমি তোমার জন্যও দোওয়া করি আল্লাহ যেন তোমার মঙ্গল করেন ।তুমি আমার আধার জীবনে আলো এনে দিয়েছ আল্লাহ যেন তোমার জীবনকে আলোকিত করে দেন।একথায় মোনা লজ্জিত ও বিব্রত হয়ে বলে মাম্মা এসব তুমি কি বলছ ! তোমরা আমার চেয়ে বয়সে বড় জ্ঞান বুদ্ধীতে ও বড়।আনজোম ,মোনা ছোটদের কাছেও অনেক কিছু শিখার আছে তাছাড়া তোমার পরিবার তোমাকে যে ভাবে গড়ে তোলেছেন,ছোট বেলা থেকেই তুমি তোমার পরিবার থেকে যে শিক্ষা তুমি পেয়েছ আমি সেটা পাই নি আমি বড় হয়েছি একটা broken familyte ।তাই তোমার কাছে আমার অনেক কিছু শিখার আছে।তাই আমার মনের ইচ্ছা তুমি সারা জীবন আমার কাছা কাছি থাক।

আনজোমের এ কথায় অবাক হয়ে মোনা মনে মনে ভাবে মাম্মা এটা আবার কি বলল............

বিষয়: বিবিধ

১৮৬৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File