আধাঁরের আলো (পর্ব ৪র্থ)
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ০৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:১৯:৪০ রাত
শুরু হল মোনার ইউরুপ মানেই উরুপের জীবন।মোনার মনে হয় এখানকার জীবনটা ঘড়ির কাটায় চলে।সকাল বেলা ভাইয়া ভাবী রাহীকে নিয়ে চলে যায়,মোনা তখন বাসায় একা থাকে।যদিও এসময় মোনা আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে।বাসার টুকটাক কাজও করে তবু এই সময়টা মোনার কাটতে চায় না।মোনার বুক ফেটে কান্না আসে ।আবার মাঝে মাঝে কাঁদেও।
তবে রাহী যখন বাসায় থাকে মোনার সময় বেশ ভাল কাটে।রাহী সারাক্ষন মোনার সাথে থাকে।মোনার কাছে খাবে,গোসল,করবে ,মোনার কাছে গল্প শুনবে,মোনাকে ভাষা শিখায় ,মোনার কছে ঘুমাবে।
হাসিন ও মোনাকে অনেক পছন্দ করে ,মোনা আসার পর হাসিন স্কুল থেকে ফেরার পর বেশীর ভাগ সময় এবাসায়ই থাকে ।তবে যেদিন হাসিনের পড়ার চাপ বেশী থাকে সেদিন হাসিন কিছুক্ষন পর পর এসে মোনাকে আপি বলে মুচকি একটা হাসি দিয়ে চলে যায়।তাছাড়া মোনা তো হাসিনের সাথে কথাও বলতে পারে না।মাঝে মাঝে দুই-চারটা কথা হয় রাহী তখন দোভাষীর কাজ করে।
শনি,রবি রাইমার বন্ধ থাকে এই দুই দিন রাইমা মোনা রাহী সাথে হাসিনকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়তে যায়।মাঝে মাঝে হাসিনের মা আনজোম ও তাদের সাথে যায়।আবার রাইমা যেদিন ব্যাস্ত থাকে সেদিন আনজোম ই ওদের তিনজনকে নিয়ে বেড়িয়ে আসে।
ঘুড়ে ফিরে দেখে এদেশটাকে মোনার কাছে বেশ ভাল লাগে।াঅনেক সুন্দর একটা দেশ।কত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।বাড়ি-ঘর,রাস্তা -ঘাট কত পরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা।মশা মাছি নেই ,রাস্তায় গাড়ীর জ্যাম নেই,গাড়িতে মানুষের ঠেলা ঠেলি নাই,মানুষে মানুষে ঝগড়া-ঝাটি,মারামারি নেই।আর সবাই দেশের আইন।কানুন ঠিকমত মেনে চলছে।সমস্ত গাড়ীর ড্রাইবার ট্রাফিক আইন মেনে চলছে,দোকানে টাকা পে করার জন্য কেউ কারো আগে যাওয়ার চেষ্টা করছে না।এরকম ভাবে যেখানে যে আইন সবাই সেটা মেনে চলছে।এসব কিছুই মোনার ভাল লাগে।
মোনার খরাপ লাগে এখানকার মেয়েদের পোশাক ও বেহায়াপনা।রাস্তায় ,বাসে,ট্রেনে ছেলে মেয়েদের জরাজরি ও কিস করা মোনার কাছে খুবি খরাপ লাগে।এটা ছাড়া মোনার কাছে আর সবই ভাল লাগে।মোনা ভাবে ইউরোপকে আমাদের দেশের মানুষ এত খারাপ বলে কেন।মোনা মনে মনে চিন্তা করে নিজেই উত্তর বের করে হয়ত আমার বয়স কম,জ্ঞানও কম তাই হয়ত তাদের খারাপ গুলো আমি বুঝতে পারছিনা।থাক আমার এত বুঝার দরকারও নেই ,আম্মুতো বলছে ভাল টাকে গ্রহন করতে আর খারাপটাকে ঘ্বণা করতে ।আমি তাই করব।
মোনাতো এখনও এখানে পড়াশুনা শুরু করে নাই তাই মোনা সারাদিন বাসায় থেকে কোরআন,হাদীস,ইসলামী সাহিত্য পড়ে।অনেক দোওয়া আমপাড়ার সুরা গুলো মুখস্ত করা শুরু করে ।সাথে রাহীকেও আরবী পড়ানো শুরু করে।একদিন হাসিন এসে রাহীকে পড়তে দেখে বলে রাহী তুমি কি করছ্?
রাহী,আমি ফুপ্পীর কাছে আরবী পড়ছি।
হাসিন,আপি আমিও তোমার কাছে আরবী পড়তে চাই।
মোনা,কেন তুমি আরবী পড়তে পার না্?
হাসিন ,না।
মোনা, তুমি নামাজ পড় না?
হাসিনা,না
মোনা,তোমার মাম্মা।পাপ্পা নামাজ পড়ে না?
হাসিন,মাঝে মাঝে পড়ে।
মোনা,হাসিন তোমার বয়স ১১ তোমার নামাজ পড়া জরুরী তাহলে আমি তোমাকে আগে নামাজ পড়া শিখাব ,তারপর কোরআন।
হাসিন ,ওকে আপি।
হাসিন খুবই মেধাবী ও বুদ্ধীমান ছেলে।মোনার কাছে সে দুই সপ্তাহের মধ্যে নামাজের জন্য ছানা কয়েকটা ছোট সুরা,তাশাহুদ(আত্তাহিয়াতু),দরুদ শরীফ,দোওয়ে মাসূরা ও দোয়ায়ে কুনুত ও অজুর দুওয়া শিখে ফেলে।এবার মোনা হাসিনকে বলে আজকে থেকে তুমি নামাজ পড়া শুরু করবে আর কখনো নামাজ ছাড়বে না।আস্তে আস্তে তোমাকে আমি আরো অনেক কিছু শিখাব।
হাসিন,ওকে আপি ।
চলবে......।
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন