আধাঁরের আলো

লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ০২ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:৪২:১৩ রাত



জামান সাহেবের সুখী পরিবার ।তার দুই ছেলে দুই মেয়ে । দুই ছেলে বউ বাচ্ছা নিয়ে ইউরুপ থাকে আর বড় মেয়ে স্বামীর সাথে কানাডা থাকে।আর ছোট মেয়ে মোনা বাবা মায়ের সাথে ঢাকায় থাকে।জামান সাহেব ও তার স্ত্রী খুবই আল্লাহভীরু পোরহেজগার।আর আল্লাহর রহমতে জামান সাহেবের ঢাকায় বাড়ি গাড়ি,অর্থ সম্পদ ভালই আছে ।এগুলো সবই জামান সাহেব তার সৎ উর্পাজন ও স্ত্রীর সহায়তায় করেছেন।ছেলে মেয়েদের ও উপযোক্ত দুনিয়াবী শিক্ষার পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষাও দিয়েছেন।ছেলেদের শিক্ষিত ও দ্বীনদার মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়েছেন,বড় মেয়েকেও শিক্ষিত ও দ্বীনদার ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছেন।তারা এখন যার যার অবস্হানে বেশ ভাল আছে। তারা ইউরুপ,আমেরিকায় থাকলেও তারা ইসলামী অনুশাসনের ভিতরই আছে।জামান সাহেব ও তার স্ত্রী ছেলে মেয়েদের সব সময় নসিয়ত করেন,তোমাদের কাছে আমাদের চাওয়ার কিছু নেই শুধু একটাই চাওয়া সারা দুনিয়াটাই আল্লাহর আর আল্লাহ সব খানেই আছেন,কাজেই তোমরা যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় করে দ্বীনের পথে চল আর দ্বীনের খেদমত কর তাহলেই আললাহ তোমাদের ওপর খুশী থাকবে আর আমরা তোমাদের উপর খুশী থাকবো।

ছোট মেয়ে মোনা বয়স ১৫তে পড়েছে।বড় তিন ভাই বোনের জন্মের ১২ বছর বিরতির পর মোনার জন্ম।তাই বাবা মায়ের যেমন আদরের তেমনি ভাই বোনের কাছে।মা মরিয়ম বেগম ছোট মেয়ে মোনাকে গড়ে তোলেছেন নিজের মনের মত করে।নিজের জীবনে যতটুকু ভূলভ্রান্তি হয়ে গেছে মেয়ে মোনার জীবনে যেন তা না হয়।তাই ছোট বেলা থেকেই মোনাকে গড়ে তোলেছেন ইসলামী অনুশাসনে।নিজের কাছে যত টুকু জ্ঞান ঢেলে দিয়েছেন মেয়েকে।মোনা ও গ্রহন করেছেন এবং ইসলামী আইন কানুন ,নিয়ম নীতি পুরাপুরি মেনে চলার চেষ্টা করে।ঠিক যেমনটা তার মা বাবা চায়।এই বয়সে মোনার আল্লাহ ভীতি ,পর্দা,আদব-কায়দা,মানুষের সাথে আচার/ব্যবহার সবকিছু দেখে বাবা মায়ের চোখ শীতল হয়ে আসে।আত্বীয়-স্বজন সবাই মোনাকে বলে লক্ষী একটা মেয়ে।

মোনার ভাইরা ও বোন চায় মোনাকে তাদের কাছে নিয়ে আসতে।তারা বাবা মাকে বলে আসলে যেটা বাস্তব আমদের তো আর দেশে ফিরা হবে না তাই মোনা একা দেশে থেকে কি করবে তো আমরা চাই মোনা আমাদের কারো কাছে চলে আসুক,আর এসব দেশে যত অল্প বয়সে আসা যায় তত ভাল।তাই মোনা এখনি আমাদের কারো কাছে চলে আসুক এখানে এসে লেখা/পড়া করুক তাতে ওর ভবিষ্যত ভাল হবে।

কিনতু জামান সাহেব চান না মোনা ও দেশ ছেড়ে বিদেশ চলে যাক।জামান সাহেবের মনে মনে ইচ্ছা বড় ছেলে মেয়ে গুলোতো আর দেশে ফিরবে না,তাই হোক গরীবের ছেলে ধর্মভীরু ও শিক্ষীত একটা ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে বাড়িতেই রাখবেন ।মরিয়ম বেগম স্বামীকে বুঝান দেখ আমরা বুড়ো হয়ে যাচ্ছি ,মারা যাব ।যদিও জীবন-মৃত্যুর কথা বলা যায় না।তবু আশাতো করি ছেলে মেয়েদের রেখে যেন আমরা মারা যাই।তাহলে আমার ছোট মেয়েটা একেবারে একা হয়ে যাবে।কাজেই ওরা যখন মোনাকে নিতে চাচ্ছে তুমি আর অমত কইর না।জামান সাহেব স্ত্রীর কোন কথাই কখনো অমত করেন নাই তাই স্ত্রীর এই কথায় ও রাজী হলেন।

কিন্তু সমস্যা হল দুই ভাই ও বোন সবাই চায় মোনাকে নিজের কাছে নিতে।জামান সাহেব ও মরিয়ম বেগম কাউকেই কষ্ট দিতে চাইলেন না ,তাই দুই ছেলে আর মেয়েকে বলে দিলেন তোমরা তিন জনেই চেষ্টা কর মোনার ভাগ্যে যারটা আগে হবে মোনা তার কাছে যাবে।সবাই একথা মেনে নিয়ে চেষ্টা শুরো করল ।আর অন্য ভাই বোনের থেকে এগিয়ে গেলেন ছোট ভাই আদনান সে মাত্র এক মাসের মধ্যে মোনার ভিসার ব্যবস্থা করে ফেলল।মোনার ভিসা হওয়াতে সবাই খুশী হল,মোনাও খুশী কিন্তু মা মরিয়ম বেগমের মনে হল কেউ যেন তার বুকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করল।

চলবে.........।

বিষয়: বিবিধ

২৫৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File