ভারতে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ শৌচাগার ব্যবহার করেনা

লিখেছেন লিখেছেন আম পাবলিক ২১ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:২১:২৩ সকাল

ভারতে শৌচাগারের ব্যবহার নিয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্ক যে তথ্য দিয়েছে, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ারই মতো। ভারতের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ শৌচাগার ব্যবহার করেনা বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।



স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের অভাবকে ভারতের মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশেই অপুষ্টি ও শিশুমৃত্যুর একটা বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।

Click this link

বিশ্ব ব্যাঙ্ক বলছে, প্রায় সোয়াশো কোটি মানুষের দেশ ভারতে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ শৌচাগার ব্যবহার করেন না – তাদের মূত্র বা মলত্যাগের মতো কাজগুলো সারতে হয় খোলা আকাশের নিচেই।

কিন্তু ভারতের অর্থনীতি যেখানে বিগত দুই দশকে প্রভূত উন্নতি করেছে, সেখানে কেন এখনও দেশের এত মানুষকে খোলা আকাশের নিচেই শৌচাগারের কাজ সারতে হচ্ছে?

গোটা দুনিয়ায় আড়াইশো কোটিরও বেশি মানুষের কোনও শৌচাগার নেই – আর তার মধ্যে একশো কোটিকেই মলত্যাগ করতে হয় চার দেওয়ালের বাইরে।

এদের মধ্যে অন্তত ষাট কোটিই ভারতে, যেটা এ দেশের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ।

"প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যাওয়াটাই এসব মানুষের অভ্যাস আর বহু বছরের সেই অভ্যাসটা পাল্টানো খুব কঠিন।"

শৌচাগারের অভাবে বাইরে মলত্যাগ করতে যেতে হচ্ছে, আর তা মৃত্যু ডেকে আনছে অসংখ্য শিশুর। কিন্তু মুশকিল হল – স্বাস্থ্যসম্মত একটা শৌচাগারের অভাব যে একটা সমস্যা ও বিরাট স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি, বহু ভারতীয়র মধ্যে এখনও এই সচেতনতাই তৈরি হয়নি।

শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাস নিয়ে গবেষণা করেছেন সুস্নাত চৌধুরী। তিনি বলছেন ভারতে ধনী-দরিদ্র, শহর-গ্রাম নির্বিশেষে অনেকেই এই একই মানসিকতার শরিক।

''শুধু গ্রামে নয়, মুম্বাই শহরেও একটু ভেতরের দিকেই খোলা রাস্তায় বা সমুদ্রের ধারেও লোককে মলত্যাগ করতে দেখা যায়।''

মি: চৌধুরী বলছেন, জরিমানার ভয় দেখিয়ে বা দেবদেবীর ছবি-ওলা টাইলস লাগিয়ে ভারতে মানুষকে প্রকাশ্য স্থানে মূত্রত্যাগ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হয়।

এর থেকে বোঝা যায়, ভয়ে বা ভক্তিতেই মানুষকে এ কাজ থেকে আটকানোর চেষ্টা করতে হয় – কিন্তু খোলা আকাশের নিচে মল-মূত্রত্যাগ করার ব্যাপারটা আসলে তার ভেতরেই আছে।

এই অভ্যাস থেকে যে দূষণ ঘটছে সে বিষয়ে মানুষ সচেতন নয়।

অর্থাৎ কোটি কোটি ভারতীয়র মধ্যে এই ধারণাটা এখনও মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে আছে যে মলত্যাগ বা মূত্রত্যাগ বাইরে করলে সমস্যা কিছু নেই।

সামাজিক লজ্জা সংকোচ তো অনেক দূরের কথা, এই অভ্যাসের জন্য যে জল দূষিত হচ্ছে, ডায়রিয়া বা আরও অন্যান্য রোগ উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি বিশ সেকেন্ডে একটি শিশুর মৃত্যু ডেকে আনছে, সেটাও তারা জানেন না।

আসলে ভারতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে গরিব মানুষেরও আর্থিক স্বাচ্ছল্য হয়তো বেড়েছে, কিন্তু শৌচাগার তৈরি করাটা তাদের অগ্রাধিকারেই পড়ে না।

বিষয়: বিবিধ

১৪৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File