পাবলিক থেকে বাঁশের কেল্লা অত:পর আম পাবলিক

লিখেছেন লিখেছেন আম পাবলিক ০১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:৩৭:৪২ সকাল

আসসালামু আলাইকুম,

আশা করি সবাই ভালো আছেন। দীর্ঘ এক বছর বিরতির পর আজকে লিখতে বসলাম। মাঝের এই সময়টাতে দেশের ইতিহাসে স্থান করে নেওয়া অনেক ঘটনাই ঘটে গেছে। অনেক রেকর্ড গড়েছে আবার ভেঙ্গেছে। আরো ভালো করে বলতে গেলে বিগত একটি বছর ছিল ঘটনা বহুল। যা বাংলাদেশের মানুষ মনে রাখবে দীর্ঘ কাল। যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ এই আনলাকি থার্টিন বছরটির কথা উদাহরণ দিয়ে বলে বেড়াবে।

স্বাধীনতার পরে দেশের সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক অস্থিরতার বছর ছিল এটি, সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের ঘটনাও ঘটেছে এই সময় গুলোতে। একটি রাজনৈতিক রায় নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে এতো বড় গণ আন্দোলন সম্ভবত দেশ ইতোপূর্বে দেখেনি। দেশের অর্থনৈতিক শৃংখলাও বলা চলে ভেঙে পড়েছে। সবত্রেই এক ধরণের অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

তবে আমার দুর্ভাগ্য এই যে দেশের ইতিহাস সৃষ্টিকারী এতোসব ঘটনার কোনটিরই প্রত্যক্ষদর্শী আমি হতে পারি নি। কারণ এই সময়টা আমার জীবনেই রচনা করেছে একটা না ভোলার ইতিহাস । আজ থাক সেই ইতিহাস ইচ্ছা আছে আল্লাহ সুযোগ দিলে অন্যআরেকদিন সেই ইতিহাস বলব।

যাই হোক এবার আসি শিরোনামের দিকে।

আমার লেখা লেখি শুরু সেই ২০০৯ এ। কোন কবিতা বা গল্প দিয়ে নয়। আমি সবসময় দেশ ও মানুষের সমস্যা সম্ভাবনা নিয়েই লিখতে ভাল বাসি। আজাইরা রাজনৈতিক প্যাচালও না পছন্দ। সব সময় টার্গেট থাকে কিছু শেখার জানার। সেই জানার তাগিদেই একসময় শুরু করি পত্রিকা পড়া। তারপর তাতে যোগ হলো ইন্টারনেট তথা গুগল, এরপর ফেসবুক, এরপর ব্লগ। তবে এখনো পর্যন্ত আমার কাছে সবচেয়ে উপভোগ্য জ্ঞান চর্চার মাধ্যম হিসেবে ব্লগকেই মনে হয়।

যাই হোক লেখালেকি করতে হলে কিছু জানতে হয় । আর সেই জানার জন্যই প্রথকে পত্রিকা বিভিন্ন বই বিশেষ করে পাবলিক লাইব্রেরী, বিভিন্ন বই সংগ্রহ করতাম। সেটা কিছুটা কঠিন ছিল আমার জন্য। এরপরই আস্তে আস্তে পরিচয় হলো ইন্টারনেটের সাথে। কিন্তু উপযুক্ত গাইডলাইনের অভাবে মনে হলো নেটে অবাধ ব্রাউজিং সুবিধা থাকায় এতে সময় ও নৈতিকতা নষ্টের যথেষ্ট উপকরণ রয়েছে। কারণ একটি তথ্য সার্চ দিলে রিলেটেড অনেক কিছুিই চলে আসে। যাই হোক আরো কিছুদিন যাওয়ার পর পরিচয় হলো ব্লগের সাথে। তখন থেকেই নিয়মিত ব্লগ পড়তাম কিন্তু লিখতে পাড়তাম না কারণ ব্লগের আইডি খোলা একটা ঝামেলার কাজ বলেই আমার মনে হয়। (তবে বিডি টুডের ক্ষেত্রে কিন্তু নয়)। কারণ আমি একা একা অনেকবার ট্রাই করেছি একটা আইডি খোলার কিন্তু পারিনি। অবশেষে এক বড় ভাই ব্লগার তিনি সোনার বাংলাদেশে আমার একটি আই ডি খুলে দেন। আমি প্রথমে নিজের নামেই ব্লগটি নামকরণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার পরামর্শে নাম বদলে হয়ে যাই “বাঁশের কেল্লা”। এই নামেই লিখতে থাকি। প্রায় বছর খানেক। এরপর আসে সেই দুর্যোগ আমি চলে যাই বর্তমান সরকারের মেহমান খানায় । প্রথমে কিছুদিন অমানুষিক নির্যাতন তারপরে হয়রানি আর ভোগান্তি। একের পর এক মামলার জালে বন্দি করে আমাকে। সখোনে কেটে যায় প্রায় নয় মাস। যে কারনে ঘটনা বহুল বছরটিতে আমি হতে পারিনি অনেক কিছুর প্রত্যক্ষদর্শী। হতে পারিনি ভবিষ্যত ইতিহাসের চাক্ষুস সাক্ষী। তাতে কোন দু:খ নেই কারণ আমি নিজেও যে হয়ে গেছি ইতিহাসেরই একটি অংশ। অর্জন করেছি জীবনের সবচেয়ে জঘন্নতম অভিজ্ঞতা।

যাইহোক দীর্ঘদিন বর্তমান সরকারের মেহমান দারিত্বে থাকার পর অবশেষে ফিরে আসি বাবার হোটেলে। দীর্ঘদিন লোকালয়ে না থাকায় শহরের চেহারা অনেকটা অপরিবর্তনীয় মনে হলেও মানুষগুলো কেমন বদলে গেছে বলে মনে হয়। অনেক কিছুতেই নিজেকে অজ্ঞ মনে হয়। ফলে মনের মধ্যে আবার জানান দিলো ব্লগের কথা। কিন্তু আমার সেই সোনার বাংলা, সেই বাঁশের কেল্লা সবইতো আজ চুরমাচুর করে দিয়েছে ডিজিটালরা। ধ্বংস করে দিয়েছে আমরা বাশের কেল্লা। তবে বের হয়ে চমকপ্রদ তথ্য পেলাম। আর তা হলো আমার বাঁশের কেল্লা ভেঙ্গে নতুন বাঁশের কেল্লা গড়ে উঠেছে। তারা নাকি একলাই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে ফাইট করে চলেছে। জেনে খুবই ভালো লেগেছে। যে আমাদের পূর্বসূরীরা তাদের ক্ষুদ্র সমর্থ দিয়ে হায়েনার প্রতিবাদে প্রতিরোধের যে ধারা তেরী করে গেছেন। আমরা উত্তরসূরীরা তা বয়ে বেড়াব যুগযুগ ধরে। এমনি করে অসংখ্য বাশের কেল্লা গড়ে উঠবে জালিমের বিরুদ্ধে।

যাই হোক আমি খুঁজতে লাগলাম আমার প্রিয় সেই ঠিকানা। মত প্রকাশের প্লাটফর্ম। দেশে অন্যান্য যে ব্লগগুলো আছে আদর্শিক দ্বন্দের কারণে ইচ্ছে করেই সে গুলোতে পা মারাইনি। এমনি করেই কাকতালীয় ভাবেই জানতে পারলাম বিডি টুডে ব্লগের কথ।

অনেকদিন অবসর যাপনের পর আমার একটি কর্মসংস্থানের প্রয়োজন ছিল। সেই হিসেবেই এক বড়ভাই জানালেন আমাদের একটি সাইটে কাজের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমার চাহিদা আরেকটু বেশি হওয়ায় তার প্রস্তাবে আর মত দিতে পারিনি। তবে কাজের কাজ যা হয়েছে আমি এতোদিন যাকে খুঁজতেছিলাম তাকে পেয়ে গেছি। অর্থ্যাৎ মতপ্রকাশের একটি প্লাটফর্ম।

সেই হিসাবে সেদিনই আমি বিডিটুডে ব্লগ লিখে সার্চ করি কিন্তু আমার কপাল মনে হয় কিছুটা মন্দই। কারণ এই ব্লগটাও নাকি সরকারের রোষানলে পড়েছে। বার বার ব্লক করে দিচ্ছে। সবশেষ কোনমতে রেজিস্ট্রেশন করলাম। কিন্তু ইমেইলে যে ভিরিফিকেশন কোড দিছে তা আর মেচিং হয়না। ফলে একদিন দুই করে চারদিন ট্রাই করে পরে নিজেথেকে বুদ্ধি করে টুডের স্থলে টুমোরো লাগিয়ে তবেই কেবল সাইন ইন করতে সক্ষম হলাম। তাই আমি টুডে কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করব অন্তত মানুষকে ভূল কোড দিয়েন না। আপনাদের কী সমস্যা আছে তা আপনার সবারচেয়ে ভালোই জানেন। শুধু শুধু পাবলিকরে রং কোড দিয়া বিরক্ত করা ঠিক না।

যাইহোক এবার আসি আম পাবলিকের কথায়। সরকারের মেহমান খানাং থেকে একটা জিনিস খুব ভালো করে লক্ষ করেছি . .তা হলো আন্ডার মেট্রিক কারারক্ষীরা কথায় কথায় বলতো তারা প্রশাসন আর বন্দিরা চোর সুতরাং তারা যা করবে তাই আইন। বন্দীদের কোন অধিকার নেই। বন্দীদের সাথে খারাপ আচরণই প্রাপ্য।

ঠিক তেমনি মুক্ত জীবনে এসেও দেখি সরকার যা খুশি তাই করছে। যাকে খুশি ফাসিতে জুলাচ্ছে, লুটেপুটে খাচ্ছে প্রতিবাদ করলেই গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিচ্ছে। কারণ তারা সরকার। আমরা পাঁচ বছরের জন্য তাদেরকে ইচ্ছেপূরণের লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছি। এসময় তারা যা খুশি করবে। আর আমাদের ভাগ্যেতো হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নেই কারণ আমরা যে পাবলিক।... তাই আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি দেশের সংখ্যা গরিষ্ট পাবলিকের দলেই থাকব। আজথেকে আমিও আম পাবলিক।..কারণ দশে আছে যেখানে আল্লাহও নাকি সেখানেই আছে।..

টুডে ব্লগ কর্তৃপক্ষকে আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ

বিষয়: বিবিধ

১৬১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File