মায়ায় জড়ানো খুনসুটি…..
লিখেছেন লিখেছেন নিঝুমদ্বীপের রাজকন্যা ১২ জুন, ২০১৪, ০৯:১৩:২০ রাত
পাপা কতই না মজা হতো যদি মা রাপুনসিলের মত জানালা দিয়ে চুল ছেড়ে রাখতো আর তুমি চুল বেয়ে উপরে উঠে আসার পর তোমার আর মা’র প্রথম দেখা হয়েছে এমনটা হলে।
বই থেকে মুখ তুলে ছেলের দিকে তাকালো আদিত্য। দু’চোখ ভর্তি চকচকে দুষ্টুমি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকা ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে হেসে বলল, তোমার এমনটা কেন মনে হলো তাসদিক?
তাসদিক বলল, মা’র কত্ত লম্বা চুল। রাপুনসিলের চেয়েও লম্বা। তাই বলছি। বলো না পাপা এমন হলে কেমন হতো?
আদিত্য হেসে বলল, তোমার মা আমাকে তক্ষণাৎ খুন করে ফেলতো তার চুলে হাত দেয়ার অপরাধের শাস্তি স্বরূপ। মা’র রাগের কথা ভুলে যাচ্ছো?!
তাসদিক কিছু না বলে মনের আনন্দে হাসতে লাগলো। সে মোটেই মা’র রাগের কথা ভুলে যায়নি। মা যখন রাগ করে অনেক মজা লাগে তাসদিকের। সে মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে এমন কথা বলে যাতে মা রাগ করবে। কারণ রাগ করলেই মা মজার মজার শাস্তি দেয়। কখনো বলে যাও তোমার শাস্তি হচ্ছে আমাকে নিয়ে দশ লাইনের একটা কবিতা লিখবে। এই শাস্তিটাই তাসদিকের সবচেয়ে বেশি পছন্দ। সে মাকে নিয়ে বাইশটা কবিতা লিখে ফেলেছে। আরো আটাত্তরটা কবিতা লিখা হলে একশোটা হবে। তখন সে একটা কবিতার বই ছাপিয়ে মাকে উপহার দেবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেজন্য মাকে আরো আটাত্তর বার রাগাতে হবে তাকে। আজকে একবার রাগালে কেমন হয়? কিন্তু কি নিয়ে রাগাবে? পাপার কাছে অবশ্য পরামর্শ চাওয়া যায়। মাকে রাগানোতে পাপা যে বিরাট এক্সপার্ট সেটা তাসদিকের খুব ভালো মতই জানা আছে। কিন্তু সে চাইবে আর তাকে মাকে রাগানোর পরামর্শ দিয়ে দেবে পাপা মোটেই এত সহজ পাত্র না এটাও খুব ভালো মতোই জানা আছে তাসদিকের।
একটু নড়েচড়ে বসে তাসদিক বলল, পাপা আসো টেস্ট করে দেখি তোমার বুদ্ধি কেমন। ফাটাফাটি একটা আইডিয়া দিতে হবে আমাকে। যদি তোমার আইডিয়া সাকসেসফুল ফুল হয় তাহলে তুমি পাশ। আইমিন তুমি যে বুদ্ধিমান সেটা আমি মেনে নেবো।
আদিত্য হাসি চেপে বলল, তোমার কাছে নিজেকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছি বলে তো মনে পড়ছে না আমার।
পাপা পৃথিবীতে কোন বাবা না চায় নিজেকে আদর্শ হিসেবে সন্তানের সামনে উপস্থাপন করতে বলো! ভবিষ্যতে আমিও চাইবো ইনশাআল্লাহ। আমি তাই তোমার মনের ইচ্ছাকে বুঝে নিয়েছি।
হাত বাড়িয়ে ছেলের কান ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে আদিত্য বলল, খুব বেশি দুষ্টু হয়েছো তুমি। কটকট একদম বন্ধ এখন। কাজ করতে দাও আমাকে।
তাসদিক হেসে বলল, মাকে রাগানোর ফাটাফাটি একটা আইডিয়া দাও চলে যাচ্ছি আমি।
আদিত্য হেসে বলল, তোমার রাপুনসিলের আইডিয়াটাই ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে মাকে বলো। তোমার মা বিরক্ত হবার জন্য এইটুকুই যথেষ্ট।
তাসদিক বিশাল হাসি দিয়ে বলল, ঠিক বলেছো। পাপা তুমি আসলেই বুদ্ধিমান। যাও দিয়ে দিলাম তোমাকে বুদ্ধিমানের সার্টিফিকেট। তুমি কাজ করো আমি আইডিয়া ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে মা’র কাছে যাই।
ছেলেকে হুড়মুড় করে ছুট লাগাতে দেখে হেসে নিজের কাজে মন দিলো আদিত্য।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯০ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দারুন টেকনিক তো।
মাকে রাগানোর বুদ্ধি কত প্রকার কি কি আমি জানি
তবে আমার মা আমাকে ধপাস ধপাস চটকানা ফ্রি দেন।
যেনো তেনো চটকানা নয়। ধাপুস ধুপুস।
ভালো টেকনিক শিখিলামতো . . . . . .
দেখি আজকে ক্ষ্যাপানো যায় কিনা।
আমি ভীষন রগচটা এবং ডানপিটে পাবলিক যাকে ঘাড়তেড়া বলে ছোট বেলায় এমন ছিলাম।
এখনও ঘাড়তেরা তবে কম।
উদাহরণঃ সকাল বেলা ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে বের হতাম আর রাতের বেলা ব্যাডমিন্টন খেলে ঘড়ে ফিরতাম।
খাওয়া দাওয়া সব ভুলে যেতাম।
পুকুরে গোসল করতে নামলে চোখ টুকটুক না হওয়া পর্যন্ত উঠতাম না সবাইকে অনেক জ্বালিয়েছি মাইরও সেরকম খেয়েছি।
মাইর কত প্রকার সেটা জানি।
আমাদের থেকে বেশি সে হিসেবে তো আমরা গুড গুড বয়।
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং শুকরিয়া জানাচ্ছি এত্ত সুন্দর লিখাটি ব্লগে দেয়ার জন্য।
অন্নেক অন্নেক শুকরিয়া।
মায়ের মাইর কত মজা যদিও থাপ্পড়ে দাগ বসে যায়।
একবার রাগ করে তার দিয়ে এমন বাড়ি দিয়েছিলেন সম্ভবত পিঠে দাগ আছে কিনা তা দেখতে হবে।
তাসদিকতো মাশাআল্লাহ গুডুগুডু বাবু।
বই লেখা সেটা বাংলাদেশ থেকে সবার আগে আমি কিনবো।
ইনশাআল্লাহ
আপনার জন্য তাসদিকের লেখা চার লাইন কবিতা
"তুমি যদি মুরগী হও আমি তোমার ছানা,
আমার সোনা মা তোমার নেইকো তুলনা।
তুমি যদি পাখী হও মা আমি তোমার ডিম,
মনের মাঝে তোমার ভালোবাসা জ্বলে টিমটিম।"
আপুরে হাসতে হাসতে কাশি বের হয়ে গেছে।
আর আমি যখন ক্ষেপাই তখন
মামামামামামামামামামামামামামামামামামামামা যতবার মন চায় একসাথে চিল্লাই চিল্লাই বলি।
I'm in a hurry.
পরে পড়ে অবশ্যই কমেন্ট করবো ইনশাআল্লাহ!
শিশুদের মন সহজেই সত্য ধরে ফেলে।
যাইহোক...... এখন পড়েতো আমার অবস্থা নাজুক ..... হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছিা আমি...... আচ্ছা.... তাসদিক ছেলেটা এত্তদিন কোথায় ছিলো? মারাত্মক একটা দুষ্টু
এখন মন ভালো হয়েছে তো? দোয়া করি আল্লাহ আপনার মন সবসময় ভালো রাখুন।
দুষ্টু ক্ষুদে বিজ্ঞানী তাসদিকের লেখা আরও দুষ্টুমি+কবিতা চাই, প্লীজ আপু........ প্লীজ @রাজকন্যা
ইসলাম সবসময় ই ভারসাম্য চায়। নীরিহ জোকস এক কথা আর নোংরা জোকস ভিন্ন কথা। মুসলিমদের উচিৎ না বাজে জোকস এ উৎসাহ প্রদান করা। আমরা মুসলিমরা এক দেহের মত। তাই কাউকে পড়ে যেতে দেখলে খারাপ লাগবেই। চাই তা আধ্যাতিক পড়ে যাওয়া হোক বা মেটেরিয়াল।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলমীন যেন আপনার সন্তানদের কে ইসলাম কে পরিপূর্ণভাবে জেনে বুঝে মেনেচলে প্রতিষ্ঠা করতে পারার মতো যোগ্যতাবান করে দেন ও আপনার চক্ষুশীতলকারী ও মুত্তাক্বীনদের ইমাম বানিয়ে দেন। আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন