প্রতিক্রিয়া
লিখেছেন লিখেছেন বেদুঈন ১১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:৩২:১৩ সন্ধ্যা
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার এর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত লেখাটির প্রতিক্রিয়াঃ
“মজার ব্যাপার হচ্ছে, দেশের হাই-ফাই ইউনিভার্সিটির হাই-ফাই গ্র্যাজুয়েটদের প্রায় সবাই কিন্তু দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। দেশটি চালাচ্ছে কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু গ্র্যাজুয়েটরা। অথচ সংবাদ মাধ্যমের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কোনো সমবেদনা নেই, কোনো মমতা নেই। আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। দেশের সরকার যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটু গুরুত্ব দিয়ে তাদের সমস্যাগুলো মিটিয়ে দিতে আগ্রহী হত, তাহলে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর নয়, আমাদের নিজের দেশের অনেক বড় উপকার হত!”[/i]
ছাগল দিয়ে হাল চাষ করলে ফসল উতপাদন শুধু ব্যহতই হওয়ার কথা না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে ফসল না পাবার সম্ভবনাই বেশি। আমি অবশ্যই স্বীকার করি যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়েও কিছু মেধাবী আছেন, কিন্তু ওখান থেকে এসে যারা দেশ চালাচ্ছেন তারা সেই মেধাবীরা নন, তারা রথীমহারথীদের পা চুষা হালের ছাগল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যলয়ের পড়াশোনার মান বাড়াতে হবে এটা সত্য তাই বলে দেশের মেধাবী সমাজকে এভাবে অবহেলা করে নয়। বরং বিষয়টা এমন হতে পারে যেই বাংলাদেশীরা ইউরোপ আমেরিকাকে সেবা দিচ্ছে তাদেরকে দেশে এনের বিশেষজ্ঞ সেবা নিন। তাদেরকে একটু সুযোগ করে দিন। অনেককেই বলতে শোনা যায় দেশ তো তাদেরকে অনেক দিয়েছে তারা কেন এবার দেশকে দিচ্ছে না, আরে ভাই একটা বিষয় ভুলে গেলে চলবে না সবাই সবখানে জায়গা করে নিতে পারে না, যারা উন্নত দেশে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন তারা একটু সুযোগ পেলেই দেশের জন্যে অনেক কিছুই করতে পারবেন। তাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসতে চান যারা অনেক বেশি সুযোগ চান না। যারা চান একটু সম্মান আর একটু রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সহযোগিতা। তারা শুধুই চান বাধাহীন ভাবে কাজ করার অধিকার। তারা কাড়ি কাড়ি টাকা অথবা বিলাস বহুল বাড়ি কিছুই চান না।
“কয়েক বছর আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে একটা ছেলে গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছিল। আমি এই ঘটনার কথা কিছুতেই ভুলতে পারি না। শুধু মনে হয় কোনো দূর এক শহর থেকে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্যে এত দূরে তাকে টেনে আনার ফলেই হয়তো এত অল্প বয়সে মারা যেতে হয়েছে।”
স্যার বিশ্ববিদ্যলয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে কেউ মারা গেলে এটা নিশ্চয় ভর্তি পরীক্ষার দোষ না, দোষটা যার কারনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যলয়গুলোতে লেজুরবৃত্তির রাজনীতিতে প্রতিবছর অনেককেই প্রাণ দিতে হয়, তাই বলে এর জন্যে বিশ্ববিদ্যলয় দায়ী না দায়ী খুনিদের কে প্রশ্রয় দাতা প্রশাসন যন্ত্রের কতিপয় পা চুষা শিক্ষকের। এই কারনে নিশ্চয় আমরা দায়ীদের শাস্তি প্রদান করা বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার পরামর্শ দিব না? বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে এসেও তো সারা দেশে অনেক ছাত্রই মারা যায়, তাই বলে কি আমরা তাদেরকে ক্লাস করা বাদ দিয়ে ঘরে বসে পড়াশোনা শুরু করতে বলব?
“একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এক সাথে পরীক্ষা নেওয়ার একটা বড় সুবিধা হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করার সময় শুধু একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়ে খুশি থাকতে হবে না, দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বসে প্রশ্ন তৈরি করতে পারবেন।”
শিক্ষকরাও তো প্রশ্ন পত্র বানাতে এসে রোড এক্সিডেন্টে মারা যেতে পারেন।
“বাংলাদেশের সব কয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যদি রাজি হত তাহলে খুব সহজেই সবাই মিলে একটি (হ্যাঁ মাত্র একটি) চমৎকার মানসম্মত ভর্তি পরীক্ষা নিয়েই এই দেশের সব ছাত্রছাত্রীকে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে বিবেচনা করতে পারত। ”
এই পদ্ধতির এমন কোন পরীক্ষা নাই যেটাতে প্রশ্ন ফাস হয় নি। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা, বিসিএস পরীক্ষাসহ সকল পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন হরহামেশাই ফাস হচ্ছে। তার উপর সেসকল পরীক্ষার সীমাহীন দুর্নীতির কথা আমরা সবাই জানি। এস.এস.সি, এইচ.এস.সি পরীক্ষাগুলো প্রতিযোগিতামুলক না হওয়ায় আর প্রশ্ন তুলনামুলক সহজ হওয়ায় সেসকল পরীক্ষার প্রশ্ন ফাসের ঘটনাগুলো হামেশাই আমাদের আলোচনার বাইরে থেকে যায়।
“যেহেতু আমরা এইচ.এস.সি. পরীক্ষার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করতে পারি না । তাই সেই এইচ.এস.সি.‘র বিষয়গুলোই নতুন করে নিজেদের মতো করে পরীক্ষা নেই। কাজেই সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষার মূল ধারনাটি হচ্ছে এইচ.এস.সি. পর্যায়ে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর পরীক্ষা নিয়ে নেয়া।”
আপনার এই বক্তব্যের সাথে আমি একমত কিন্তু এইচ.এস.সি. পর্যায়ের প্রশ্ন পত্র ফাস না হওয়ার গ্যারান্টি কে দিবে? যেখানে মাত্র ২০ হাজার শিক্ষার্থীর পরীক্ষার প্রশ্ন-ই আমরা গোপন রাখতে পারি না সেখানে ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন ফাস হওয়াটা মামুলি ব্যপার।
“জিপিএ ফাইভ বা গোল্ডেন ফাইভ পাওয়া অনেক ছাত্রছাত্রী যখন আবিস্কার করে ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় তাদের নাম নেই, তখন তারা একটা অনেক বড় ধাক্কা খায়।”
যেসকল তথাকথিত মেধাবীরা ১০-২০টা পরীক্ষা দিয়ে কোথাও নিজেদের নাম মেধা তালিকায় আবিষ্কার করতে পারে না তারা কিভাবে মাত্র একটা পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় চলে আসবে! এখন তো একটা ধাক্কার পরে আরেকটা ধাক্কার সুযোগ থাকে তখন তো এক ধাক্কাতেই অক্কা পাবে। সেটা দায়ভার কে নিবে? আর এখন যারা গোল্ডেন ফাইভ পান তাদের একটা বিরাট অংশই কিছু সাজেশনস পড়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তারা বেসিক বড়ই দুর্বল। আগে বেসিক ঠিক করার প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। সেই সাথে এস.এস.সি, এইচ.এস.সি’র পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। আগে মূলে হাত দিন। আগা নিয়ে টানাটানি পরে করেন।
“আর সংবাদ মাধ্যম যদি ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমাদের ব্যাংক ব্যালেন্স কতটুকু বেড়ে যায়, সেই তথ্যটি প্রকাশ করে দেয় তাহলে আমরা দেশের মানুষের সামনে লজ্জায় মুখও দেখাতে পারব না!’’
এটা আপনি যথার্থই বলেছেন ভর্তি পরীক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যলয়গুলার ব্যবসা বন্ধ করতে হবে আর যারা দূর দুরান্ত থেকে আসবে তাদের জন্যে একটা ভাতার ব্যবস্থা করতে পারেন। এতে প্রকৃত মেধাবীরা পরীক্ষা দিতে আসবে এবং বিশ্ববিদ্যলয় মেধাবীদেরকেই পাবে। সেসকল বিশ্ববিদ্যলয় প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা পরীক্ষা নেন তাদের উচিত এটা বাদ দেওয়া।
Link of the main write up
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন