নাকি আওয়ামীলীগের সাথে সুর মিলিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে কলংকিত করবেন?

লিখেছেন লিখেছেন বিতর্কিত মুফরাদ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:২৪:৪৯ দুপুর

দশ নং অভিযোগে যাবজ্জীবন

কারাদন্ড প্রদান

করা হয়েছে মাওলানা সাঈদীর।

আসুন দেখে নেই কি সেই অভিযোগ

আর কিসের ভিত্তিতে একজন

মানুষকে বেচে থাকা বাকী জীবনটাই

কাটাতে হবে জেলের অন্ধকার

প্রকোষ্ঠে। কেন তার সুমধুর

কন্ঠের তাফসীর থেকে বঞ্চিত

হবে কুরআন প্রেমিক জনগন।

.

অভিযোগ:

রাষ্ট্রপক্ষের এক নম্বর

সাক্ষী মাহবুবুল আলম

ট্রাইব্যুনালে তার

জবানবন্দীতে বলেছেন ‘২ জুন

সকাল বেলা আমি নিজ

বাড়িতে ছিলাম। সাক্ষী খলিলুর

রহমান খুব ভোরে আমার

বাড়ি এসে গোপনে জানিয়ে দেন

যে আপনি এবং আপনার

ঘরে যে আওয়ামী লীগের

নেতাকর্মী এবং মুক্তিযোদ্ধারা আছে তাদের

লিস্ট হয়েছে ধরার জন্য।

আমি আমার ঘরে মুক্তিযোদ্ধা ও

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের

আশ্রয় দিতাম।

আমি তাদেরকে অনেক

দূরে নিয়ে রাখি। লোকদের কাছ

থেকে জানতে পারি অনুমান

সকাল ১০টায় পারের হাটের

শান্তি কমিটি ও রাজাকার

বাহিনী দানশ আলী মোল্লা,

সেকেন্দার দেলাওয়ার শিকদার

সাঈদী, মোমিন হাওলাদার,

হাকিম কাজী, হাবিবুর রহমান

মুন্সী পাক হানাদার

বাহিনী সঙ্গে নিয়ে উমেদপুর

গ্রামে আমার বাড়ির নিকটস্থ

হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ

চালিয়েছে। সেখান

থেকে বিশাবালী অসুস্থ থাকায়

তাকে ধরে ফেলে এবং একটি নারিকেল

গাছের সাথে বেঁধে মারপিট

করে। দেলাওয়ার হোসাইন

সাঈদী(কথার ম্যারপ্যাচ

দেখেছেন প্রথমে শিকদার

বলে এখানে পুরোপুরি হুজুরের

নামই বলে দিয়েছে)র

নির্দেশক্রমে বলে যে,

ওটাকে যখন

পেয়েছি ওটাকে গুলি কর। জনৈক

রাজাকার

গুলি করে বিশাবালীকে হত্যা করে।.

.

আসুন এবার এই

অভিযোগটাকে একটু বিশ্লেষন

করে দেখি:

.

১) সাক্ষী কিছুই দেখেননি।

কার কাছ থেকে শুনেছেন তাও

উল্লেখ করেননি। আইনের

চোখে এরকম সাক্ষ্যের কোন

ভিত্তিই নেই।

২) সাক্ষী মাহবুবুল আলম

হাওলাদার এলাকার একজন

প্রখ্যাত আওয়ামী লীগার

এবং মোটামুুটি গরীব। সব

মিলিয়ে তার বাবার চার-পাঁচ

বিঘা সম্পত্তি ছিল মাত্র।

মাহবুবুল আলম হাওলাদারের

ভাগে পড়ে এক-দেড়

বিঘা সম্পত্তি।

সে সম্পত্তি সে বিক্রি করে ফেলেছে এবং তার

স্ত্রীর সম্পত্তিও

বিক্রি করে ফেলেছে।

সাঈদী সাহেবের

বিরুদ্ধে মামলা করার পর

সে এখন

দোতলা বিল্ডিং তৈরি করেছে।

একতলা শেষ হয়েছে।(তার

আত্নীয় নুরুল হক হাওলাদারের

ট্রাইবুন্যালে প্রদত্ত সাক্ষ্য

অনুসারে) এই

টাকাটা সে পেলো কোথায়??

৩) সাক্ষী মাহবুবুল আলম

হাওলাদারের এসএসসির

নিবন্ধনে তার জন্মতারিখ ছিল

২০ মার্চ ১৯৫৯ সাল।

সে হিসেবে ১৯৭১ সালে তার

বয়স ছিল ১২ বছর। এ তথ্য

যে বিশ্বাসযোগ্য, তার প্রমাণ

হলো তার বড় বোন

মাতোয়ারা বেগমের জন্মতারিখ

১৯-৭-১৯৫৭ ইং। এবার

আপনি আপনার বারো বছরের কোন

ছোট ভাইয়ের দিকে তাকান আর

উপরের কাহিনীর সত্যতা যাচাই

করুন।

৪)মাহবুবুর রহমান খলিলের কাছ

থেকে ঘটনার দিন ভোরে খবর

পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

কিন্তু এই খলিলুর রহমানের

জন্মসনদে জন্মতারিখ

লেখা রয়েছে ১৯৭২ সালের

১৩ এপ্রিল। ভোটার

তালিকা এবং তার কর্মস্থলের

তথ্যবিবরণীতেও জন্মতারিখ

একই লেখা আছে। জন্মসনদ

অনুযায়ী ১৯৭১ সালে তার

জন্মই হয়নি। কাজেই এরূপ

ব্যক্তির কাছ থেকে খবর

পাওয়ার কথা অসম্ভব। সম্ভব

যদি আপনি আপনার

চেতনাটা আওয়ামী লীগের

কাছে ইজারা দিযে বসে থাকেন।

৫)রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ

এবং সাক্ষীদের

দাবি বিশাবালীকে উমেদপুরে তাদের

বাড়ির সামনে একটি নারিকেল

গাছের

সঙ্গে বেঁধে মাওলানা সাঈদীর

নির্দেশে গুলি করে হত্যা করা হয়।

কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষেরই দাখিল

করা একটি ডকুমেন্টে দেখা যায়

তাকে পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর

বেদিতে হত্যা করা হয়েছে।

এ বিষয়ক ডকুমেন্ট

জমা দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের

১নং সাক্ষী এবং মামলার

বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার।

মাহবুুবুল আলম জিয়ানগর

থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার

হিসেবে পিরোজপুর বলেশ্বর

নদীর বেদিতে নিয়ে যাদের

হত্যা করা হয়েছে, তাদের

একটি তালিকা তৈরি করেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের

প্যাডে তৈরি করা নিহতদের এ

তালিকায়

১নং ক্রমিকে রয়েছে বিশাবালীর

নাম। মাহবুবুল আলম হাওলাদার

এ তালিকা তদন্ত

কর্মকর্তাকে দিয়েছেন

এবং রাষ্ট্রপক্ষ এ ডকুমেন্টের

ওপর নির্ভর করেছে। কাজেই

তাদের

দাবি অনুযায়ী বিশাবালীকে পিরোজপুর

বলেশ্বর নদীর

বেদিতে হত্যা করা হয়েছে।

আশা করছি, আওয়ামী লীগীয়

যুক্তি দিবেন

না যে ভিসাবালী ধর্মমতে হিন্দু

হওয়ায় তার পুর্নজন্ম হয়েছিল।

সে দ্বিতীয়বার মারা গেছে।

৬)ট্রাইব্যুনালে মাহতাব

বলেছেন, ২ জুন

উমেদপুরে অগ্নিসংযোগ

এবং বিশাবালীকে হত্যার দিন

তিনি পাড়েরহাট গিয়েছিলেন

এবং যাওয়ার পথে এ

ঘটনা দেখেছেন। অথচ তদন্ত

কর্মকর্তা জেরায় বলেছেন, ২

জুন তিনি পাড়েরহাট যাওয়ার

কথা তাকে বলেননি। কাজেই

সাক্ষী মাহতাবের

কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর

পাড়েরহাট

না গেলে ঘটনা দেখার কথাও

সত্য নয়।

৭) এই ঘটনার একমাত্র

প্রত্যাক্ষদর্শী সাক্ষী ছিল

বিসা বালীর ভাই সুখরঞ্জন

বালী। সে সাঈদী সাহেবের

পক্ষে সাক্ষী দিতে আসার

পথে ট্রাইবুন্যালের গেট

থেকে তাকে সরকারী পেটোয়া বাহিনী গুম

করে। পরে তাকে ভারতের

জেলখানায় আটক থাকার খবরও

জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

তার বক্তব্য সম্বলিত

সিডি ট্রাইবূন্যালে পেশ

করা হয়।

.

সিদ্ধান্ত নিন..... চোখ খুলবেন

নাকি অন্ধ ভাবে নিরাপরাধ

ব্যাক্তির ফাসির

দাবী তুলে আওয়ামী লীগের

সাথে সুর মিলিয়ে মহান

মুক্তিযুদ্ধকে কলংকিত

করবেন???

বিষয়: বিবিধ

৮৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File